চিরিরবন্দর প্রতিনিধি \ ভবন উদ্বোধনের সাত বছর পার হলেও খানসামা উপজেলার মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের চিকিৎসক অভাবে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগী।
অনেকে মনে করেন মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র গরিব মানুষের একটি আস্থার নাম। হাসপাতালের ভবন আছে।আছে রোগীদের ১০টি বেড। প্রচুর রোগীও আছে, আছে চিকিৎসকদের জন্য আবাসিক ভবনও। নেই শুধু চিকিৎসক ও চিকিৎসা সরঞ্জাম। এ অবস্থা বিরাজ করছে খানসামা উপজেলার আলোকঝাড়ি ইউনিয়নে স্থাপিত ১০শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র।
আশা করছি ৪৫তম বিসিএস’র চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হবে এবং তখন পরিপূর্নভাবে রোগীদের সেবা দিতে পারবো বলে জানান, খানসামা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অতিরিক্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান হারুন।
দিনাজপুর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবাযনে ২০১৪সালের ১০মে কাজ শুরু হয়ে ২০১৬ সালের ১৯ ফেব্রæয়ারি কাজ শেষে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি উদ্বোধন করেন। সেখানে দীর্ঘ ৭ বছর ধরে নেই কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে দেখা যায়, শুধুমাত্র নরমাল ডেলিভারি করতে একজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা, একজন নার্সিং অ্যাটেন্ডমেন্ট, একজন ফার্মাসিস্ট, পাহারাদার ও ঝাড়ুদার রয়েছে। সিজিয়ারিয়ানের নেই কোন ব্যবস্থা। এছাড়াও দেখা মেলেনি কোন চিকিৎসকের। ভবনে অধিকাংশ স্থানে দেখা দিয়েছে ফাঁটল, বৈদ্যুতিক নিম্নমানের তারের কারনে শর্টসার্কিটের মত ঘটনা ঘটেছে।
সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগী রহিমা খাতুন জানান, এখানে আসিয়া কোন লাভ নাই। শুধুমাত্র চেকআপ ছাড়া কিছুই করা যায় না। আরেক ভুক্তভোগী মুন্না বলেন, আমার ছেলের অনেক জ্বর, চিকিৎসা নিতে বাইরে যাচ্ছি। কি আর বলব। এটা নামেমাত্র মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র কিন্তু কামের নয়।
পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক আরফান সিরাজ বলেন, এখানকার বৈদ্যুতিক তার খুবই নিম্নমানের ও ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। বৈদ্যুতিক বিভিন্ন সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সহযোগিতায় ভবনের কিছু অংশ মেরামত করেছি।
খানসামা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অতিরিক্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান হারুন জানান, এখানে প্রতিদিন প্রায় ৫০ জন রোগী আসে। সবার সেবা দিতে হিমসিম খেতে হয়। আবার অনেককে উপজেলা হাসপাতাল বা জেলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। চিকিৎসকের চাহিদা পাঠিয়েছি। আশা করছি ৪৫তম বিসিএস’র চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হবে। তখন পুরোপুরি সেবা দিতে পারবো। এচিত্র শুধু খানসামা উপজেলায় নয়। দিনাজপুর জেলায় ৪টি এ ধরনের মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র রয়েছে, সবগুলোর একই অবস্থা।
তিনি আরও জানান, যতটুকু জনবল আছে তা দিয়ে সাধ্যমত সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। এই হাসপাতালে প্রতিমাসে ৮-১০জনের স্বাভাবিক প্রসব করানো হয়।