রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধিঃ বর্তমান মৌসুমে রসুন রোপণের সময় শুরু হওয়ায় হাট বাজারগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ রসুন আসা শুরু হয়েছে। গত মৌসুমে পর্যাপ্ত রসুন উৎপাদন হলেও ন্যায্যম‚ল্য না পাওয়ায় এবার কৃষকরা রসুন চাষে আগ্রহ হারা”েছন। এদিকে ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, বিদেশ থেকে অতিরিক্ত রসুন আমদানির ফলে কৃষকরা ন্যায্যম‚ল্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ বাজার। কৃষকরা প্রতি মণ রসুন বিক্রি করেছেন ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা। কবির ভাষায়- ধান ফুরালো পান ফুরালো খাজনার উপায় কি? আর কয়টা দিন সবুর করো রসুন বুনেছি।
কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় রসুন উৎপাদন করেও উৎপাদন খরচ তুলতে হিমশিম খা”েছন চাষিরা চলতি মৌসুমে রসুনের ভালো ফলন পেলেও ন্যায্য দাম পাননি উপজেলার রসুন চাষিরা। অনেক পরিশ্রমের ফসল রসুন বিক্রি করে খরচের টাকাই উঠছে না কৃষকদের।
রসুনের দাম নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে কৃষকরা বলেছেন, এবার রসুনের খুব দাম কম। গৃহ¯’ সবার লোকসান হ”েছ। আগে রসুন বিক্রি করেছি ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকায়, তবে বর্তমানে তা ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি করতে হ”েছ। অপরদিকে বিদেশ থেকে রসুন আমদানির ফলে উপজেলায় দেশীয় রসুনের চাহিদা কমেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। এর ফলে দাম কমে আসায় রসুন কম কিনছেন তারা। এ বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলেছেন, বিভিন্ন দেশের রসুন আসায়, বর্তমানে বাজার কম। উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়নের ভরনিয়া গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, চলতি মৌসুমে রসুনের দাম একেবারেই কম। ভালো মানের রসুন ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও অধিকাংশ রসুন ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায় প্রতি মণ বিক্রি হ”েছ। এতে কৃষকের উৎপাদন খরচই উঠছে না। অথচ চায়না থেকে আমদানি করা রসুন চার হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হ”েছ।
এ অব¯’া হলে কৃষক বাঁচবে কি করে? ভবানন্দপুর গ্রামের কৃষক ইকবাল হোসেন বলেন, একসময় প্রতি মণ রসুন আট/নয় হাজার টাকা দরে বিক্রি করেছি। এ অব¯’ার পরিবর্তন না হলে কৃষক সর্বস্বান্ত হয়ে যাবে।
উপজেলার রাতোর গ্রামের রসুন চাষি রওশন আলী বলেন, ‘বাজার ব্যব¯’াপনায় কৃষকের কোনো ভ‚মিকা না থাকায় কৃষকরা তাদের কাঙ্খিত পণ্যের ম‚ল্য পা”েছ না। এছাড়া কৃষকের ঘরে কৃষি পণ্য মজুতের সুযোগ না থাকায় এবং সরকারিভাবে কোনো সংরক্ষণাগার গড়ে না ওঠায় এ অঞ্চলের রসুন চাষিরা পাইকারদের হাতে জিম্মি হয়ে আছেন।’ দেড় মণ রসুন নিয়ে রবিবার নেকমরদ হাটে এসেছেন আবু সালেক নামে এক কৃষক। শীতের মৌসুমে বাড়িতে মেয়ে আর নাতিরা এসেছে। রসুন বিক্রি করে মাংস মাছ কিনে বাড়ি ফিরবেন। কিš‘ বাজারে রসুনের দাম দেখে তিনি হতাশ। কেননা এক মণ রসুনের দাম এক কেজি মাংসের সমান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, কৃষকদের স্বার্থে সরকারিভাবে কৃষি পণ্যের সংরক্ষণাগার গড়ে তোলার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সংরক্ষণের ব্যব¯’া থাকলে কৃষকরা রসুন সংরক্ষণ করে কাঙ্খিত দাম পেলে ভালো দামে বিক্রি করার সুযোগ হবে।’