ঠাকুরগাঁও: দিনাজপুরের ফুলবাড়ী কয়লাখনি বিরোধী আন্দোলনের ট্রাজেডি দিবস উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বন্দর রক্ষা কমিটি।
বৃহস্পতিবার সকালে শহরের চৌরাস্তা এলাকায় প্রতিবাদ সভায় তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকারের সাথে আন্দোলনকারীদের ৬ দফা সমঝোতা চুক্তি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, ফুলবাড়ী কয়লাখনি বিরোধী আন্দোলনের তৎকালীন সরকারের গুলিতে তিনজন যুবক মারা গেছেন। আজও পর্যন্ত ওই হত্যার বিচার হয়নি। অবিলম্বে দোষিদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তেল গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বন্দর রক্ষা কমিটির নেতারা।
বক্তারা আরো বলেন, ৬দফা চুক্তিতে বলা হয়েছে, ফুলবাড়ীসহ দেশের কোথাও উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লাখনি করা যাবে না। এশিয়া এনার্জিকে ফুলবাড়ী ও দেশ থেকে বহিস্কার করা হবে। খনি বিরোধী আন্দোলনকারীদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহারসহ নতুন করে কোন মামলা দায়ের করা যাবে না। একই সাথে এশিয়া এনার্জির দালালদের বিচার করতে হবে। কিন্তু চুক্তির আংশিক বাস্তবায়ন করা হলেও এখনও এশিয়া এনার্জিকে বহিস্কার করা হয়নি। আন্দোলনকারীদের নামে নতুন করে মামলা দায়ের করেছে এশিয়া এনার্জি। একই সাথে সরকারও নতুন করে বড়পুকুরিয়া উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লাখনি করার উদ্যোগ নিচ্ছে। মন্ত্রী বলছেন, এশিয়া এনার্জির সাথে সরকারের কোন চুক্তি হয়নি। অথচ এশিয়া এনার্জি (জিসিএম) ফুলবাড়ী কয়লাখনিকে লÐনের শেয়ার মার্কেটে শেয়ার বিক্রি করছে। এই লুটেরা এশিয়া এনার্জির বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে। নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা তুলে নিতে হবে। দেশের পরিবেশ বান্ধব প্রকল্প নিতে হবে। পরিবেশ ধ্বংসকারী কোন প্রকল্প নেওয়া হলে জনগণ তা গণআন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিহত করবে।
তেল-গ্যাস রক্ষার জাতীয় কমিটি ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার আহ্বায়ক রেজওয়ানুল হক রিজুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা জেএসডির সভাপতি মনসুর আলী, জেলা সিপিবির সহ সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আবু সায়েম, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য এ্যাড. ইমরান, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক গোলাম সারোয়ার সম্রাট, সদস্য সচিব মাহবুব আলম রুবেল, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দীক প্রমুখ।
পরে বিক্ষোভ মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ করে বড় মাঠ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে নিহতদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে জাতীয় সম্পদ রক্ষায় আন্দোলনরত জনতার ওপর পুলিশ ও তৎকালীন বিডিআর গুলি চালায়। এতে ৩ জন শহীদ ও দু’শতাধিক আহত হন। ৩০ আগস্ট সরকার আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নিয়ে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত চারদলীয় জোট সরকারের সাথে ৬ দফা সমঝোতা চুক্তি হয়।