বিকাশ ঘোষ ,বীরগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধি:
দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল বলেছেন, নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তা রক্ষা এবং বিকাশে শেখ হাসিনা নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সমতলে কাউকে পিছনে ফেলে নয়, সবাইকে একযোগে এগিয়ে নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শেখ হাসিনা বদ্ধ পরিকর। এদেশের আদিবাসীরা আর্থিকভাবে, শিক্ষাগতভাবে পশ্চাৎপদ হলেও সংগ্রামে স্বাধীনতায় তারা অনেক বেশি অগ্রগামী। মহান মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসীদের ভূমিকা জাতি শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ রাখবে। কারণ আদিবাসীদের তীরের মাথায় এখনো লাল সবুজের পতাকা। আদিবাসীদের কেউ রাজাকারের খাতায় নাম লেখায় নি। বরং তারা এই তীর দিয়েই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাস্থ করে তাদের কাছ থেকে অস্ত্র কেড়ে নিয়েছিল।
বুধবার (২৫ অক্টোবর ২০২৩) বিকেলে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ১১নং মরিচা ইউনিয়নের গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে আদিবাসী মিলন মেলার উদ্বোধন শেষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বীরগঞ্জ আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির সদস্য শ্যামলাল মুরমু’র সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বীরগঞ্জ সার্কেল) মো. খোদাদাদ হোসেন, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) রাজ কুমার বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নুর ইসলাম নুর, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আকতারুল ইসলাম চৌধুরী বাবুল, ১১নং মরিচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাহারুল ইসলাম চৌধুরী হেলাল, ৬নং নিজপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান আনিস, সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী একটি চমৎকার দর্শন দিয়েছেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আজকের এই জনসমাগম প্রমাণ করেছে, এটি আসলেই মিলন মেলা। যা বছরের পর বছর ধরে এই অঞ্চলের মানুষ পালন করে আসছে। তিনি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শারদীয় দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করার জন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানান। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে অভয় দিয়ে বলেন, যে যত শক্তিশালী হোক রাষ্ট্রের থেকে কেউ শক্তিশালী নয়। তাই কোন প্রকার ভয়ভীতির উর্দ্ধে থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।
উল্লেখ্য, প্রায় দুই শত বছর ধরে বীরগঞ্জের গোলাপগঞ্জে আদিবাসীদেও এই মিলন মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। যা এক সময় বৌ মেলা নামে পরিচিত ছিল। পৌরানিক কাহিনী রয়েছে, এই মেলায় এসে আদিবাসী ছেলে-মেয়েরা তাদেও পছন্দের মানুষকে খুজে পরিবারের কাছে তা জানাতেন। পরে পরিবার থেকে দুই পরিবারের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করা হতো। যারা এই মেলায় নিজেরা জীবনসঙ্গী পছন্দ করতো পরবর্তী বছর মেলায় তাদেও নাম পরিচয় তুলে ধরা হতো। এখনও এই মেলায় অনেকে পরিবারের সম্মতিতে পছন্দেও পাত্র পাত্রিকে নিয়ে এসে বিয়ে দিয়ে থাকেন। মেলাটি শারদীয় দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমীর পরের দিন অনুষ্ঠিত হয়। এজন্য কোন মাইকিং, নোটিশ কিংবা ছাপা বের হয় না। বিজয়া দশমীর পরের দিন নিজেরাই আন্তরিকভাবে এই মেলায় চলে আসেন।