চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের অন্যতম ঈদুল আযহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদ। এই ঈদকে কেন্দ্র করে মুসলিমরা ছাগল, গরু, দুম্বা, ভেড়া প্রভৃতি পশু দিয়ে কোরবানি দিয়ে থাকেন। এই কোরবানির পশু ছাগলের অবিক্রিত চামড়ার দূর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। দুষিত হচ্ছে বায়ু ও পরিবেশ। এই দূষণরোধে নেই প্রশাসনের কোন নজরদারী।
গত বৃহস্পতিবার পালিত হয় পবিত্র ঈদুল আযহা। দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে তাদের সামর্থ অনুযায়ী পশু কোরবানি করেন। চিরিরবন্দর ও খানসামা উপজেলার পশুর চামড়া বিক্রয়ের প্রাণকেন্দ্র রানীরবন্দর। এই রানীরবন্দরে দুপুরের পর থেকেই বিভিন্ন মসজিদ কমিটির সদস্য ও ফড়েয়ারা গরু ও ছাগলের চামড়া বিক্রি করতে নিয়ে আসেন। গভীর রাত পর্যন্ত চলে চামড়া বেচাকেনা। রানীরবন্দরের চামড়া বাজারে অন্তত ১০ হাজার চামড়া আমদানী হয়।
এবারের ঈদে বাজার মূল্য ভালো না থাকার কারণে ছাগলের চামড়া তেমন একটা বিক্রি হয়নি। কাঙ্খিত দাম না পাওয়ার কারণে চামড়া নিয়ে আসা অনেক বিক্রেতাই মনের ক্ষোভে চামড়া ফেলে দিয়ে চলে যায়।
চামড়া ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান, জিকরুল হক, বদিয়ার রহমান, মমতাজ আলীসহ অনেকেই জানান, এবারে ছাগলের চামড়ার মূল্য কম। শ্রমিকদের মজুরি ও কাঁচামাল লবণের দামও বেশি। এছাড়াও মহাজনদের নিকট চামড়া বিক্রির টাকা তুলতে হয়রানি হতে হয়। তাই সবকিছু মিলে এবার ছাগলের চামড়া ক্রয়ের তেমন আগ্রহ নেই।
ব্যবসায়ীরা আরো জানান, ছাগলের চামড়া এবছর কেনাটাই অনর্থক হবে। ফলে ছাগলের চামড়া অবিক্রিতই থেকে যায়। বিক্রি না হওয়া চামড়া বিভিন্ন দোকানের সামনে ও জনসমাগম স্থলে স্তুপ হয়ে পড়ে থাকে। মসজিদ কমিটির অনেক সদস্যই ছাগলের চামড়া বিক্রি করতে না পারায় পড়েন বিপাকে। কোরবানির বর্জ্যে পরিবেশ দূষণরোধে স্থানীয়ভাবে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কোন প্রচার-প্রচারণা না থাকায় অবিক্রিত চামড়া যে যার মতো করে চিরিরবন্দর উপজেলার ইছামতি নদীসহ বিভিন্ন রাস্তার ধারে, পুকুর-জলাশয়ে ফেলে দিয়ে চলে দিয়ে চলে যান। রানীরবন্দর-খানসামা সড়কের রানীরবন্দরহাট থেকে চাঁন্দেরদহ, ইছামতি ডিগ্রি কলেজ থেকে তারকসাহার হাট পর্যন্ত ইছামতি নদীর ধার, চিরিরবন্দর সড়ক, আন্ধারমুহা, ঘুঘুরাতলী, বিন্যাকুড়ি যাওয়ার রাস্তা দিয়ে ফেলে দেয়া পঁচা চামড়ার দূর্গন্ধে পথচারিরা চলাচল করতে পারছেন না।
নশরতপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল ওহাবসহ কয়েকজন জানান, কেউ জানে না যে, এবার ছাগলের চামড়া বিক্রি হবে না। অবিক্রিত থেকে যাবে। কে বা কারা এসব অবিক্রিত চামড়া মাটিতে পুঁতে না রেখে রাস্তার ধারে ফেলে দিয়ে চলে গেছে। এসব পড়ে থাকা চামড়া থেকে দূর্গন্ধ ছড়ালে সেগুলো মাটিতে পুঁতে রেখে বায়ু দূষণরোধসহ পরিবেশ রক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।