তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি :
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় করতোয়া লিমিটেডের ৩০ মেগাওয়াট সোলার প্ল্যান্টের বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী। মঙ্গলবার দুপুরে তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের করতোয়া সোলার লিমিটেড সংলগ্ন ময়নাগুরি গ্রামে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ মানববন্ধনে অংশ নেন অত্র ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের সহ¯্রাধিক নারী-পুরুষ।
স্থানীয়দের দাবি, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ করছে করতোয়া সোলার লিমিটেড (কেএসএল)। বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) সঙ্গে কেএসএলের চুক্তির তিন বছর পার হতে চললেও এখনো দেখেনি প্রকল্পটি আলোর মুখ। বর্তমান বিদ্যুত সংকট উত্তরণে প্রকল্পটির দ্রæত আলোর মুখ দেখতে চান স্থানীয়রা।
মানববন্ধনে তাদের দাবি, বর্তমানে ভয়াবহ বিদ্যুতের সমস্যা দেখা দিয়েছে। চলমান বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণে করতোয়া সোলার লিমিটেডের প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তাছাড়া ঘন ঘন লোডশেডিং থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রকল্পটি দ্রæত বাস্তবায়ন প্রয়োজন। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে অত্র উপজেলার বিদ্যুতের ঘাটতি যেমন নিরসন ঘটবে তেমনি এ অঞ্চলে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
মানববন্ধনে স্থানীয়রা বক্তব্যে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কিছু জমির দালালের কারণে। এ অঞ্চলে করতোয়া সোলার প্লান্টের জন্য জমি কেনা হলে কিছু দালালদের কারণে তা আলোর মুখ দেখছে না। তাদের কারণে জমি ক্রয় সংক্রান্ত জটিলতায় সৃষ্টি হয়েছে। তারা চায় না এখানে সোলার প্ল্যান্ট হোক। তাই এসব কুচক্রীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ দ্রæত পরিবেশ বান্ধব ৩০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবি তাদের।
তেঁতুলিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তারুজ্জামান মুকু মানববন্ধনে বক্তব্যে বলেন, আমাদের জেলাবাসীদের বিদ্যুতের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়। যদি এই সোলার প্ল্যান্টের ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন হলে আমার জেলার চাহিদা পূরণে বাকি জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। এতে করে আমাদের আর ভোগান্তি পোহাতে হবে না। এই সোলার প্লান কবে চালু হবে তার জন্য দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছি। কিন্তু আলোর মুখ দেখছিনা। জমি সংক্রান্ত যেসব জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, তা নিরসনে প্রকৃত ভূমি মালিকদের সঙ্গে বসে করতোয়া সোলার লিমিটেডকে একটি সুরাহার আহ্বান জানান তিনি।
করতোয়া সোলার লিমিটেডের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ সুজা মিয়া বলেন, আমরা এ প্রকল্পের জন্য আমরা ১৩০ একর নিষ্কন্টক জমি সাব কবলামূলে ক্রয় করেছি। কিন্তু গুটি কয়েক ভূমি দালাল এ প্রকল্প বাস্তবায়নে নানান প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে। আমরা ক্রয়কৃত জমির মাত্র ১৮ একর জমিতে অবস্থান করছি। বাকি জমিগুলোতে গেলে তারা এ ধরণের ষড়যন্ত্র করে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নস্যাৎ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রকল্পটি যেহেতু জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট রয়েছে, তাই জমির কোন ওয়ারিশান বা মালিকানা বাদ পড়ে থাকলে আমরা নিয়ম অনুযায়ী কিনে নিব।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা। সেই লক্ষেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছি, চলতি সালেই এ প্রকল্প থেকে পরিবেশ বান্ধব বিদ্যুত উৎপন্ন শুরু করতে পারবো বলে আশাবাদী।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে করতোয়া সোলার লিমিটেড (কেএসএল) এর সাথে ৩০ মেগাওয়াট সোলার প্ল্যান্ট স্থাপন ও পাওয়ার ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। এই চুক্তির ফলে কেএসএলের উৎপাদিত বিদ্যুৎ ক্রয় করবে বিপিডিবি। করতোয়া সোলার লিমিটেড ১৩০ একর জমির উপর এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। #