বিকাশ ঘোষ,বীরগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধি: আশ্বিনের কাশ ঝরানো স্নিগ্ধ বাতাস হিম হয়ে উঠেছে কার্তিকে। মিষ্টি হয়ে উঠেছে ভোরের রক্তিম সূর্য। ভোরের আলো ফুটতেই মাকড়সার জালে আটকে থাকা শিশিরবিন্দুগুলোও যেন মুক্তো দানার মতো দ্যুতি ছড়ায় চলেছে। কুয়াশার আঁচল সরিয়ে যখন উত্তরের বাতাস বইছে,শরীরে তখন ছড়িয়ে পড়ছে শীতের হিম স্পর্শ। আর নরম রোদের আবেশ জানান দিচ্ছে – শরৎ শেষে হেমন্তের হাত ধরেই এসেছে শীত। কুয়াশামাখা প্রকৃতি আর মাঠের সোনালি ধানের ঘ্রাণে কৃষক-কৃষাণীর চোখে-মুখে আনন্দের রেখা ফুটে উঠেছে এখনই। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে কার্তিকের পর অগ্রহায়ণ পেরিয়ে পৌষ- মাঘ শীতকাল ধরা হলেও এবার কার্তিকেই উত্তরের জনপদ দিনাজপুরের বীরগঞ্জে শীত শীত অনুভূত হচ্ছে। দিনের বাতাসের শুষ্কতায় টানটান হয়ে উঠছে ত্বক। ভোরের আলো ফুটতেই মাঠের সবুজ ধানের পাতাগুলো শিশিরে ভিজে উঠছে। বছর ঘুরে শীতের মায়াবী প্রকৃতির এমন অবয়ব এরই মধ্যে যেন বিমুগ্ধ করতে শুরু করেছে সবাইকে। বাড়ির দোরগোড়ায় শীত -তা টের পাচ্ছেন উপজেলার
শিবরামপুর,পলাশবাড়ী,শতগ্রাম,পাল্টাপুর,সুজালপুর,নিজপাড়া,মোহাম্মদপুর,ভোগনগর,সাতোর,মোহনপুর,মরিচা ইউনিয়নেরপ্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষ।অন্যদিকে শীতের আমেজে ফুটে উঠছে,আবহমান গ্রাম-বাংলার চিরায়িত ঐতিহ্যের রূপও।শীত নিবারণে প্রস্তুতি নিলেও শুরুতেই শীত নিবারণে হিমসিম খাচ্ছেন হতদরিদ্র-ছিন্নমূল মানুষ।গত কয়েক রাত থেকে অনুভূত হচ্ছে শীত। হঠাৎ এ শীতে মোটা কাপড় ও কাঁথা মোড়াতে বাধ্য করেছে। দিনে রোদ থাকলেও সন্ধ্যার পর শীত অনুভব হচ্ছে। ভোরের আবহাওয়াও বেশ ঠাণ্ডা বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।প্রকৃতিতে এখন চলছে হেমন্তকাল। শীত আসতে আরও দিন দশেকের মতো বাকি থাকলেও এবার আগাম এসেছে শীত। দিনে রোদের তাপ থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকেই পড়তে শুরু হচ্ছে, হালকা কুয়াশা আর রাত বাড়ার সঙ্গে কুয়াশাও বাড়ছে। ভোরে হালকা কুয়াশার চাদর ভেদ করেই উঁকি দিচ্ছে সূর্যের আলো।আবহাওয়া মতে, সন্ধ্যার পর থেকেই তাপমাত্রা কমে আসতে শুরু করে।এদিকে শীতের আমেজে ভোরের বাজারে উঠছে,নিত্য-নতুন শীতের সবজি।ফসল উৎপাদনে কাঁধে লাঙ্গল আর জোয়াল নিয়ে মাঠে ছুটছেন কৃষক।চলছে, আমন ধান কাটা-মাড়াই আর ঝাড়াই উৎসব। ভাপা পিঠা আর চিতোই পিঠা বানানো এবং খাওয়ার ধুম চলছে সমান তালে। এরই মাঝে কুয়াশায় লুকো-চুরি খেলতে খেলতে উদিত হচ্ছে সূর্য। কাক-পক্ষীর পাশাপাশি শিশু-কিশোররাও স্বাদ নিচ্ছে খেজুর রসের। শীত নিবারণে কেউ তৈরি করছে কাঁথা,কেউ লেপ-তোষক।আবার খর-কুটো জ্বালিয়েও কেউ শীত নিবারণের করছে,পশিশিরসিক্ত ভোরে বীরগঞ্জে শীতের আগমনী বার্তা।