বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার নিজপাড়া ও ভোগনগর দুটি ইউপিতে শীতের তীব্রতা বাড়লেও নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আশায় পোষ্টারে ছেয়ে গেছে নির্বাচনী এলাকা। ভোট নিবেদনে নির্ঘুম রাত দিন কাটছে নিজপাড়া ও ভোগনগর ২ ইউপিতে চেয়ারম্যান,সাধারণ সদস্য, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদ প্রার্থী ও কর্মী সমর্থকদের। ষষ্ঠ ধাপে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভোটের প্রচার বেশ জমে উঠেছে। শেষ মুহূর্তে শোডাউন, গণসংযোগ, রিফলেট বিতরণ সহ প্রার্থীরা নিজের সেরা অবস্থান জানান দিতে করোনার কথা ভুলে গিয়ে মিছিল -সমাবেশ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে নিজেদের যোগ্য প্রমাণ করতে করছেন আপ্রাণ চেষ্টা। এবার স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নতুন ভোটারেরা চাইছেন পরিবর্তন। তবে ইভিএমের ভোটে দুশ্চিন্তা করছেন অনেক ভোটারই। দুই ইউনিয়নে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ( ইভিএম) ভোট দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অনেক প্রার্থী ও ভোটারেরা। এই প্রথম ইভিএমে ভোট হবে দুইটি ইউনিয়নে। নতুন এ পদ্ধতির ভোটার ও প্রার্থীদের অনেকের ভেতর রয়েছে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা। তবে, সব ছাপিয়ে সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন হলে জেতার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রার্থীরা। এদিকে ইভিএমে ভোট দেওয়ার বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কমিশন।উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার আঁখি সরকার জানান, ভোটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাকে যথাযথভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। মাইকিং দিয়ে নির্বাচন এলাকায় প্রচার চালানো হচ্ছে। আগামীকাল শনিবার ভোটারদের জন্য ভোটদান প্রদ্ধতি সম্পর্কে হাতে কলমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রচার- প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। ভোটে নতুন প্রার্থীরা চাইছেন পরিবর্তন, নিজের বিজয়ের মাধ্যমে হতে পারে সব সমস্যার সমাধান। আর পুরোনোরা বলছেন, ইউনিয়ন পরিষদের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে তাদের বিকল্প নেই। বীরগঞ্জ উপজেলার নিজপাড়া ও ভোগনগর ইউনিয়নে ৯ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ২০ জন ও ৮৬ জন সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- নিজপাড়া ইউপির মরহুম সাবেক চেয়ারম্যান সুলতান সরকারের সুযোগ্য ছেলে ও মহসিন আলীর ভাতিজা, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নৌকার প্রার্থী নূরিয়াস সাঈদ মোঃ ফয়সাল অরফে সাঈদ সরকার (নৌকা) তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপি-র প্রার্থী প্রভাষক মোঃ আনিসুর রহমান আনিস (চশমা) প্রতীক নিয়ে। এবার নিজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় আশপাশের সিংহভাগ ভোটারেরা দ্বিধাহীন ভাবে তাদের এলাকার নৌকার একক প্রার্থী নূরিয়াস সাঈদের পক্ষ নিয়ে প্রচার প্রচারণা করছেন এবং তাকেই নির্বাচিত করার দৃঢ় প্রত্যয়ী। অপর দিকে দক্ষিন-পশ্চিমাংশের ভোটারের বিশাল অংশ কোমর বেধে সুশিক্ষত জনসেবক প্রভাষক আনিসুর রহমান আনিসের পক্ষে তৃতীয় ও শেষবারের মত খুব জোরেসোরে বাদ্যের তালে তালে চশমা মার্কায় ভোট প্রার্থনা অব্যাহত রেখেছেন। প্রার্থী আনিস ও তার সমর্থকরা শতভাগ আশাবাদী এবার তাদের বিজয় হবে।চেয়ারম্যান পদে এখানে জাতীয় পার্টি দলীয় (লাঙ্গল) প্রতীক নিয়ে কাজী মনজুর আলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (হাতপাখা), মোঃ সিরাজুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র ঘোড়া প্রতীককে মোঃ জিয়াউর রহমান জিয়া প্রচারাভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ৮নং ভোগনগর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী স্বতন্ত্র বর্তমান চেয়ারম্যান ‘চশমা’ আলহাজ্ব বদিউজ্জামান পান্না ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাজিউর রহমান রাজু (নৌকা) দুইজনই বিজয়ে প্রত্যাশায় শেষ মুহূর্তে জোরেশোরে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী মোঃ শমসের আলী (হাতপাখা) ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মুফতি মাওঃ শাহাবুদ্দিন সজীব (আনারস) প্রতীক নিয়ে প্রচারের মাধ্যমে ভোটারদের নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রাজিউর রহমান রাজু এই ইউনিয়নের কৃতি সন্তান, মরহুম ফজলুল করিম অরফে( ফজু) সাবেক চেয়ারম্যানের ছেলে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুর ইসলাম নুরের চাচাত ভাই বলে জানা গেছে। উপজেলার নিজপাড়া ও ভোগনগর দু’টি ইউপিতে মোট ভোট কেন্দ্র ২৩টি, ভোট কর্মকর্তা হিসেবে প্রিজাইডিং ২৩ জন, সহ-সরকারি প্রিজাইডিং অফিসার ১৭২ জন,পোলিং অফিসার ৩৪৪ জন, নিজপাড়া ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ২৩ হাজার ৫শত ৮২ জন। পুরুষ ১১ হাজার ৬ শত’ ৪৩ জন ও নারী ১১ হাজার ৬ শত’ ৪৩ জন। ভোগনগর ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ২১ হাজার ১শত’ ৪৫ জন। পুরুষ ১০ হাজার ৬শত’ ৩৩ জন ও নারী ১০ হাজার ৫শত’১২ জনসহ দুটি ইউনিয়নে মোট ৪৪ হাজার ৭ শত ‘২৭ জন ভোটার তাদের ভোট প্রয়োগ করবেন