মিজানুর রহমান,হরিপুর প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে সেটেলমেন্ট অফিসে দায়িত্ব থাকা আপত্তি অফিসার ফেরদৌস খানের বিরুদ্ধে ঘুঁষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। তার দূর্নীতি-অনিয়ম ও ঘুঁষ বাণিজ্যের কারণে জমির মালিকরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আপত্তি অফিসারের বিরুদ্ধে দূর্নীতি-অনিয়ম ও ঘুঁষ বাণিজ্যের অভিযোগ এনে জামিউল ইসলাম পলাশ নামে এক ভূক্তভূগি জমির মালিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগকারী জামিউল ইসলাম পলাশ বলেন ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার ভবানন্দপুর মৌজাস্থ জে.এল নং-৫৩, এসএ খতিয়ান নং-৩৬৬, দাগ নং-৩০৩ এর ৩ একর ৩৭ শতক জমির মধ্যে ৭৯ শতক জমি আমার বাবা মহির উদ্দীন ও মাতা জেসমিন আক্তার এর নামে ৩৪৯ নং ডিপি খতিয়ান অন্তর্ভূক্ত আছে। অসৎ উদ্যোশে আমার চাচা মোঃ নজরুল ইসলাম নিজ জমি দাবী করে হরিপুর সেটেলমেন্ট অফিসে দুটি আপত্তি কেস আনয়ন করেন। যাহার কেস নং ৩১২ ও ১৪৮।
আমার বাবা পুলিশের চাকুরী করেন। তিনি চাকুরীর সুবাদে জেলার বাইরে কর্মস্থলে থাকায় আমি আমার বাবার পক্ষে গত ২০/০৯/২০২১ইং তারিখে হরিপুর সেটেলমেন্ট অফিসে দায়িত্ব থাকা আপত্তি অফিসার মোঃ ফেরদৌস খানের আদালতে মামলায় অংশ গ্রহন করি। অসৎ উদ্যোশ হাসিল করার জন্য আপত্তি অফিসার মোঃ ফেরদৌস খান মামলার শুনানি করার জন্য কালক্ষেপন করে প্রায় ০৮টি তারিখ পরিবর্তন করে আমাকে হয়রানী করেন। এক পর্যায়ে আমি হয়রানী থেকে মুক্ত পাওয়ার জন্য মামলা নিষ্পত্তি বিষয়ে আপত্তি অফিসার মোঃ ফেরদৌস খানকে অনুরোধ করিলে তিনি মামলা নিষ্পত্তির জন্য আমার নিকট হতে টাকা দাবী করেন। হয়রানী থেকে মুক্ত পাওয়ার জন্য আমি তাকে ৫ হাজার দেয়। পরে আরো ২ লক্ষাধিক টাকা দাবী করেন। আমি তার দাবীকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করিলে ৭ এপ্রিল আপত্তি অফিসার মোঃ ফেরদৌস খান বলেন, ২ লাখ টাকা না দিলে তোমার বাবার নামীয় জমি কর্তন করে বিবাদী নুজরুল ইসলামে নামে উক্ত জমি রেকর্ড করে দিবো।
অভিযোগকারী পলাশ হরিপুর সেটেলমেন্ট অফিসে দায়িত্ব থাকা আপত্তি অফিসার মোঃ ফেরদৌস খানের এই দূর্নীতি-অনিয়ম ও ঘুঁষ বাণিজ্যের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল করিম বলেন সেটেলমেন্ট অফিসে দায়িত্ব থাকা আপত্তি অফিসার ফেরদৌস খানের দূর্নীতি-অনিয়ম ও টাকা দাবীর বিষয়টি আমি শুনেছি, অনিয়ম ও টাকা দাবী করার সত্যতা পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, হরিপুর সেটেলমেন্ট অফিসে দায়িত্ব থাকা আপত্তি অফিসার মোঃ ফেরদৌস খানের বিরুদ্ধে দূর্নীতি-অনিয়ম ও ঘুঁষ বাণিজ্য করে জমির মালিকগণকে হয়রাণী করার বিষয়ে আমার কাছে একাধিক লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ রয়েছে। তার এই দূর্নীতি-অনিয়ম ও ঘুঁষ বাণিজ্যের অভিযোগের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। দূর্নীতি-অনিয়ম ও ঘুঁষ বাণিজ্যকারী অফিসার ফেরদৌস খানের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাই । যাতে জমির মালিকগণ আর হয়রানীর স্বীকার না হয়।
অভিযোগের বিষয়ে হরিপুর সেটেলমেন্ট অফিসে দায়িত্ব থাকা আপত্তি অফিসার মোঃ ফেরদৌস খানের ব্যবহৃত ০১৭৩৭০৩১৬৯০ মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।