আকষ্মিক মাটি দেবে কয়েকটি গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় দিনাজপুরের গ্রামবাসীর মধ্যে তাৎক্ষনিক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এ ঘটনার পর শনিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি জানতে পেরে শনিবার ও রোববার সকালে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাথী দাস, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রতিনিধি, হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তাঁরা এ ব্যাপারে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। গর্তগুলো দেখতে মানুষও ভিড় করে।
দিনাজপুর সদর উপজেলার শশরা ইউপির ৮নম্বর ওয়ার্ডের উমরপাইল বালুপাড়া গ্রামে কয়েকটি গর্ত তৈরি হয়।
শশরা ইউপির উমরপাইল বালুপাড়া গ্রামের মাহাবুবুর রহমান, আবুল শাহ, আনিসুর রহমান, রবিউল ইসলাম, ফরিদুল ইসলাম, হানিফ শাহা ও আব্দুর রাজ্জাকের জমিতে এসব গর্ত তৈরি হয় বলে স্থানীয়রা জানায়।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সকালে ওই জমিতে বৃষ্টিতে পানি জমে। দুপুরে হঠাৎ বিকট শব্দে গভীর গর্ত তৈরি হয়। এরপর পাশের জমিতেও গর্ত হওয়ার খবর আসতে থাকে। গ্রাম পুলিশ মো. কাশেম আলী বিষয়টি শশরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোকসেদ আলী রানাকে জানান। পরে রাতে জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি ও ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কী কারণে গর্ত তৈরি হয়েছে সেটি কেউ জানাতে পারেননি। তবে রাতে গর্তগুলোর কাছে কেউ না যান সেজন্য গ্রাম পুলিশ মো. কাশেম আলীকে পাহারার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার বিকেল থেকে শনিবার পর্যন্ত শত শত মানুষ হঠাৎ সৃষ্ট গর্ত দেখার জন্য ভিড় করেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোকসেদ আলী রানা জানান, বিভিন্ন মাপের গর্তগুলো দেখতে উৎসুক মানুষ ভিড় জমান। বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে দিনাজপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাথী দাস জানান, বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। সড়কের পাশেও কয়েকটি গর্ত তৈরি হয়েছে। বিষয়টি সড়ক বিভাগকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সব দপ্তরকে জানানো হয়েছে। তবে দেখে মনে হয়েছে, আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনো ঘটনা নয়।
দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, নিজেই ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এ রকম হওয়ার কারণ হচ্ছে,আমরা দীর্ঘসময় ধরে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করছি বেশি পরিমাণে। ফলে ভূগর্ভ থেকে উত্তোলিত পানির জায়গাটা ফাঁকা হয়ে যায়। কিন্তু সেই পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে না। ওই জায়গা ফাঁকাই থেকে যাচ্ছে। লম্বা সময় খরা গেছে। তারপর কয়েক দিন টানা বৃষ্টি হয়েছে। উপরিভাগের পানি যখন নিচে থেকে টান পড়েছে,তখন মাটি ফেটে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।তবে আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে, যে কয়েকটি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, সব আবাদি জমিতে কিন্তু ঘটনাটা বাসাবাড়িতেও তো ঘটতে পারে।