রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে লিচুবাগান ইজারার দরপত্রে লুকোচুরির অভিযোগ
উঠেছে। উপজেলার রাণীসাগর রামরায় নেচার পার্কের এই লিচুবাগানের দরপত্র কম
দরদাতাকে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। গত ৩০ মার্চ দরপত্র খোলা নিয়েও প্রশ্ন
রয়েছে ইজারায় আগ্রহীদের।
এদিকে লিচুবাগানের দরপত্রের বিষয়ে তথ্য দিতেও গড়িমসি করেছেন উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কার্যালয়ের অফিস সহকারী ও অফিস সুপারের
দায়িত্বরত আতিকুর রহমান। গতকাল বুধবার ইউএনও কার্যালয়ে গিয়ে আতিকুরের
কাছে তথ্য চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে নথি খুঁজে
বের করে দুজন দরপত্র দাখিল করেছেন বলে জানান। তবে মোট কতজন দরপত্র
নিয়েছেন, এর সংখ্যা চাইলে তিনি তা গোপনীয় বলে উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে
কথা বলতে বলেন।
বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, লিচুবাগানটি সর্বনিম্ন সরকারি দর ১২ লাখ ১ হাজার
১০০ টাকা নির্ধারণ করে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে প্রথম দফায় গত ১৪ মার্চ
দরপত্র দাখিলের শেষ দিন পর্যন্ত ১৪ জন দরপত্রের শিডিউল কেনেন। তবে কেউ
এটি দাখিল করেননি। পরে শেষ দফায় গত ৩০ মার্চ ৮ জন শিডিউল কিনলেও দাখিল
করেন মাত্র দুজন।
ইজারা গ্রহণে ইচ্ছুক দুজন মনিরুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলামের মধ্যে মনিরুল
বাগানের দর দিয়েছেন সর্বোচ্চ ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা, যা সরকারি দর থেকে
অনেক কম। ওই দরেই নথিটি পাস করে নেওয়ার জন্য অফিস সহকারী আতিকুর রহমান বড়
অঙ্কের টাকা উৎকোচ নিয়েছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
লিচুবাগানের দরপত্র দাখিলকারী মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সর্বোচ্চ দর
দিয়েছি। কিন্তু আমাকে এখনো বাগানের ইজারার কাগজ বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। আমাকে
আমার দেওয়া মূল্যে ইজারা না দিলে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হোক। কিন্তু
তা-ও করা হচ্ছে না।’
উৎকোচ নেওয়া প্রসঙ্গে ইউএনও অফিসের দায়িত্বরত অফিস সুপার আতিকুর রহমান এই
প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ থাকলে প্রমাণ
করেন।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, ‘বাগানটি
ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’
উপজেলা চেয়ারম্যান শাহারিয়ার আজম মুন্না বলেন, ‘বাগান নিয়মানুযায়ী ইজারা
দেওয়া হবে কোনোভাবেই অনিয়ম হবে না।’