আখেরী মুনাজাতের মধ্য দিয়ে দিনাজপুরে তিন দিনব্যাপাী তাবলীগ জামাতের জেলা ইজতেমা শেষ হয়েছে। আখেরী মুনাজাতে ছিল সর্বস্তরের মানুষের ঢল।
শনিবার সকাল থেকে দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানের ইজতেমা মাঠে সমবেত হন লক্ষাধিক মানুষ। বেলা সাড়ে ১০টার মধ্যে ইজতেমা মাঠ ও আশপাশের এলাকা লোকে লোকারন্য হয়ে উঠে। ইজতেমা মাঠ পরিণত হয় বিশাল জনসমুদ্রে।
জেলা ইজতেমার শেষদিনে আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইলের মুরব্বি ও তাবলীগ জামাতের জিম্মাদার (দায়িত্বশীল) হযরত মাওলানা মোঃ মোশাররফ হোসেন। দুপুর ১২টা ৩ মিনিটে শুরু হয়ে দুপুর ১২টা ১৪মিনিটে মুনাজাত শেষ হয়।
১১মিনিটের মুনাজাতে বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বের সকল মুসলমানের শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা কামনা করা হয়।
মুনাজাতে জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সরকারী-বেসরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মুনাজাতে অংশগ্রহণ করেন। দিনাজপুর সদর, বিরল উপজেলাসহ আশপাশের অন্যান্য উপজেলা হতে আগত নারী, পুরষ ও শিশুসহ সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মানুষ মুনাজাতে অংশগ্রহণ করেন। দিনাজপুর শহরের অধিকাংশ দোকানী দোকানপাট বন্ধ করে মুনাজাতে অংশ গ্রহণ করেন।
শনিবার ইজতেমার শেষ দিন বাদ ফজর বয়ান করেন ঢাকার কাকরাইলের মুরিব্ব মুফতি নুরুল ইসলাম সিরাজী। এছাড়া হেদায়েতী বয়ান পেশ করবেন কাকরাইলের অপর মুরব্বি মাওলানা মাহমুদুল্লাহ। হেদায়েতী বয়ানের পর মুনাজাতের পূর্বে সংক্ষিপ্ত বয়ান করেন কাকরাইলের মুরব্বি হযরত মাওলানা মোঃ মোশাররফ হোসেন। সংক্ষিপ্ত বয়ানের পর মুনাজাত পরিচালনা করেন হযরত মাওলানা মোঃ মোশাররফ হোসেন।
মুনাজাতের আগে সংক্ষিপ্ত বয়ানে হযরত মাওলানা মোঃ মোশাররফর হোসেন বলেন, আমরা ঝগড়া করবো না। আমাদেরকে প্রতিবেশীর খবর নিতে হবে। মানুষের মধ্যে মহব্বত তৈরী করতে হবে।তাহলে নামাজি মানুষ তৈরী হবে।আমাদের ছেলেদের আলেম, হাফেজ বানাতে হবে। আমার দ্বারা যেন কোন জানোযারও কষ্ট না পায় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আর এ জন্য তাবলিগের পিছনে মেহনত করতে হবে। তাহলে নামাজি ও ভাল মানুষ তৈরী হবে।
এদিকে ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ইজতেমার চারপাশে মুসল্লিদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোষাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ গোয়েন্দা বিভাগের সদস্য মোতায়েন ছিল।
উল্লেখ্য, দিনাজপুর তাবলীগ জামাতের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আলহাজ¦ মোঃ মেহেরুল ইসলাম ও হাবিপ্রবির শিক্ষক কৃষি রসায়ন বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুল হাকিম আমীরে ফায়সাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও ১০জন শুরা সদস্য রয়েছেন।
এরআগে ২০২২সালের ৩১ মার্চ হতে ২ এপ্রিল পর্যন্ত দ্বিতীয়বার ও ২০১৭ সালের ৩১ নভেম্বর থেকে ২ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রথমবার দিনাজপুরে তাবলীগ জামাতের জেলা ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়।