মিজানুর রহমান,হরিপুর প্রতিনিধিঃ ক্ষণে ক্ষণে উলুধ্বনি, শঙ্খ, কাঁসর আর ঢাকের বাদ্যির মধ্যে শুরু হয়েছে ৷ হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রাণের উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার। আজ শনিবার (১ অক্টোবর) মহাষষ্ঠী।
আগামীকাল রোববার মহাসপ্তমী। সপ্তমী তিথীতে নবপত্রিকা স্নান ও সিদ্ধিদাতা গণেশের পাশে কলাবউ স্থাপন করা হবে। এইদিনেই প্রাণ সঞ্চার করা হবে দেবীর মৃন্ময়ীতে। সোমবার মহা অষ্টমী তিথিতে সনাতনী নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর-বৃদ্ধ সকলে মিলে দেবীকে পুষ্পাঞ্জলি দেবে। এইদিনই হবে সন্ধীপূজা। মাতৃরূপে কুমারী কন্যাকে জীবন্ত প্রতিমা কল্পনা করে জগজ্জননীর উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করে হবে ‘কুমারী পূজা’। শাস্ত্রমতে, এদিন পূজিত কুমারী কন্যার নামকরণ করা হয় দেবীর ৬ষ্ঠ রূপ ‘উমা’।
মহাসপ্তমীর প্রভাতে ঢাক-ঢোলক-কাঁসর বাজিয়ে কলাবউ স্নান ও আদরিণী উমার সপরিবারে তিথি বিহিতপূজা। মহাসপ্তমীতে ষোড়শ উপচারে অর্থাত্ ১৬টি উপাদানে দেবীর পূজা হবে। সকালে ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার চক্ষুদান করা হবে। দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে পূজা করবেন ভক্তরা।
সপ্তমী পূজা উপলক্ষে সন্ধ্যায় বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ভক্তিমূলক সংগীত, রামায়ণ পালা, আরতিসহ নানা অনুষ্ঠান হবে। আকাশে-বাতাসে এখন শারদ উত্সবের বিন্দাস শিহরন। শিল্পী তার তুলির নিপুণ আঁচড়ে বর্ণাঢ্য বিভায় উদ্ভাসিত করে তুলেছে মহিষমর্দিনীকে। কুমারটুলী থেকে প্রতিমার অধিষ্ঠান হয়েছে মণ্ডপে। বোধনে খুলে গেছে তার আয়ত চোখের পলক। অসুর বধে চক্র, গদা, তির, ধনুক, খড়্গ-কৃপাণ-ত্রিশূল হাতে মাতৃরূপেণ দেবী হেসে উঠেছেন। ধূপের ধোঁয়ায় আজ সায়ংকালে ঢাক-ঢোলক-কাঁসর মন্দিরার চারদিক কাঁপানো নিনাদ আর পুরোহিতদের জলদকণ্ঠে :‘যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা, নমস্তৈস্য নমস্তৈস্য নমস্তৈস্য নমঃ নমঃ’ মন্ত্রোচ্চারণের ভেতর দূর কৈলাস ছেড়ে দুর্গা পিতৃগৃহে আসবেন গজে। বিশুদ্ধ হিন্দু পঞ্জিকামতে—ফল-শস্যপূর্ণা হবে বসুন্ধরা।
‘সুদর্শন’ পঞ্জিকামতে, বিজয়া দশমীতে এয়োস্ত্রীদের দেবীবরণ ও সিঁদুর খেলার পর ৫ অক্টোবর বুধবার বিজয়া দশমীতে দেবী বিদায় নেবেন নৌকায়। হিন্দু শাস্ত্র মতে—দেবীর নৌকায় গমনের মধ্য দিয়ে ফল—অতিবর্ষণ-বন্যা। দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার হরিপুর কেন্দ্রীয় নাট মন্দির,কালচা কালিতলা দূর্গাপূজা মণ্ডব ,দক্ষিণ দেবরাজ দুর্গাপূজা মন্ডব,উওর দেবরাজ দূর্গাপুজা মন্ডব,জামুন কুমারপাড়া দূর্গাপুজা মন্ডব মন্দিরের মোড় থেকে মন্দির প্রাঙ্গণের দিকে এগিয়ে যেতে চোখে পড়ছে লাল-নীল আলোর চোখ ধাঁধানো খেলা। মন্দিরের প্রবেশ তোরণ থেকে মন্দির জুড়েই বর্ণিল আলোকের রূপবিন্যাস। উপজেলার প্রতিটি মন্দির আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে।
হরিপুর উপজেলা পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি মধুসুদন দেবনাথ বলেন, আমাদের উপজেলায় ২০ টি মন্ডবে পুজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের নিরাপত্তার জন্য সব সময় মনিটরিং করছেন এবং আমার সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন৷