সোমবার , ৩ অক্টোবর ২০২২ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বীরগঞ্জে এই প্রথম কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত

প্রতিবেদক
ঠাকুরাগাঁও সংবাদ
অক্টোবর ৩, ২০২২ ৫:৪১ অপরাহ্ণ

বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ব্যাপক উৎসাহ- উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে এই প্রথম বারের মতো কুমারীপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৩ অক্টোবর -২০২২) বেলা ১১টায় পৌরসভার ৪নং কুমারপাড়া সর্বজনীন দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির আয়োজনে মহাষ্টমী তিথিতে কুমারীপূজা অনুষ্ঠিত হয়। কুমারী পূজায় অত্র এলাকার দুর্ল্লভ চট্টপাধ্যায় এর কুমারী কন্যা কনা চট্টপাধ্যায় কে সুন্দর করে সাজিয়ে দুর্গা মা প্রতিমার সামনে বসে পুজোর আয়োজন করা হয়। দুর্গা মা-ই কি, জয়’ ধ্বনিতে পূজা শুরু করেন পুজারী নির্মল চক্রবর্তী ।‘তন্ত্রধারক’‘কুমারী দেবীর’ চরণে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে প্রাণিকূলের কল্যাণ ও মঙ্গল কামনা করেন।
শুরুতেই গঙ্গাজল ছিটিয়ে ‘কুমারী দেবী’কে পরিপূর্ণ শুদ্ধ করে তোলা হয়। এরপর তার পা ধুয়ে নিবেদন করা হয় অর্ঘ্য। কুমারী পূজার ১৬টি উপকরণ দিয়ে শুরু হয় পূজার্চনা। এরপর অগ্নি, জল, বস্ত্র, পুষ্প ও বাতাস্ত এই পাঁচ উপকরণে দেওয়া হয় ‘কুমারী মায়ের’ পূজা।
অর্ঘ্য নিবেদনের পর দেবীর গলায় পরানো হয় পুষ্পমাল্য। পূজা শেষে প্রধান পূজারি আরতি দেন এবং তাকে প্রণাম করেন। এতে শত শত সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ সহ সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতি ঘটে। ধূপের সুগন্ধি ধোঁয়ায় মণ্ডপ আচ্ছন্ন। ঢাকি টানা ঢাক বাজিয়ে চলেছেন। কাঁসা বাজাচ্ছেন একজন। ভক্তরা সারিবদ্ধভাবে পূজামণ্ডপে প্রবেশ শেষে দেবী দুর্গাকে প্রণাম করছেন। মণ্ডপের বেদিতে বসে দুজন পুরোহিত তাঁদের মধ্যে চরণামৃত বিতরণ করেছেন। শারদীয় দুর্গাপূজার তৃতীয় দিনে মহাষ্টমী তিথিতে গতকাল সোমবার বীরগঞ্জ সাধুর বাজার মন্দির প্রাঙ্গণে পূজামণ্ডপের চিত্র ছিল এটি। শুধু সাধুর বাজার মণ্ডপ নয়,উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে দুর্গাপূজা মণ্ডপে শাঁখের ধ্বনি,ধূপের সুগন্ধি, ঢাক,করতাল-কাঁসার বাদ্যের তালে আরতির নৃত্য এর মাধ্যমে অষ্টমী উদযাপন হয়েছে। বীরগঞ্জ পৌরসভার কেন্দ্রীয় পূজা মণ্ডপের পুরোহিত লক্ষ্মণ চক্রবর্তী বলেন,সকালে নবপত্রিকাকে স্নানাদি করিয়ে মণ্ডপে প্রবেশ করানো হয়েছে। দর্পণ স্নানের মাধ্যমে দেবী দুর্গা মাকে স্নান করানো হয়েছে। এরপর ঘট স্থাপন করা হয়। এ সময় দেবীকে চক্ষুদান ও প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। সন্ধ্যায় সন্ধ্যা পূজা ও সন্ধ্যা আরতির মাধ্যমে সপ্তমী তিথি সম্পন্ন হয়। দুর্গাপূজার অন্তিম দিন মহানবমী। বুধবার হবে বিসর্জন পর্ব।
কুমারপাড়া সর্বজনীন দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বিপিন চন্দ্র রায় বলেন,
আমাদের এ বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এই বোধ সদা জাগ্রত বলেই আমরা সবাই মিলেমিশে উৎসবের মাত্রাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পেরেছি। এটা আমাদের জন্য গৌরব ও অহংকারের। দুর্গাপূজায় ফুটে ওঠে জ্ঞান, ভক্তি,কর্ম ও যোগের এক সমন্বিত রূপ-মাধুর্য। বহু সাধকের সাধনায় বিকশিত হয়েছে দেবীর সমন্বিত রূপ। দুর্গাপূজায় রয়েছে সেই মহাশক্তির আরাধনা। মহাশক্তিরূপিণী দুর্গা। নৈসর্গিক অনুপম সৌন্দর্য বিকশিত হয় শারদীয় দুর্গোৎসবে। শরৎকালে এ অনুষ্ঠান হয় বলে একে শারদোৎসবও বলা হয়। শারদোৎসব বাঙালির প্রাণের উৎসব। এ উৎসবে আমরা মেতে উঠি মহাশক্তির প্রেরণায় প্রেম বিনিময়ের লক্ষ্যে। তাই দুর্গোৎসব বাংলাদেশের একটি মহাপ্রীতিবন্ধনের উৎসব।

সর্বশেষ - ঠাকুরগাঁও

আপনার জন্য নির্বাচিত