মোঃ মজিবর রহমান শেখ,, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি,,পৌর শহরের কালিবাড়ী বাজারে শাক-সবজির ভ্রাম্যমান দোকান করেই সংসার ও জীবন-জীবীকা নির্বাহ করছেন অসহায় ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তা বিন্দাশরী (৫৩)। । ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়ন আরাজী মাটিগাড়া গ্রামের বাসিন্দা তিনি । বাড়িতে স্বামী সিপেন সহ ২ জনই বসবাস করেন। তবে স্বামীর কিছুদিন আগে একটি জটিল অপারেশন হয়েছে, ফলে তিনি আয়-উপার্জন করতে পারেন না। জানা যায়, পরিবারে ২ মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন কষ্ট করেই। বর্তমানে স্বামী কর্মক্ষম হওয়ায় বিন্দাশরী নিজেই কোনমতে সংসার চালিয়ে আসছেন। বাড়ি-ভিটা নিজের হলেও নেই আবাদী জমি। ফলে কৃষিকাজও করতে পারছেন না। তিনি বাড়ির আশপাশের বাজার থেকে সামান্য শাক-সবজি কিনে শহরের কালিবাড়ি বাজারে বিক্রি করেই যে আয় হয় তা দিয়ে স্বামী-স্ত্রীর সংসার চলছে। ছোট একটি দোকান দিতে পারলে কষ্ট কিছুটা লাঘব হতো বলে জানান তিনি। ৫ মার্চ শনিবার পৌর শহরের কালিবাড়ী বাজারে গিয়ে কথা হয় বিন্দাশরীর সাথে, তিনি বলেন পালাপালি (যুদ্ধের) সময় মায়ের কোলে ছিলাম। ২ মেয়ে স্বামী মিলে ৪ জনের সংসার। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছি সদর উপজেলার আকচা ও কালিতলায়। স্বামী শারীরীকিভাবে অসুস্থ হওয়ায় কোন কাজ ও চলাফেরা করতে পারেন না। প্রতিদিন সদর উপজেলার বুড়িরহাট, নয়াহাট থেকে ৩ থেকে ৫শ টাকার শাক সবজি কিনি। পরে সেগুলো কালিবাড়ি বাজারে বিক্রি করে কিছুটা লাভ হয়; তা দিয়েই কষ্ট করেই সংসার চালাই। নিজের এলাকায় বা কালিবাড়ি বাজারে একটি দোকানের ব্যবস্থা হলে খুব উপকার হতো। কালিবাড়ি বাজারে শাক কিনতে আসা ক্রেতা শাহীন ফেরদৌস বলেন, উনার কাছে টাটকা দেশী অনেক শাক-সবজি পাওয়া যায়। এর মধ্যে নাপা, লাল, বরই, গাজর, শিম, মুলা, ধনিয়া পাতা, কলমি, সপ শাক, ঢেঁকি শাক, দেশি মুরগীর ডিম, টমেটো, বাবু শাক, কাঁচা মরিচসহ বেশ কিছু সবজি বিক্রি করতে দেখেছি। দাম অন্যান্য দোকানের থেকে কম হওয়ায় তার কাছ থেকে দীর্ঘদিন থেকে শাক-সবজি কিনি। পৌর শহরের টিকাপাড়া মহল্লার গৃহিনী শারমিন আক্তার বলেন, উনার কাছে নিয়মিত শাক কিনি। তুলনামূলক অন্যান্য দোকানের থেকে অনেক শস্তায় শাক পাওয়া যায় সেখানে। দেশীয় বিভিন্ন টাটকা শাক নিশ্চিন্তে উনার কাছ থেকে দীর্ঘদিন ধরে নিয়ে আসছি। এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো: সামসুজ্জামান বলেন, বিষয়টি জানলাম, তিনি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করলে খোজ-খবর নিয়ে তাকে কি ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা যায়, সে বিষয় দেখা যাবে।