তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড় ) প্রতিনিধি :
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় শালবাহান ও তেঁতুলিয়া ইউপির অন্তর্গত জিসি সড়ক সম্প্রসারনের লক্ষ্যে ২৫৮টি গাছ নিলামে সস্তা দরে বিক্রি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বিকেলে উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে উম্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে গাছগুলো বিক্রি করা হয়। স্থানীয়রা বলছেন একটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও বনবিভাগের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারির যোগসাজসের কারণে এই নিলাম হয়েছে।
জানা গেছে, তেঁতুলিয়া থেকে শালবাহান হাট পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার পাকা রাস্তার দুই পাশে ১৯৯৪ সালে করই, কাঠাল, আম, কৃষ্ণচুড়া, জাম, শিশু কাঠসহ ২৫৮টি গাছ লাগানো হয়। এই গাছগুলো বেসরকারি সংস্থা রংপুর দিনাজপুর রুরাল সার্ভিস (আর ডি আর এস) এর ইউনিয়ন ভিত্তিক অঙ্গ সংগঠন ইউনিয়ন ফেডারেশন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ এবং বনবিভাগ যৌথভাবে রোপন করেন।
স্থানীয় দরিদ্র মহিলা শ্রমিকরা এই গাছগুলো দেখাশোনা করেন। এ বছর এই রাস্তা সম্প্রসারনের জন্য স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগ উদ্যোগ নিলে গাছ গুলো বিক্রী করে দেয়ার উদ্যোগ নেয় বনবিভাগ। সূত্র মতে এই গাছ বিক্রির টাকার ১০ শতাংশ পাবেন মহিলা পাহারাদার, ৬০ শতাংশ আরডিআরএস ও ইউনিয়ন ফেডারেশন, ৩০ শতাংশ ইউনিয়ন পরিষদ।
গত ১ ফেব্রæয়ারি শালবাহান হাট হতে মাথাফাটা পর্যন্ত জিসি সড়ক সম্প্রসারণের লক্ষে জিসি সড়কের দু’ধারের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কর্তনের প্রয়োজনে বিক্রয়ের নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় বনবিভাগের মাধ্যমে এই নিলামের ব্যবস্থা করেন। নিলামে ২৫৮টি গাছের সরকারি মূল্য ধরা হয় মাত্র ২ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন গাছগুলোর নুন্যতম বাজারমূল্য ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা । মুল্য নির্ধারন অত্যন্ত কম হওয়ায় সংশ্লিষ্ট উপকার ভোগীরা বঞ্চিত হয়েছেন। সরকারও হারিয়েছে রাজস্ব।
শালবাহান ইউনিয়ন ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম জানান, পানির দরে ২৫৮টি গাছ নিলামে বিক্রয় হয়েছে। আমার ফেডারেশনে গাছগুলো দেখাশোনা করার জন্য ১০ জন নারী পাহারাদার রয়েছে। এতো সস্তা দাম হলে, আমিই কিনে নিতাম। এটা ঠিক হয়নি।
তেঁতুলিয়া বনবিভাগের বিট অফিসার শহিদুল ইসলাম জানান, সিএফটি হিসেবে পরিমাপ করে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারি বিধি মোতাবেক নিলাম সম্পন্ন হয়েছে ।
উপজেলা প্রকৌশলী আবু সাঈদ জানান, রাস্তার দু’পাশে তিনফিট তিনফিট করে কাজ সম্প্রসারণের জন্য এই গাছগুলো কর্তনের জন্য নিলাম আহবান করা হয়। গাছের মূল্য আরও বেশি হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সর্বোচ্চ দরদাতারা সরকারি মূল্য জেনে যাওয়ায় তারা সরকারি মূল্যের চেয়ে একটু বেশি মূল্যে দরপত্র দাখিল করে পেয়ে যায়। আমার ধারণা কৌশল অবলম্বন করে কাজটি করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ চন্দ্র সাহা জানান, আমরাও হতভম্ব। গাছের দাম আরও বেশি হওয়া উচিত ছিলো।