ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: করোনার থাবায় মৃত্যুর মিছিল ও সংক্রমণ যেন বাড়ছে সীমান্তবর্তী জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে। হরিপুর উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে পিতা ইয়াকুব আলী(৭১)’র মৃত্যুর চার ঘন্টা পর ছেলে আজগর আলী (৫২) মারা গেছেন। এ ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এদিকে সদর উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আজাদ(৪০) নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে।
হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনিরুল ইসলাম খান বলেন, গত ২৫ জুন শুক্রবার উপজেলার দনগাঁও গ্রামের ইয়াকুব আলী অসুস্থ অনুভব করলে প্রথমে হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। তার শারীরিক অবস্থা বেগতিক দেখে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে দিনাজপুর মেডিকেল হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ওইদিনই তাকে এম আব্দুর রহিম দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার করোনা পজেটিভ হয়। । দীর্ঘ ৮দিন চিকিৎসা নেওয়ার পরেও তার শারীরিক অবস্থা উন্নতি না হলে বৃহস্প্রতিবার রাতে তাকে এ্যাম্বুলেন্স যোগে বাসায় নিয়ে আসা হয়। এরপর ওই দিন রাত সাড়ে ৮টায় মৃত্যু বরণ করেন তিনি। অপরদিকে তার ছেলে শীতলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজগর আলী গত ৩০ জুন বুধবার নিজ বাসায় জ¦র, সর্দিতে আক্রান্ত হলে হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক প্রথমে তার করোনার নমুনা সংগ্রহ করেন। রিপোর্টে তার করোনা পজেটিভ হয়। এরপর কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এম আব্দুর রহিম দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন। বৃহস্প্রতিবার রাতে তাকে এম আব্দুর রহিম দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পহেলা জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় তিনিও মারা যান।
এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ঠাকুরগাঁও শহরের শাহাপাড়ার তরুণ ব্যবসায়ী আবু কালাম আজাদ। শুক্রবার সকালে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আবুল কালাম আজাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার স্ত্রীর বড় ভাই ইউনুস আলী মানিক। তিনি বলেন, আবুল কালাম দুই সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। প্রথমে জ্বরের চিকিৎসা করছিলেন। জ্বর ভালো না হওয়ায় তার করোনা পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষার পর করোনা পজিটিভ আসে। এরপর তাকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানে তিনি শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকেন। অক্সিজেন ছাড়া তিনি স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারেন না। ঠাকুরগাঁও হাসপাতালে তার অবস্থা উন্নতি না হওয়ায় দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় নতুন করে আরো ১২৫ জনের দেহে করোনা ভাইরাস সনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩ হাজার ৫০৯জন। জেলায় এ পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৮৩জন।