বৃহস্পতিবার , ৮ জুন ২০২৩ | ১লা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তেঁতুলিয়া গরীবের কাউনের ভাত এখন আমীরের খাবার

প্রতিবেদক
ঠাকুরাগাঁও সংবাদ
জুন ৮, ২০২৩ ৭:৫৪ অপরাহ্ণ

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) সংবাদদাতা :
তেঁতুলিয়ার এক সময়ের গরীবের কাউন এখন হয়ে উঠেছে আমীরের বিলাসী খাবার। কালের বিবর্তনে ফসলটি দিনদিন হারিয়ে যেতে বসেছে। এক সময় মঙ্গা এলাকায় কাউনের ভাত খেতে খেতে চোখের পানি ঝরতো অনেকের। আজ সেই গরীবদের কাউনের চাল হয়ে উঠেছে বিলাসী খাবার। বাজার থেকে কিনতে হচ্ছে উচ্চ দামেও। আবাদ কমে যাওয়ায় বেড়েছে কাউনের চালের চাহিদা।

তেঁতুলিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, তেঁতুলিয়ায় আগের মতো কাউনের আবাদ হয় না। চা বিপ্লবের পর বিলুপ্তির পথে এ ফসলটি। মাত্র তিন হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে কাউন। চাষিরা জানাচ্ছেন, এ অঞ্চলে চা বিপ্লব ঘটায় কমতে থাকে কাউনসহ বেশ কয়েকটি দেশি আবাদ। মুষ্টিমেয় কিছু কৃষক কাউন আবাদ করে টিকিয়ে রেখেছেন এ ফসলটি।

উপজেলার সদরের দর্জিপাড়া, শালবাহান, বুড়াবুড়িসহ বেশ কিছু এলাকায় কাউনের আবাদ হতে দেখা যায়। দর্জিপাড়ায় এক একর জমিতে চাষ হয়েছে কাউন। বেশ ভালো আবাদ হয়েছে কাউনের। এসব কাউন আবাদ করছেন মুক্তা বেগম, নুর ইসলাম ও আব্দুস সালাম নামের কয়েকজন কৃষক। এ জমিতেই তারা জানুয়ারিতে আবাদ করেছিলেন নেদারল্যান্ডের সেই নজরকাঁড়া টিউলিপ। যে টিউলিপের কারণে টিউলিপ গ্রাম হয়ে উঠেছে এ এলাকাটি।

স্থানীয়রা জানান, ১০-১৫ বছর আগেও এ অঞ্চলে প্রচুর এই কাউন আবাদ হতো। তখন অভাব অনটন থাকায় অসহায়-গরীব মানুষদের নিত্যদিনের ভাত হিসেবে খাওয়া হত কাউন। কাউনের ঝাউ ও ভাত খেতে খেতে অনেকের চোখে কান্নাও চলে আসতো। অথচ সেই কাউন এখন বিলুপ্তির পথে। গরীবের সেই কাউনের ভাত আজ বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন অভিজাত হোটেল ও উৎসবে উন্নতমানের খাবার হয়ে উঠেছে।

টিউলিপের জমিতে কাউনের আবাদ সম্পর্কে জানতে চাইলে কৃষক নুর ইসলাম জানান, টিউলিপ সাধারণত শীত সময়ের আবাদ। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত চলে। বাকি সময় পতিত পড়ে থাকে এ জমি। এ কারণে জমিটি পতিত না রেখে বিলুপ্তির পথে যাওয়া কাউন আবাদ করেছি। বিগত দশক দুই আগে দর্জিপাড়া, শারিয়ালজোত, কানকাটা এলাকায় প্রচুর কাউন আবাদ করতাম। কাউন বিক্রি করেই অনেকের সংসার চলতো। একই কথা বলেন আরেক চাষি আব্দুস সামাদও।

চাষি আকবর আলী জানান, আমি টিউলিপ চাষি। আগে এ অঞ্চলে অনেক কাউনের আবাদ হতো শুনতাম। বিশেষ করে কাউনের জাউ, পায়েশ খুব সুস্বাদু। বাজার থেকে কাউন কিনে আনা হতো। এখন এক কেজি কাউনের চাল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। তাই অল্প কিছু জমিতে চাষ করেছি। ভালো আবাদ হয়েছে।

কাউন আবাদ অত্যন্ত সহজ। কাউন সাধারণত চৈত্র মাসে ক্ষেত তৈরি করে বীজ বপন করতে হয়। জৈষ্ঠ্য-আষাঢ় মাসে ফসল ঘরে ওঠে। এতে কোনও সেচের প্রয়োজন হয় না। বিঘা প্রতি এর ফলন হয়ে থাকে ৮ থেকে ১০ মণ কাউন। ক্ষেত থেকে কাউনের শিষটাই সংগ্রহ করতে হয়। শীষের বাকি অংশটুকু ব্যবহৃত হয়ে থাকে জ্বালানি হিসেবে। বর্তমানে প্রতি মণ ৩ থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা করে বিক্রি হয়। অন্যান্য ফসলের মতো কাউন বিক্রয় করেও আর্থিকভাবে লাভবান হতো কৃষক।

কাউন সম্পর্কে জানা যায়, জানা যায়, কাউন অত্যন্ত সুস্বাদু ফসল। এটি দিয়ে বিভিন্ন রকম পিঠা, ক্ষীর, পায়েস, পোলাও, বিরিয়ানি, ভুনা খিঁচুরি, সাদা ভাত ইত্যাদি মুখরোচক খাবার তৈরি হয়। চাল বা গমের মত এতে শর্করা নেই। এ জন্য স্বাস্থ্য সচেতনরা সহজেই বেছে নেন কাউন চাল। এছাড়া অতিথি আপ্যায়নে, উৎসব-পার্বণে কাউনের পায়েশের বেশ প্রচলন রয়েছে আগে থেকেই।

উপজেলা কৃষি অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কাউন এখন অভিজাত ফসল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বর্তমানে কাউনের চাষ অনেক কমে গেছে। প্রায় তিন হেক্টর জমিতে আবাদ হচ্ছে। আপনারা জানেন যে, কাউনের চালের পায়েশ অত্যন্ত সুস্বাদু। উৎসব ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কাউনের সুস্বাদু পায়েশ রান্না হয় তা খুব সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। তবে এ আবাদটা কমে গেছে। কিন্তু আমরা কৃষি বিভাগ চেষ্টা করছি, সুপারফুড খ্যাত এ ফসলটি আবাদ বৃদ্ধি করতে। এ জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। #

সর্বশেষ - ঠাকুরগাঁও

আপনার জন্য নির্বাচিত

সফল করতে লিফলেট বিতরনসহ ব্যাপক গনসংযোগ দিনাজপুরে বিএনপির রংপুর বিভাগীয় পদযাত্রা আজ

বীরগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত মৃত আনারুল ইসলামের বাড়ি পরিদর্শন কলেন বিএনপি নেতা মনজুরুল

পীরগঞ্জে দুই ওষুধের দোকানকে জরিমানা

দেশ বরেণ্য ইতিহাসবিদ প্রফেসর ড.মুনতাসীর মামুনকে সংবর্ধনা

ভুট্টার বাম্পার ফলনে লাভের স্বপ্ন দেখছেন,বীরগঞ্জের ভুট্টা চাষীরা

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপলাইন ছিদ্র করে তেল চুরির ঘটনায় আটক-৪

নবরূপী’র শাহজাহান শাহ্্ ২য় নাট্যোৎসবে নাট্য সমিতির মঞ্চে নন্দিনীর পালা মঞ্চস্থ

পশ্চিমবঙ্গে দার্জিলিং জেলায় ২য় ধাপে লোকসভা নির্বাচন বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ৩দিন বন্ধ

ঠাকুরগাঁওয়ে বৃদ্ধা মাকে মারধরের অভিযোগ ছেলের বিরুদ্ধে

পীরগঞ্জে এক স্কুল শিক্ষিকার আত্মহত্যা