বিরল প্রতিনিধি \দিনাজপুরের বিরল পৌরসভা ও রাজারামপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পৃথক দুটি ভোটকেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণা নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাঙচুর ও ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টাসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুটি মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ও শুক্রবার সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন। মামলা দুটিতে পাঁচ শতাধিক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
বিরল পৌরসভার ব্রহ্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মামলা করেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী আবদুল লতিফ। এ মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে কানাইবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে শুক্রবার সকালে মামলা করেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের সহকারী ইন্সট্রাক্টর সালেহীন আহমেদ। এ মামলায় অজ্ঞাতনামা ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয় বিরল পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডে। ওই ওয়ার্ডে কমিশনার (পুরুষ) পদে প্রার্থী ছিলেন দু’জন। ভোট গণনা শেষে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হাতে লেখা ফলাফল বিদ্যালয় ভবনের দেয়ালে টাঙিয়ে দেন। ভোটে উটপাখি প্রতীকে আরিফুর রহমান পান ৫৩৩ ভোট এবং ডালিম প্রতীকে মামুনুর রশিদ পেয়েছেন ৪৪৫ ভোট। এ সময় পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকেরা ইভিএম মেশিন থেকে পাওয়া কপি দেখতে চান এবং ভোটের সরঞ্জামাদির গাড়ি আটকে দেন। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ওই কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান। উত্তেজিত পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকেরা তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। এতে তাঁর গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ কয়েকজন আহত হন।
অন্যদিকে রাজারামপুর ইউনিয়নের কানাইবাড়ি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শেষে ফলাফলে একজন সদস্য প্রার্থী অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সালেহীন আহমেদ বলেন, ওয়ার্ডে তিনজন মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে রিন্টু হোসেন পেয়েছেন ৪২৫ ভোট, আমিনুল ইসলাম ৩৫২ এবং মনিরুল ইসলাম পেয়েছেন ২৪২ ভোট। ফলাফল ঘোষণার পর পরাজিত দুই প্রার্থীর সমর্থকেরা বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেন এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালান। এসময় কয়েকজন আনসার ও পুলিশ সদস্যসহ সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে উত্তেজিত সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করেন।
বিরল থানার ওসি রেজাউল হাসান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভোটকেন্দ্রে সরকারি কাজে বাধা, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রাণনাশের চেষ্টা, ভোটের সরঞ্জামাদি ছিনতাই চেষ্টার অভিযোগে দুটি মামলা হয়েছে। মামলার বাদী সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের দুই প্রিসাইডিং কর্মকর্তা। তদন্ত সাপেক্ষে পুলিশ দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
বিরল পৌরসভায় এবার মেয়র পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সবুজার সিদ্দিক সাগর নির্বাচিত হওয়ায় এ পদে ভোট গ্রহণ হয়নি। ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪ জন ও ৩টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। পৌরসভার ভোটার ছিলেন ৯ হাজার ৯৭৪ জন। অন্যদিকে রাজারামপুর ইউনিয়নে দ্বিতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মুকুল চন্দ্র রায়।