দিনাজপুরে আজ বৃহস্পতিবার বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী তাবলীগ জামাতের জেলা ইজতেমা শুরু হচ্ছে। আগামী শনিবার জোহরের নামাজের পূর্বে আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে জেলা ইজতেমা শেষ হবে।
দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ ময়দানে এই ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের জন্য প্যান্ডেল তৈরীসহ যাতীয় প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।
কয়েকজন মুসল্লি জানান, তাবলীগ জামাতের সাথীরা স্বেচ্ছাশ্রমে ইজতেমার প্যান্ডেল তৈরীসহ অন্যান্য কাজ করছেন। দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলা ছাড়াও ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, রংপুর, গাইবান্ধাসহ অন্যান্য জেলা-উপজেলা হতে আগত তাবলীগ জামাতের সাথীদের নিয়ে এই ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। শুক্রবার ইজতেমা প্যান্ডেলেই জুম্মার নামাজ আদায় করা হবে। এটি জেলার সর্ববৃহৎ জুম্মার নামাজের জামাত হবে বলে জানান তাবলীগ জামাতের কয়েকজন মুরব্বি। তৈরী প্যান্ডেলে ২৫/৩০ হাজার মুসল্লি অবস্থান করতে পারবেন বলে জানান তারা।
এদিকে ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের জন্য ওজু-গোসলের পানি সরবরাহে ২০টি টিউবওয়েল, একটি পাম্প, ৩টি মটর স্থাপন করা হয়েছে। আলোর জন্য বৈদ্যুতিক জেনারেটর বসানো ছাড়াও নিরাপদ স্যানিটেশনের জন্য দুইশতাধিক টয়লেট তৈরা করা হচ্ছে। বিদেশী মেহনান ও তাবলীগ জামাতের বৃদ্ধ সাথীদের জন্য মাঠের দক্ষিণ পাশে খাস কামরা (বিশেষ কক্ষ) তৈরী করা হয়েছে। এই খাস কামরায় আগত বিদেশী মেহমান ও তাবলীগ জামাতের বৃদ্ধ সাথীরা থাকবেন বলে তাবলীগ জামাতের জিম্মাদাররা (দায়িত্বশীল) জানান। ইজতেমায় প্যান্ডেল তৈরী, টয়লেট নির্মাণ, নিরাপদ পানি সরবরাহের জন্য টিউবওয়েল স্থাপন, বিদ্যুৎ সংযোগসহ অন্যান্য বিভাগের জন্য আলাদা আলাদা জিম্মাদার (দায়িত্বশীল) নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
এদিকে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ইজমেতা মাঠে অবস্থানের জন্য আগত মুসল্লিদের জন্য চাটাইসহ অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে ইজতেমা মাঠের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে পাশে দোকানীরা তাদের দোকান নিয়ে বসবেন। টুপি,তসবিহ, জায়নামাজ, মেছওয়াকসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রির জন্য দোকানীরা তাদের দোকান তৈরী করেছেন।
বাংলাদেশের আমীরে ফায়সাল ঢাকার কাকরাইলের জিম্মাদার (দায়িত্বশীল) মাওলানা মোশাররফ হোসাইন, মুফতি মাওলানা নুরুল ইসলামসহ আরো কয়েকজন জিম্মাদার(দায়িত্বশীল) দিনাজপুরের ইজমেতায় আসার কথা রয়েছে। এই মেহমানগন ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সামনে বয়ান পেশ করবেন।ইজতেমায় মালয়েশিয়া হতে আগত একটি জামাতও অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে।
দিনাজপুর তাবলীগ জামাতের আমীরে ফায়সাল ও তিনদিন ব্যাপী ইজতেমার জিম্মাদার (দায়িত্বশীল) হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) কৃষি রসায়ন বিভাগের প্রফেসর ড.মোঃ আব্দুল হাকিম জানান, বৃহস্পতিবার বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে আগামী শনিবার বেলা ১২টার মধ্যে আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে ৩ দিনব্যাপী এই ইজতেমা শেষ হবে।
দিনাজপুরের প্রবীন আরেক জিম্মাদার আলহাজ্ব মোঃ মেহেরুল ইসলাম জানান, মানুষকে দ্বীনের পথে উদ্বুদ্ধ করতে, আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগীর দিকে রুজু করতে, কিভাবে মানুষকে আখেরাতমূখী করা যায়, আখেরাতের জিন্দেগী বা মৃত্যু পরবর্তি জীবন কেমন হবে, মানুষের মাঝে হক তথা সঠিক পথ কবুল করার যোগ্যতা তৈরী এসব বিষয়ে এই ইজতেমায় বয়ান (আলোচনা) করবেন তাবলীগ জামাতের মুরব্বিরা।
দিনাজপুর তাবলীগ জামাতের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আলহাজ¦ মোঃ মেহেরুল ইসলাম ও হাবিপ্রবির শিক্ষক কৃষি রসায়ন বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুল হাকিম আমীরে ফায়সাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও ১০জন শুরা সদস্য রয়েছেন।
উল্লেখ্য, এরআগে ২০২২সালের ৩১ মার্চ হতে ২ এপ্রিল পর্যন্ত দ্বিতীয়বার ও ২০১৭ সালের ৩১ নভেম্বর থেকে ২ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রথমবার দিনাজপুরে তাবলীগ জামাতের জেলা ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।