বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের বীরগঞ্জ পৌরসভার ও উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামের অঞ্চলে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শ্রী শ্রী সরস্বতী পূজার ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। বৈদিক যুগ থেকে বিদ্যার দেবী হিসেবে সরস্বতীর পূজা ও শিশুদের হাতেখড়ি দেওয়ার রীতি পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। প্রতি বছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চম তিথিতে সরস্বতী দেবীর আশীর্বাদ লাভের আশায় বাসাবাড়ি সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হয় এই পূজা অর্চনার। গত দুই বছর থেকে করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পূজা কম হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন প্রতীমা কারিগররা। বীরগঞ্জ উপজেলা সুজালপুর ইউনিয়নের কোমরপুর এলাকার প্রতিমা গড়ার কারিগর বলরাম মালাকার ছেলে সাগর পাল জানান,এ বছর মাত্র ৫০-৬০ টি প্রতিমা গড়ার কাজ পেয়েছেন। হঠাৎ করে বৈরী আবহাওয়া কারণে প্রতিমা ডেলিভারি করতে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ বছর সরস্বতী প্রতিমা গড়ে আয় রোজকার কম হয়েছে। করোনার প্রকোপ বেশি হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২১ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা থাকায় পূজা কম হওয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘদিনে সরস্বতী প্রতিমা তৈরি প্রায় ১লাখ আয় রোজকার হয়েছে। এবছর ২০ হাজার টাকা মতো আয় হয়েছে। বীরগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের নিবাসী ও কেন্দ্রীয় মন্দিরের পুরোহিত লক্ষ্মণ চক্রবর্তী জানান,বৈদিক যুগ থেকে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের তিথিতে সংগীত ও বিদ্যার দেবী হিসেবে সরস্বতীর পূজা অর্চনা আয়োজন করা হয়। হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন পূজা -পার্বণের মধ্যে অন্যতম সরস্বতী পূজা। কারণ এই পূজার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। মেধার বিকাশ, জ্ঞান অর্জন ও লেখাপড়ায় ভালো ফল থেকে সরস্বতী দেবীর কৃপা লাভের জন্য বই পুস্তক, কলম ও খাতা দেবীর চরণে সমর্পণ করে আশীর্বাদ প্রার্থনা করে থাকে। এ দিনেই সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবারের শিশু সন্তানের হাতেখড়ি দেওয়া হয়। বিশেষ করে যাদের স্কুলে ভর্তি করার বয়স হয়েছে, তাদের হাতে দেবী সরস্বতীর আশীর্বাদপুষ্ট বই পুস্তক, কলম ও খাতা তুলে দিয়ে অক্ষরের সঙ্গে পরিচয় করেয়ে দেওয়া হয়। বীরগঞ্জ পৌরশহরের বাঁকালীর দোকানী বৌদ্ধ সাহা জানান,মাঘ মাসে বৃষ্টির কারণে প্রতিমা বিক্রির ধস পড়েছে। সকাল থেকে হিমে হওয়া আর প্রচন্ড শীতে শহরে জনশূন্য হয়ে পড়েছেন। ক্রেতা নাই বলেই চলে।