মোঃ মজিবর রহমান শেখ,,
ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ফেরসাডাঙ্গী বাজারে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী শালি ও দুলাভাইর কবি গান। উত্তরবঙ্গের মানবকল্যাণ কবি আর সংঘর সভাপতি মালতি রানী সরকার ও ক্ষিতীশ রায় সরকার এ কবিগানে অংশ নেন। মোহাম্মদপুর সহ আশপাশের জেলা থেকে অসংখ্য শ্রোতা আসেন এ কবি গান শুনতে। ২১শে সেপ্টেম্বর বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ফেরসাডাঙ্গি পশুর হাট উপলক্ষ্যে ফেরসাডাঙ্গি বাজারে উত্তরবঙ্গের মানবকল্যাণ কবি আর সংঘ এ কবি গানের আয়োজন করে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ১১নং– মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ফেরসাডাঙ্গি পশুর হাট কমিটি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহাগ হোসেন। মাঠের মাঝখানে বানানো মঞ্চে দুই কবিয়ালের বাক-বিতন্ডা আর তর্ক-বিতর্কের যুদ্ধ চলে গভীর রাত পর্যন্ত। মন্ত্র-মুগ্ধের মতো দর্শকদের নির্ঘুম রাত কাটে।
এক সময়ে কবি ক্ষিতীশ রায় সরকারের গান মন্ত্র-মুগ্ধের মতো শুনতেন এ অঞ্চলের শ্রোতারা।এ এলাকার মানুষের বিনোদনের একটি বড় মাধ্যম ছিল কবি, জারি, সারি গান। তার মধ্যে কবি গান ছিল অন্যতম।কালের বিবর্তনে এবং আধুনিকতার বেড়াজালে পড়ে এসব গানের শ্রোতা একদিকে যেমন কমে গেছে, তেমনি গায়কও কমে গেছে।
কবি গানে অংশ নেন ক্ষিতীশ রায় সরকার ও মালতি রানী সরকার। কবি গানে অংশ নিতে পেরে তারা খুশি। তারা জানান, প্রয়োজনীয় পৃস্ঠপোষকতা আর আধুনিককতার বেড়াজালে পড়ে কবি গান আমাদের দেশ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। আমরা চেষ্টা করছি এ গানকে টিকিয়ে রাখতে। তারা জানান, আমাদের গানের পুরোনো ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। কবি গানের এ দৃশ্য এখন শুধুই কাল্পনিক। কিন্তু, শিকড় সন্ধানী কিছু মানুষ এখনও এ কবি গানকে খুঁজে বেড়ান মনের অজান্তে। রাতে আলো-আধারে কবিয়ালদের তাত্ত্বিক যুক্তি-তর্ক শুনতে জড়ো হন হাজারো নারী-পুরুষ। প্রখ্যাত এই দুই কবিয়ালের কবিগান শুনতে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নসহ আশপাশের জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক শ্রোতা উপস্থিত হন। অনেকেই আবার প্রথমবারের মত কবিগান শুনতে হাজির হন।তারা আগামীতেও কবি গান আয়োজনের আশা করেন। মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন ফেরসাডাঙ্গি হাট কমিটির সভাপতি, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহাগ হোসেন জানান, প্রাচীন এ ঐতিহ্য ও সম্প্রীতির বন্ধন ধরে রাখতে আগামীতে কবি গানের আয়োজন করা হবে। কবি গানকে টিকিয়ে রাখতে সংশ্লিষ্টরা এগিয়ে আসবেন এমনটা প্রত্যাশা কবিগানের শ্রোতারা।