প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার অঙ্গিকার, দেশের কোন মানুষ ভুমিহীন-গৃহহীন থাকবে না এই লক্ষ্যে দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলাকে সম্পূর্ণ গৃহহীন-ভুমিহীন মুক্ত ঘোষনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই উদ্বোধন কার্যক্রম ঘোষনা করেন তিনি। এসময় সারাদেশে ৭টি জেলা ও ১৫৯ টি উপজেলাকে সম্পূর্ণ ভুমিহীন-গৃহহীন ম্ক্তু ঘোষনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সাথে আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় চতুর্থ পর্যায়ে ৩৯ হাজার ৩৬৫টি ঘর প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ভুমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে চতুর্থ পর্যায়ে জমি ও গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধনের পরপর দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে উপকারভোগী ১২০টি গৃহহীন ও ভুমিহীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর-জমির দলিল ও চাবি হস্তান্তর করেন প্রধান অতিথি দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মনোরঞ্জন শীল গোপাল বলেন, গৃহহীন ও ভুমিহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণ করে শেখ হাসিনা ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন। কারণ বাংলাদেশের মানুষের স্থায়ী ঠিকানা করে দেওয়ার স্বপ্ন ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর। যার বাস্তব রূপ দিচ্ছেন তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া আজকের এই দিনটি আমার নির্বাচনি এলাকা কাহারোল উপজেলার জন্য স্মরনীয় এবং ঐতিহাসিক। কারণ মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম হচ্ছে বাসস্থান। আজ পূর্ণাঙ্গভাবে সেই বাসস্থান প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশের ন্যায় কাহারোল উপজেলাকেও গৃহহীন ও ভুমিহীন মুক্ত ঘোষনা করলেন। আজ থেকে এই উপজেলায় কেউ ভুমিহীন থাকলো না।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকীর সভাপতিতত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য ররাখেন পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ পিপিএম.সেবা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক সরকার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাইম হাসান খান, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) মো. মাইদুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম ফারুক, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ প্রমুখ।
বিরল
বিরল (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: ৪র্থ পর্যায় “ক’ তালিকাভুক্ত গৃহহীন ও ভ‚মিহীন পরিবারকে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার নবনির্মিত ২৫টি গৃহ হস্তান্তরের মাধ্যমে গৃহহীন ও ভ‚মিহীন মুক্ত হলো দিনাজপুরের বিরল উপজেলা। গতকাল বুধবার সকালে দিনাজপুরের বিরল উপজেলা মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করেন। এনিয়ে এ উপজেলা “ক’ তালিকাভুক্ত গৃহহীন ও ভ‚মিহীন ৬৭১ টি পরিবারকে ঘর হস্তান্তর এবং ১৫ পরিবারকে গুচ্ছগ্রামেসহ মোট ৬৮৬ টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হলো। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ৪র্থ পর্যায়ে নির্মিত গৃহ হস্তান্তরের ঘোষণা দিলে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে নবনির্মত ২৫ টি ঘরের চাবি ও কাগজপত্র ২৫টি পরিবারের মাঝে হস্তান্তর করেন, অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অতিরিক্ত বিভাগীয় কর কমিশনার ইব্রাহিম খান। এসময় বিরল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা: আফছানা কাওছারের সভাপত্বি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, বিরল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানার রহমান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আব্দুল ওয়াজেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রমাকান্ত রায়, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, উপজেলা ইউআরসি মোস্তাফিজুর রহমান।
খানসামা
খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের খানসামা উপজেলাকে স্যানিটেশন, বাল্যবিবাহ ও ভিক্ষুক মুক্ত ঘোষণা করার পর এবার ‘ভ‚মিহীন ও গৃহহীন মুক্ত’ উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার সকালে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আয়োজনে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে এ ঘোষণা দেন এবং চাবি ও দলিল হস্তান্তর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে ১ম, ২য় ও ৩য় পর্যায়ে যথাক্রমে ৪১০, ৪৪৭ ও ৩০০ টি সর্বমোট ১১৫৭টি “ক” শ্রেণির পরিবারকে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। খানসামা উপজেলার মোট “ক” শ্রেণির উপকারভোগীর সংখ্যা ১৫০৯ জন। এর মধ্যে ১১৫৭ জনকে পূর্ণবাসন করা হলে অবশিষ্ট ৩৫২ টি “ক” শ্রেণির পরিবারকে পুনরায় যাচাই-বাছাই করার জন্য এবং আরো কোনো ভ‚মিহীন ও গৃহহীন আছে কি না উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে মাইকিং করে ৩৫২ থেকে ১৫৯ জনের চ‚ড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করা হয়। ৪র্থ পর্যায়ে এসে এই ১৫৯ জনকে জমিসহ গৃহ প্রদানের মাধ্যমে খানসামা উপজেলাকে ভ‚মিহীন ও গৃহহীন ঘোষণা করা হয়। তবে এর পরেও যদি কোন ভ‚মিহীন ও গৃহহীন থাকে তাদের জন্য পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চালু থাকবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
যাদের নুন আন্তে পান্তা ফুরায় তারা জমিসহ দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমি পাকা ঘর, টয়লেট, রান্নাঘর, ইউটিলিটি স্পেস, টিউবওয়েল ও বিদ্যুৎ সুবিধা পেয়ে খুশিতে আত্মহারা পিছিয়ে থাকা নিম্ন আয়ের এসব মানুষ। অনেক পরিবার ঘর পেয়ে তাদের নতুন স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন। সকলেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ প্রকাশ করছেন।
ইউএনও রাশিদা আক্তারের সভাপতিত্বে খানসামা প্রান্তে সংযুক্ত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী, এমপি। সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) মারুফ হাসানের সঞ্চালনায় এসময় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ মেহেদী হাসান, উপজেলা চেয়ারম্যান সফিউল আযম চৌধুরী লায়ন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছাঃ মনজিল আফরোজ পারভিন, ওসি চিত্তরঞ্জন রায়, ৬ ইউপি চেয়ারম্যান ও বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ।