শনিবার , ১৫ অক্টোবর ২০২২ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দীর্ঘ সাড়ে ৪মাস বন্ধের পর ফের মধ্যপাড়া পাথর খনি উত্তোলন শুরু

প্রতিবেদক
ঠাকুরাগাঁও সংবাদ
অক্টোবর ১৫, ২০২২ ১২:৩৩ পূর্বাহ্ণ

দেশের একমাত্র দিনাজপুরের মধ্যপাড়া পাথর খনির পাথর উত্তোলন দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৪ মাস বন্ধ থাকার পর আবারো উৎপাদন শুরু হয়েছে। সচল হয়েছে পাথর উত্তোলন কার্যক্রম। পাথর উত্তোলন কার্যক্রমে খনিতে ফিরেছে কর্মচাঞ্চল্য।
গতকাল বৃহস্পতিবার ২য় শিফট থেকে খনির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জার্মাানীয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) পুরোদমে পাথর উত্তোলন শুরু করেছে। এভাবে তিন শিফটে পূর্ণমাত্রায় কাজ চললে প্রতিদিন গড়ে ৫হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার টন পাথর উত্তোলন সম্ভব হবে। পর পর তিনবার খনি লাভের মুখ দেখেছে। কিন্তু গত ১মে বিস্ফোরক দ্রব্য সংকটের কারনে পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়।
খনি থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করে খনির উৎপাদনে রেকর্ড গড়ে জিটিসি, কিন্তু পাথর উৎপাদন ও উন্নয়ন কাজে প্রয়োজনীয় বিস্ফোরক দ্রব্য (অ্যামোনিয়াম নাইট্রেডসহ কয়েকটি এক্সপ্লোসিভ)এর অভাবে গত ১মে থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ করে দেয় জিটিসি। প্রয়োজনীয় বিস্ফোরক দ্রব্য সরবরাহ করার দায়িত্বে থাকা খনি কর্তৃপক্ষ সময়মতো সরবরাহ না করায় উৎপাদন বন্ধ করে দেয় জিটিসি। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি ও সম্প্রতিক ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারনে সময়মতো বিস্ফোরক দ্রব্য আমদানী করা সম্ভব না হওয়ার কারণে উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ থাকে বলে জানা যায়।
এব্যাপারে মধ্যপাড়া গ্রানাইড মাইনিং কোম্পানির (এমজিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু দাউদ মুহম্মদ ফরিদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সম্প্রতিক ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারনে বিস্ফোরক দ্রব্য আমদানী করতে সময় লেগেছে। তবে আর বন্ধের আশংকা নেই। এখন থেকে প্রায় তিন মাসের প্রয়োজনীয় বিস্ফোরক মজুদ থাকবে। খনিতে পাথর উত্তোলন ও উন্নয়ন কাজে প্রয়োজনীয় বিস্ফোরক (এক্সপ্লোসিভ) বুধবার মধ্যপাড়া খনিতে পৌচেছে। বৃহস্পতিবার থেকে উত্তোলন কাজ শুরু হয়েছে। এবারও আশা করছি পাথর খনি লাভের মুখ দেখবে।
উল্লেখ্য, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেডসহ (বিস্ফোরক) কয়েকটি এক্সপ্লোসিভ সংকটে ১ মে খনি বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে ১৩ মার্চ একই সংকটে খনি বন্ধ হলে জোড়াতালি দিয়ে ২৮মার্চ চালু করা হয়। কিন্তু ১৫দিন না যেতেই আবার শেষ হয়ে যায় খনির প্রয়োজনীয় এই কাঁচামাল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিস্ফোরকের জোগানও দিতে পারছিল না খনি কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় আগামী ৬ মাস নিরবিচ্ছিন্ন খনি পরিচালনা করা যাবে। বর্তমানে মধ্যপাড়া গ্রানাইড মাইনিং কোম্পানির খনি থেকে পাথর উত্তোলন করছে বেলারুশের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জার্মাানীয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি)।চুক্তি অনুযায়ী পাথর উত্তোলনের যাবতীয় মেশিনারিজ, ইকুইপমেন্ট ও বিস্ফোরক জোগান দেবে এমজিএমসিএল। আর প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৫ হাজার টন পাথর উত্তোলন করবে জিটিসি। গত সাড়ে ৪ মাস খনি বন্ধ থাকায় ঠিকাদার কোম্পানিকে লোকসান গুনতে হয়েছে। একই সঙ্গে সরকারেরও বিপুল অঙ্কের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। পাথরের অভাবে বন্ধ রাখতে হয়েছে দেশের অনেক মেগা প্রকল্প।

সর্বশেষ - ঠাকুরগাঁও