তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি :
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় আবারও নেমে এসেছে ৬ ডিগ্রির তাপমাত্রা। বুধবার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। সর্বনি¤œ এ তাপমাত্রায় মাঝারি শৈতপ্রবাহের দাপটে কাহিল হয়ে পড়েছে উত্তরের জনপদের আপামর মানুষ। দূর্ভোগ নেমে এসেছে নি¤œ আয়ের মানুষদের।
স্থানীয়রা জানান, এক সপ্তাহ ধরেই প্রচন্ড ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। তাপমাত্রা অনেক নিচে নেমে এসেছে। সকাল থেকে ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে কাহিল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সন্ধ্যার পর থেকে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় শীত নেমে আসে। মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত শীত অনুভূত হয়। দিনে রোদ থাকলেও তাপ নেই। বিকেল গড়ালেই ঠান্ডা লাগতে শুরু করে।
এতে করে হাড়কাঁপানো শীত পড়ায় বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন শ্রেণির খেটে খাওয়া মানুষ। ভোর ৬টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কনকনে শীতের কারণে কাজে যেতে পারছেন না অনেকেই। তবে পেটের তাগিদে কাউকে নদীতে পাথর তুলতে, কাউকে চা-বাগানে আবার কাউকে দিনমজুরের কাজ করতে যেতে দেখা গেছে।
চা-শ্রমিক বাদল, বাবু ও হায়াত জানান, কয়েকদিন ধরে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। সকালে চা-বাগানের পাতা তুলতে গিয়ে হাত-পাতা অবশ হয়ে আসে। তারপরও কাজ করতে হচ্ছে।
পাথর শ্রমিক আছিয়া, রমেছা খাতুন ও তাসলিমা নামের কয়েকজন নারী শ্রমজীবি নারী জানান, আমরা আজানের পর পরই ঘুম থেকে উঠি। কদিন ধরে খুব ঠান্ডা। ঘরের মেঝে, আসবাবপত্র সব বরফের মতো লাগে এবং হাতপা অবশ হয়ে আসে। তারপরও কাজ শেষ করে পেটের দায়ে পাথরের কাজে যেতে হচ্ছে।
এদিকে দিন-রাতে তাপমাত্রা দুই রকম থাকায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগ। জ্বর, সর্দি-কাঁশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু।
চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে রোগীর চাপ বেড়েছে। এমনিতে শীত মৌসুমে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় বাতাসে জীবাণুর পরিমাণ বেড়ে যায়। শীতজনিত রোগ হিসেবে সর্দি-কাঁশি, শ্বাসকষ্ট বেশি হয়ে থাকে। আর শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। তাই এ সময়টাতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে পারলে কিছুটা হলেও সুরক্ষা মিলবে।
প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, আজ দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভোর ৬টায় একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি তাপমাত্রা ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। তার আগে ১০ জানুয়ারিতে রেকর্ড হয়েছিল ৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের দাপটে কাহিল হয়ে পড়েছে উত্তরের এ জনপদ। ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসের কারণে ঠান্ডা অনুভব হচ্ছে। #