শনিবার , ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অর্থ আত্মসাতের কারখানা দ্বীপ্ত জীবন ফাউন্ডেশনের দ্বিতীয় ব্যক্তিই ‘দরবেশ বাবা’ তথা ইয়াসিন

প্রতিবেদক
ঠাকুরাগাঁও সংবাদ
সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪ ১০:২২ অপরাহ্ণ

বীরগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধি; দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসনের সাবেক স্বৈরাচার, সীমাহীন দূর্নীতিবাজ এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল তার অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে বীরগঞ্জ ও কাহারোল উপজেলার সংযোগ রামপুর বটতলা ঢাকা-পঞ্চগড় হাইওয়ে মহাসড়কের পাশে বিতর্কিত তবে মূল্যবান জমিতে প্রথমে চক্ষু হাসপাতাল পরবর্তীতে নাম পাল্টিয়ে দ্বীপ্ত জীবন ফাউন্ডেশন হাসপাতাল স্থাপন করেন।

দ্বীপ্ত জীবন ফাউন্ডেশন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় সাবেক এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল, বীরগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মরহুম মোকছেদ আলী, মরহুম ইয়াকুব আলী বাবুল, মোস্তাক হোসেন, তোফাজ্জল হোসেন, কাহারোলে সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন, হাঁস কালাম, মান্নান সহ অনেকের অবদান কালের স্বাক্ষী।

একের পর এক কমিটি রূপরেখা পরিবর্তন হলেও মনোরঞ্জন শীল প্রতিষ্ঠাতা এবং আজীবন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

চক্ষু হাসপাতাল কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রয়াত মোকছেদ আলী এবং মোস্তাক হোসেন দায়িত্ব পালন করেছেন বলে জানা গেছে।

তবে গোপাল এটিকে নিজের ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাবী করে যখন তখন কমিটি রূপরেখা পরিবর্তন করে চলেছেন, এমন ঘটনায় ব্যপক কানাঘুষা ও সমালোচনা শুরু হয় ফলে ধ্রুত গোপাল সেখানে তার নিজ নামে আরও কিছু জমি ক্রয় করেন, বাউন্ডারি প্রাচীর দিয়ে নামকরণ করেন “দ্বীপ্ত জীবন ফাউন্ডেশন হাসপাতাল”.আর এ ফাউন্ডেশনে সাধারণ সম্পাদকের পদে আছেন, বীরগঞ্জের ‘দরবেশ বাবা’ মনোরঞ্জন শীল গোপালের আস্থাশীল “ইয়াসিন আলী”

সকল প্রকার ক্রিমিনাল প্রকল্পের হার্ড হিসেবে দুই উপজেলায় দায়িত্ব পালনকারী বীরগঞ্জ পৌরশহরের হাটখোলা নিবাসী দরবেশ বাবা গোপাল ভক্ত ইয়াসিন আলী।

সর্বজনীন চক্ষু হাসপাতালের নাম পাল্টিয়ে করা হয় দ্বীপ্ত জীবন ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এবং ফাউন্ডেশনের সভাপতি সাবেক এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল নিজেই অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানের তিনি একক দাবীদার, তিনিই মালিক এবং ইয়াসিন আলী সব প্রজেক্ট তৈরীসহ বাস্তবায়নের দায়িত্বে।

সংগত কারণে বলার অপেক্ষা রাখে না, দ্বীপ্ত জীবন ফাউন্ডেশন হাসপাতাল স্বাস্থ্য কেন্দ্র নয়, যেন গড়ে উঠেছিল দূর্নীতিবাজের একটি কারখানা এবং স্বৈরাচার গোপাল এমপির একপেশে বিচারালয়।

বীরগঞ্জ কাহারোলের এমন কোন সরকারী বেসরকারী দপ্তর এবং হিতৈষী ব্যক্তি নেই, যাদের নিকট এই প্রতিষ্ঠানের নামে বিনা রশিদে বাধ্যতা মুলক চাঁদা আদায় করা হয়নি।

এমপি গোপালের নির্দেশে প্রায় এক যুগ থেকে ইয়াসিন আলী কোটি কোটি টাকা অর্থাৎ করে প্রায় ১২ বছরে আনুমানিক নুন্যতম ৬০ কোটি টাকা আদায় এবং আত্মসাত করেছে বলে দায়িত্বশীলরা অনেকে মন্তব্য করেন।

তাছাড়া বৈদেশিক অনুদানও রয়েছে, এমপি হওয়ার সুবাদে গোপাল শীল ভারতের হাই কমিশনার কে এই হাসপাতাল রাষ্ট্রীয় একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ভুলভাল বুঝিয়ে একাধিকবার সরজমিন প্রদর্শন করিয়ে মোটা অংকের অনুদান বাগিয়ে নেন।

দুই উপজেলা থেকে এমপির প্রভাবে সরকারী কাবিখা, কাবিটা, টিআরসহ বিভিন্ন প্রকল্প, দিনাজপুর জেলা পরিষদের তৎকালীন প্রশাসক আজিজুল ইমাম চৌধুরীর সাথে গভীর সখ্যতা থাকার কারনে এবং দূর্নীতিবাজ প্রশাসক হওয়ায় দ্বীপ্ত জীবন ফাউন্ডেশনের নামে বিভিন্ন সময় বিধি বহির্ভূত প্রকল্প বানিয়ে আত্মসাতের ঘটনা হাতে নাতে ধরা পড়েছে।

একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে জেলা পরিষদ কিভাবে ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় এ নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত চলছে এবং দ্বীপ্ত জীবন ফাউন্ডেশন হাসপাতালের সকল কার্যক্রম বন্ধ আছে।

এ ব্যপারে জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব দেলওয়ার হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি দায়িত্বে থাকা কালীন সময়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় হতে এক সদস্যের তদন্ত টিম ‘যুগ্ম সচিব’ এসে তদন্ত করে গেছেন।

অভিযুক্ত ফাউন্ডেশনের সভাপতি সাবেক এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল এবং সাধারণ সম্পাদক দরবেশ বাবা ইয়াসিন আলীর মুঠোফোনে ফোন দিয়ে তাদের কে পাওয়া যায়নি।

তারা বেশ কয়েকটি মামলাসহ সম্প্রতি দিনাজপুরে হত্যার চেষ্টা মামলায় এজাহার নামীয় আসামী হওয়ায় তারা এখন পলাতক রয়েছে বলে অনেকে জানিয়েছেন।

সর্বশেষ - ঠাকুরগাঁও

আপনার জন্য নির্বাচিত