বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বীরগঞ্জে নদী খননের বালু অপসারনের জন্য ইজারাদারগণ বেশ কিছুদিন থেকে দিবারাত্রি ড্রাম্পট্রাক ব্যবহার করে আসছে।
ফলে এলাকার গ্রামীন রাস্তাঘাট, পুল কালর্ভাটের ব্যপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। জনমানুষ চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে।
সরকারী সম্পদের এ ধরনের অবর্ননীয় ক্ষতি রক্ষাকল্পে মাঠে নামে উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফজলে এলাহী’র নেতৃত্বে এবং সহকারী কমিশনার ভুমি রাজকুমার বিশ্বাস সমন্বয় সপ্তাহব্যাপী চলছে অভিযান।
ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে গত( ২৮ অক্টোবর’২০২৩) শনিবার রাতে নিজপাড়া ইউনিয়নের নখাপাড়া ঘাটে চালকসহ একটি ডাম্পট্রাক আটক করা হয়। চালক দেবীগঞ্জ পঞ্চগড়ের দুলাল হোসেনকে ১০ দিনের কারাদণ্ড এবং গত ২৯ অক্টোবর’২০২৩ রাতে পাল্টাপুর ইউনিয়নের ভোগডোমা ঘাট থেকে আসা ২টি ডাম্প ট্রাক পথিমধ্যে আটক করে চালক ফরহাদ ইসলাম ও ইসরাফিল হক লিটন দু’জনের প্রতিজনকে ২৫ হাজার টাকা হিসেবে জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত আটক বালু বোঝাই ট্রাকগুলো থানা ক্যাম্পাসে রয়েছে।
অপরদিকে কুড়িটাকিয়া ঘাটে একাধিকবার অভিযান চালিয়ে কোন ট্রাক আটক করতে পারেনি বলে জানিয়ে ইজারাদার মোঃ তোফাজ্জল হোসেন বলেন ২৭ অক্টোবর’২৩ গভীর রাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনার ভূমি কোন প্রকার পুলিশ ছাড়াই ঘাটে গিয়ে আনসার বাহিনীর দ্বারা ২টি বালু লোডিং মেশিন (ভ্যাকু) তছনছ করেছেন।
মুল্যবান রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি করার জন্য ভ্যাকুর মবিল চেম্বারে বালু ঢুকিয়ে দেয়, প্রায় লক্ষাধিক টাকার মুল্যমানের ৪ টি ব্যাটারী খুলে নিয়ে যায়, তার মোট ক্ষতির পরিমান ৬ লক্ষাধিক টাকা বলেও উল্লেখ করেন।
একইভাবে ক্ষতি সাধনের অভিযোগ করেছেন বালু মহাল ইজারাদার ও নিজপাড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান এমএ খালেক সরকার। তিনি অভিযোগ করেন তার গাড়ীর গ্লাস ভাংচুর ও টায়ার কেটে দেয়া হয়েছে, নগদ টাকা ক্যাস বাক্স থেকে খোয়া গেছে ২৪ হাজার ৬ শত টাকা।
ইজারাদারেরা বলেন আমরা বৈধভাবে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে বালু মহল ইজারা নিয়েছি এবং ইজারা গ্রহনের সময় ডাম্পট্রাক ব্যবহারের নিশ্চয়তা চাইলে পানি উন্নয়ন বার্ড ও উপজেলা প্রশাসন সম্মতি দিয়েছেন, যা সকলে অবগত।
কিন্তু অভিযানের নামে সম্পদের ক্ষতি সাধন মোটেও কাম্য নয়, চলছে জেল জরিমানা, এটি অকল্পনীয়, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অবৈধভাবে অর্থ আদায়ের কৌশল।
আমরা ইজারাদারেরা সৎ ভাবে ব্যবসা করতে গিয়েও চরম বিপাকে পরতে হচ্ছে।
এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ ফজলে এলাহীর সাথে কথা হলে তিনি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযান অব্যাহত থাকবে।
পাউবো দিনাজপুরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সিদ্দিকুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন ইজারা গ্রহীতাদের এখনো কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে কিনা জানা নাই।
তবে কোন ইজারাদার যেন ডাম্পট্রাক ব্যবহার না করেন, এ জন্য সতর্ক করে চিঠি দেয়া আছে এবং পাউবো-এর আহবানেই প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করে থাকেন।