চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি \দিনাজপুর অঞ্চলে টানা কয়েকদিনের বর্ষনের পানিতে ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতায় বেগুনসহ অনেক গাছের ক্ষতি হয়েছে।অনেক গাছও মরে গেছে। এছাড়াও চলতি মৌসুমে জ্বালানি তেল, রাসায়নিক সার, কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং পাইকারি বাজারে বেগুনের দাম নি¤œমুখী হওয়ায় এবার বেগুনের ফলন ভালো হলেও দাম ভাল না পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষক। জেলায় খানসামা ও বীরগঞ্জে বেশী বেগুন চাষ হয়।অধিক মুনাফার আশায় প্রতিবছর আগাম জাতের বেগুনচাষ করেন কৃষকরা। আগাম বেগুনচাষে বেশ লাভবান হন তারা। মৌসুমের প্রথমদিকে বেগুনের বাজার দর ভালো পাওয়ায় কৃষকের চোখে-মুখে হাসি দেখা দেয়। কিন্তু গত সপ্তাহ খানেক ধরে হঠাৎ বেগুনের বাজার দর নেমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বেগুন চাষিরা। তবে খুচরা বাজারে খুব বেশী দাম না কমলেও মধ্যস্থভোগী ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছে বেশী।
রফিকুলসহ কয়েকজন কৃষক জানায়, অধিক মুনাফার আশায় প্রতিবছর আগাম জাতের বেগুনচাষ করেন খানসামার কৃষকরা। আগাম বেগুনচাষে বেশ লাভবান হন তারা। তবে হঠাৎ জ্বালানি তেল, রাসায়নিক সার, কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং পাইকারি বাজারে বেগুনের দাম কমে যাওয়ায় চাষিদের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়। মৌসুমের প্রথমদিকে ক্ষেত থেকেই প্রতিমণ বেগুন দেড় হাজার থেকে ১ হাজার ৭০০টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে বেগুনের বাজার দর নি¤œমুখী। বর্তমানে বাজারে প্রতিমণ বেগুন ৮০০-৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
খানসামা উপজেলার আঙ্গারপাড়া ইউপির সুবর্ণখুলি গ্রামের বেগুনচাষি শেফাউল ইসলাম জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিবছর বেগুনচাষ করেন। এবছর ৩ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। আগামী ১০দিনের মধ্যে ক্ষেতের বেগুন বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু বাজারে বেগুনের দর কমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছেন।
বেগুনচাষি আবু তালেব জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বেগুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। বেগুন উৎপাদনে প্রতিবিঘা জমিতে প্রায় ২০-২৫হাজার টাকা খরচ হয়। ক্ষেত রোগমুক্ত, বাজারদর ভালো ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতিবিঘা জমির বেগুন প্রায় ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকায় বিক্রি হয়। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতিবিঘা জমির বেগুন বিক্রি করে ৬০-৭০হাজার টাকা লাভ হয়। এবছর বেগুনচাষে খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন বাজারদরও নিম্নমূখী।
খানসামা উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এ উপজেলার মাটি বেগুন চাষের জন্য উপযোগী। বেগুনচাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ ও বিভিন্ন সহযোগিতা করায় উপজেলায় চাষিরা বেগুনচাষে ঝুঁকে পড়েছেন। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২৪০হেক্টর জমিতে বেগুনচাষ হয়েছে। ইতিমধ্যেই অধিকাংশ কৃষক বেগুন বিক্রি শুরু করেছেন। এ উপজেলার উৎপাদিত বেগুন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছেন কৃষকরা।