বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বীরগঞ্জে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছিল ২০ থেকে ২৫ টাকা। আলুচাষিদের স্বস্তি দিতে দুই সপ্তাহ থেকে আলুর দাম বাড়ছে। গত সপ্তাহে বাজারভেদে ৩৫-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আলুর দাম গতকাল শনিবার ছিল ২০ থেকে ১৫ টাকা।
পৌরসভার দৈনিক বাজার,বলাকা মোড় ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কয়েকটি বাজার ঘুরে আলুর দামের এ ব্যবধান দেখা গেছে। এক মাসের ব্যবধানে দৈনিক বাজারে আলুর দর বেড়েছে প্রায় ৪৫ শতাংশ। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, হিমাগারে আলু সংরক্ষণ খরচ, কৃষকের উৎপাদন খরচসহ মুনাফা ধরে আলুর বর্তমান দর ঠিক আছে।
আলুর মতো বেড়েছে পেঁয়াজ ও আদার দামও। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে পেঁয়াজের দাম তিন টাকা ও আদার দাম ৩০ টাকা বেড়েছে। গতকাল দেশি পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
রমজান মাসের আগেই আলু ও পেঁয়াজের দামেও ঊর্ধ্বগতিতে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজিতে দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। দেশী জাতের যে আলু গত শনিবার (২ মার্চ) বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ৩০ টাকা দরে, সেগুলোই শনিবার (৯ মার্চ) বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি দরে। আর ২৫ টাকা কেজি দরের গোল আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়। ক্রেতারা বলছেন, রমজানের মাসের আগেই আলু দাম বাড়ায় তারা শঙ্কিত। বিক্রেতরা বলছেন, কৃষকের ঘরে আলুর মজুদ কমে আসছে। তাই বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম কিছুটা বেড়েছে।
দৈনিক বাজারে আজ সকালে আলু কিনতে আসেন শ্রমজীবী( রিকশা চালক) আব্দুল কুদ্দুস। তিনি বলেন, ‘সামনে পবিত্র রমজান মাস। হঠাৎ করেই কেন যেন আলু ও পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেলো। গেলো সপ্তাহে প্রতিকেজি গোল আলু কিনি ২৫ টাকা কেজি দরে এবং পেঁয়াজ ৮০ টাকা। আর আজ সকালে বাজারে এসে দেখি ওই আলুই প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ -৪০ টাকা কেজি দরে। রমজানের আগেই যদি কেজিতে ১০ -১৫ টাকা বাড়ে, তাহলে রমজান মাসে যে কত বাড়বে, তা বলা মুশকিল।’
সাধারণ ক্রেতা মো. রমজান বলেন, ‘আলু একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। সব তরকারিতেই আলুর ব্যবহার করতে হয়। আমি কাঠিলাল (লম্বা) জাতের আলু কিনি। গত শনিবার প্রতিকেজি আলু কিনি ২৫ টাকা কেজি দরে। আর আজ শনিবার প্রতিকেজি কাঠিলাল আলু কিনতে হলো ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে।’
রমজান আরও বলেন, ‘বিক্রেতরা বলছেন, বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় নাকি আলুর দাম বেড়েছে। রমজান মাসে নাকি আলুর দাম আরও বাড়তে পারে।’
পৌরসভার দৈনিক বাজারের আলু, পেঁয়াজ সবজী বিক্রেতা মো.মোজাম্মেল হক বলেন, ‘পাইকারি কিনতেই আলুর দাম বেশি পড়ছে। আাগে কাঠিলাল আলু ২৮ টাকা কেজি দরে কিনে ৩০ টাকায় বিক্রি করি। আর দেশী আলু ৩৫ টাকা কেজি দরে কিনে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি। কিন্তু এখন কাঠিলাল আলু কিনতে হচ্ছে ২৮ টাকা কেজি দরে। বিক্রি করছি ৩০ টাকা কেজি দরে। আর দেশী আলু ৩০ টাকা কেজি দরে কিনে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।’
সবজী বিক্রেতা জহুরুল ইসলাম বলেন, পেঁয়াজের পাশাপশি আলু সহ বিভিন্ন সবজির দাম চড়া। পেঁয়াজ আমদানি হলে দাম কমতে পারে। বর্তমানে ‘ধীরে ধীরে কৃষকেরা ঘরে আলুর মজুদ কমে আসছে। তাই সরবরাহ কমে যাচ্ছে বাজারে। আমাদের বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। সরবরাহ কমে গেলে আলুর দাম আরও বাড়তে পারে।’