বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধি: গত ২২ এপ্রিল’২০২৪ বিকেল ৪ টায় বীরগঞ্জ প্রেসক্লাবে দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার ১৩ মাইল গড়েয়ার পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন জমি মালিক শমসের আলী শাহ জানান, তার নিস্কটক শান্তিপুর্ণ ভোগদখলীয় জমি কতিপয় ব্যক্তি সংঘবন্ধ হয়ে রাতারাতি একাধিবার টিন, বাঁশ ও খড়ের চালা বানিয়ে জবর দখলের চেষ্টা চালিয়ে বাঁধার মুখে ব্যর্থ হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিগত ২৫ ডিসেম্বর’২০২৩ ইং থেকে অদ্যাবধি তার ভোগদখলীয় জমিতে প্রতিপক্ষ আইয়ুব আলী, আব্দুল জব্বার, খেমাস আলী, রফিকুল, সোবহান, হামিদুল, মাহতাব, উম্মে, খোকন, আলমগীরসহ অপরাপর ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে রাতের বেলা টিন চাল খড় দিয়ে অস্থায়ী ঘর নির্মাণ করে এবং ভুক্তভোগীকে একের পর এক হেনস্তা করতে থাকে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, উক্ত জমি তিনি বিগত ৫০ বছর পূর্বে পৈত্রিকসূত্রে পেয়ে শান্তপুর্ন ভোগদখল করছেন।
তাছাড়া ঐ জমিতে শমশের আলীর আপন ভাগিনা আমিনুল ইসলাম ভাড়া নিয়ে ‘জনতা স্যানিটেশন’ নামে রিং, স্ল্যাব, পিলার ইত্যাদির ব্যবসা বানিজ্য পরিচালনা করে আসছে।
কিন্তু কিছুদিন থেকে প্রতিপক্ষগন ঈর্ষানন্বিত হয়ে শমশের আলী ও তার পরিবারকে হেনস্তা করার হীন উদ্দেশ্যে নানান ঝামেলা সৃষ্টি করে চলেছে।
জনতা স্যানিটেশন এর তৈরিকৃত রিং, স্ল্যাব এগুলো ভাঙচুর করে, ব্যবসা বানিজ্যের বিঘ্ন ঘটাচ্ছে।
প্রতিপক্ষরা শমসের আলী অন্যের জমি আত্নসাৎ করেছে মর্মে অপপ্রচার চালিয়ে সমাজে তার সম্মানহানি ঘটাচ্ছে ।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, প্রতিপক্ষগন আমার দাদা হাদি শাহের দ্বিতীয় স্ত্রী আমার সৎ দাদির ওয়ারিশ।
আমার দাদা তার জীবদ্দশায় ১ম স্ত্রী’র দুই ছেলে ও এক মেয়েকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পত্তি দিয়ে গেছেন।
তারা সেই সম্পত্তির মৌখিক বন্টন নামা বলে ভোগদখল করে সুখে শান্তিতে বসবাস করছে।
অনুরূপভাবে আমার দাদা তার দ্বিতীয় স্ত্রী সম্পর্কে আমার সৎ দাদি’র দুই মেয়ে ও এক ছেলেকেও নির্দিষ্ট পরিমান সম্পত্তি দিয়ে মৃত্যুবরন করেছেন।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমার দাদার দ্বিতীয় স্ত্রী’র ছেলে মেরাজ তার দুই বোনের অংশ না দিয়ে নিজে ভোগ করেন এবং বিভিন্ন জনের কাছে সম্পত্তি সমুহ বিক্রি করে দেন।
এখন আমার সৎ দাদির মেয়েদের ওয়ারিশগন আমার কাছে তাদের নানার সম্পত্তির ভাগ চায়।
তাদের নানার সম্পত্তি তাদের আপন মামাদের কাছে আছে এটা জানার পরেও আমার কাছে অন্যায়ভাবে দাবী করে।
এটা কি সম্ভব? আমি কিভাবে সুরাহা করবো?
আমার বয়স যখন ১২ বছর তখন আমার বাবা ইন্তেকাল করেছেন।
আমার চাচারাই আমাকে আমার বাবার সম্পত্তি গুলো দেখায় দেন এবং আমি তদানুসারে ভোগদখল করে আসছি।
চাচাদের মাধ্যমেই আমি আমার বাবার সম্পত্তি প্রাপ্ত হয়ে নিজ নামে খাজনা-খারিজ, মাঠ পরচা সব কিছুই সম্পন্ন করি।
এমন কি আমাকে আমার চাচারা সেই সময়ে সবচেয়ে খারাপ জমি অর্থাৎ অনাবাদী,জঙ্গল,বসতভিটা থেকে দূরের জমিগুলোই দিয়েছিল। কিন্তু সময়ের পেক্ষাপটে সেগুলো এখন মুল্যবান হয়ে উঠেছে।
অপরদিকে বর্তমানে সমাজে আমার ও আমার পরিবারের উত্তরোত্তর সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে মেরাজের বংশ ধরেরা প্ররোচনায় প্ররোচিত হয়ে অন্যায় ভাবে আমার নিস্কন্টক জমির উপর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
উক্ত বিশৃঙ্খলার জেরে আমি থানায় জিডি করি, এরপর থানার মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহার নিমিত্তে চার বার সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে আরও কয়েকবার সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে আমি উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সকল জমির কাগজপত্র দেখানোর পরে উক্ত জমিটির মালিক আমি নিজেই বলে প্রতিটি সালিশ বৈঠক স্বীকৃতি দেয়।
তারা ওয়ারিশ সূত্রে কোথায়, কার কাছে জমি পাবে সেটাও দেখিয়ে দেয়া হয়।
কিন্তু প্রতিপক্ষরা কোনো কাগজ না মেনে শুধুমাত্র গায়ের জোরে আমার জমির উপর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পায়তারা করতেছে।
এমনকি আমার নিজের কেনা জমির উপরও তারা তাদের অংশ দাবি করে আমার নামে মিথ্যা, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিমুলক অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এমতাবস্থায় আমি থানাতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি ও আমার পরিবার চরম সম্মানহানিসহ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
বিষয়টি সকলের অবগতির জন্য সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ভুক্তভোগী শমশের আলী শাহ বলেন, আমার বয়স এখন ৬৪ বছর। প্রতিপক্ষরা আমার দাদার সম্পত্তির ভাগ এখন এতকাল পরে এসে চায়, আমার দাদার পরে আমার বাবা, তারপরে আমি, এখন আমার বড় সন্তানের বয়স ৩৫ বছর।
অর্থাৎ তিন-চার প্রজন্ম পরে এসে আমার কাছে কোনো জমি না পাওয়া সত্ত্বেও জমি চায়?
এরপরেও যদি কোনো জমি কাগজে-কলমে পেয়ে থাকে আমি দিতে রাজি আছি।
কিন্তু তারা আসলে কি চায় তারা নিজেরাও জানে না বলে আমার মনে হচ্ছে।
তারা বিভিন্ন জনের প্ররোচনায় প্ররোচিত হয়ে উদ্বাস্তুর মতো আমার জমিতে অন্যায়ভাবে দিনাতিপাত করতেছে।
বিষয়টি আমাকে ও আমার পরিবারকে হেনস্তা আর সম্মান হানি করা ছাড়া আর কিছু নয় বলে আমি মনে করি।
প্রতিপক্ষ গন সমাজে আমার এবং আমার সন্তানদের উত্তরোত্তর সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে এরকম উদ্ভট ও মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে আমি মনে করি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ভুক্তভোগী শমশের আলী শাহ বলেন, প্রতিপক্ষগন জমিটির জন্য খারিজ বাতিলের মামলা করেছিল।
একবার নয়, দুইবার। সে সময়ও আমি আমার সকল কাগজপত্র দাখিল করি। ভূমি অফিস কর্তৃক
যাচাই বাছাই, সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদন এর উপর ভিত্তি করে প্রতিবারই তাদের খারিজ বাতিলের আবেদন ভূমি অফিসে নামঞ্জুর হয়েছে।
কি উদ্দেশ্যে জমিতে ঘর তুলে ও চাপের মুখে সরিয়ে নিয়ে যায়, সেটি প্রতিপক্ষরাই ভাল বলতে পারবে।
আমরা বলপ্রয়োগ করে তাদেরকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে তারা যদি এরকম কোনো অভিযোগ করে থাকে তাহলে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী তার স্বপক্ষের সকল কাগজ পত্রের ফটোকপি দেখান।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, জমিতে রিং স্ল্যাবের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন থেকে পরিচালিত হয়ে আসছে।
কিন্তু তৈরিকৃত রিং, স্ল্যাব গুলো ভাঙা দেখা যায়, যা ভুক্তভোগীর অভিযোগের সাথে সত্যতার প্রমান পাওয়া যায়।