পঞ্চগড় প্রতিনিধি\ ‘আশ্রয়নের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার, শ্লোগানে মুজিব শতবর্ষে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে এক হাজার ৩১৩টি একক গৃহ হস্তান্তর হস্তান্তর করা হবে। আর এর মাধ্যমে দেশের প্রথম জেলা হিসেবে ভ‚মিহীন-গৃহহীনমুক্ত জেলা হতে যাচ্ছে পঞ্চগড়। ৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চগড়কে শতভাগ ভ‚মিহীন-গৃহহীন জেলা হিসেবে ঘোষণা দেবেন বলে জানা গেছে। এই কাজের অংশ হিসেবে শেষ পর্যায়ের কাজ শেষ করতে ব্যস্ত জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। তৃতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপের এসকল গৃহ হস্তান্তরের মাধ্যমে জেলার চার হাজার ৮৫০টি ভ‚মিহীন-গৃহহীন পরিবার পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের দুই শতক জমির মালিকানার সাথে এই বাড়িতে থাকছে দুটি করে শোয়ার ঘর, একটি রান্নাঘর. একটি শৌচাগার, বারান্দা ও সুপেয় পানির জন্য নলকূপ।
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় তৃতীয় পর্যায়ের দুই হাজার ৪৩৪টি এক গৃহের মধ্যে প্রথম ধাপে গত ঈদের আগে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার স্বরূপ এক হাজার ২১টি একক গৃহ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। বাকি এক হাজার ৩১৩টি গৃহ নির্মাণ কাজ দ্রæত গতিতে এগিয়ে চলছে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে এসকল গৃহের কাজ শেষ করে উপকারভোগিদের মাঝে হস্তান্তর করা হবে। এর আগে একই প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে এক হাজার ৫৭টি এবং দ্বিতীয় ধাপে এক হাজার ৩৫৯টি একক গৃহ উপকারভোগিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলামের প্রত্যক্ষ মনিটরিং এবং সুপারভিশনে এ।
জেলার ভূমিহীন পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে এবং উপকারভোগী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়। এছাড়া নির্মাণ কাজের গুণগত মান বজায় রাখার জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকগণ ছাড়াও স্ব-স্ব উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ প্রত্যক্ষভাবে তত্ত¡াবধানের দায়িত্বে পালন করেন।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউপির গয়াপানি আশ্রয়নের বাসিন্দা মুল্লিকা আক্তার (৪৫)। কখনো ভাবতেই পারেনি এত সুন্দর পাঁকা ঘরে বসবাস করতে পারবো। পাাঁকা ঘর পেয়ে কেমন লাগছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। জানালেন, আগে অন্যের জমিতে ঘর তুলে বসবাস করতেন। বেশ কিছুদিন হলো এখানে উঠেছেন। স্বামী আনোয়ার হোসেন অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করেন। মুল্লিকা বলেন, ‘ভালো আছি, ছোট হলেও নিজের বাড়ি হয়েছে। মানুষের কথা শুনতে হয় না। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাতে ভুল করলেন না।
এ বিষয়ে কথা বললে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাসুদুল হক বলেন, প্রথম পর্যায় থেকে তৃতীয় পর্যায় পর্যন্ত পঞ্চগড় পৌরসভাসহ সদর উপজেলায় সর্বমোট এক হাজার ৫৩৬টি উপকারভোগি পরিবারের মধ্যে একক গৃহ হস্তান্তর করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে উপকারভোগি বাছাই করে ইতোমধ্যে এক হাজার ৩৫৪টি একক গৃহ উপকারভোগিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ১৮২টি একক গৃহ নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামি ৩০ জুনের মধ্যে একক গৃহ হস্তান্তরের জন্য তৈরী থাকবে।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশের কোন মানুষ ভূমিহীন, গৃহহীন, আশ্রয়হীন থাকবেনা। মুজিববর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ দীপ্ত ঘোষণা বাস্তবায়নে সারা দেশে ভূমিহীন, গৃহহীনদের একক গৃহ নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে পঞ্চগড়ে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে গৃহ নির্মাণ শেষ হয়েছে এবং শতভাগ বাসিন্দারা ঘরে উঠেছেন। তৃতীয় পর্যারে গৃহ নির্মাণ কাজ শেষে দিকে। আগামী ৪ জুলাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পঞ্চগড় জেলাকে শতভাগ গৃহায়ন ( ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত) জেলা হিসেবে ঘোষণা করবেন।