বুধবার , ২ আগস্ট ২০২৩ | ২৮শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঠাকুরগাঁওয়ে বালিয়াডাঙ্গীতে স্নাতকোত্তর পাসের স্বপ্ন ৫০ বছরে পূরণ করলেন আব্বাস আলী

প্রতিবেদক
ঠাকুরাগাঁও সংবাদ
আগস্ট ২, ২০২৩ ৯:৫৬ অপরাহ্ণ

মোঃ মজিবর রহমান শেখ,
স্নাতকোত্তর পাশে আব্বাস আলীর চোখে মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি। অর্থাভাবে স্নাতকোত্তর করতে পারেননি আব্বাস আলী। স্নাতক শেষে একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। এরপর পেরিয়ে যায় দীর্ঘ ২০ বছর। স্নাতকোত্তর শেষ করতে না পারার স্বপ্ন যেন তাঁকে তাড়া করে বেড়ায়। সিদ্ধান্ত নেন আবার শুরু করবেন লেখাপড়া। ৫০ বছর বয়সে স্নাতকোত্তর শেষ করে পরিবার ও এলাকাবাসী প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। এই বয়সে তাঁর এমন উদ্যোগ অনেককেই উদ্বুদ্ধ করেছে—শিক্ষার কোনো বয়স নেই। আব্বাস আলীর বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর পাড়িয়া সরাগীন্দ বাপ দাদার বাড়ি, বর্তমান স্থায়ী বাড়ি ধনতলা ইউনিয়নের ঠুমনিয়া গ্রামে। তিনি দবিরুল ইসলামের ছেলে। লোহাগাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে ইংরেজি বিষয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন ২৪ বছর ধরে। ২০ বছর পর পুনরায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে তিন বছর মেয়াদি সার্টিফিকেট কোর্স, এক বছর মেয়াদি প্রিলিমিনারি মাস্টার্স কোর্স সম্পন্ন করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিষয়ে ২ দশমিক ৩১ সিজিপিএ পেয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। গত ২৭ জুলাই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এই ফল প্রকাশ করে।
আব্বাস আলীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯১ সালে তিনি লাহিড়ী বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৯৪ সালে দিনাজপুর আদর্শ কলেজ থেকে এইচএসসি ও ১৯৯৭ সালে রুহিয়া ডিগ্রি কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। এরপর অভাবের কারণে স্নাতকোত্তর করা হয়নি তাঁর। জীবিকার তাগিদে লোহাগাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি নিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। আব্বাস আলী বলেন, ‘শিক্ষকতা করার সময় আর্থিক সংকটের কারণে স্নাতকোত্তর কোর্স শেষ করতে না পারার দুঃখটা সব সময় মনে কষ্ট দিত। ২০১৮ সালে স্ত্রীর কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে তিন বছর মেয়াদি সার্টিফিকেট কোর্স সম্পন্ন করি। এরপর প্রিলিমিনারি মাস্টার্স কোর্স এক বছর শেষ করার পর দিনাজপুর সরকারি কলেজে ইংরেজি বিষয় নিয়ে মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি হই। সেখানে পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২ দশমিক ৩১ সিজিপিএ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি।’ এই বয়সে পড়ালেখার অভিজ্ঞতা জানিয়ে আব্বাস আলী বলেন, ‘১৯৯৭ সালের সিলেবাস ও বর্তমান সময়ে সিলেবাসে অনেক পার্থক্য। প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা পড়াশোনা করতে হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল না আসা পর্যন্ত একধরনের দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ফলাফল বের হওয়ায় অনেক খুশি।’
আব্বাস আলীর স্ত্রী নাজমা শিরিন বলেন, ‘ইচ্ছে থাকলেও অভাবের কারণে মাস্টার্স পাস করতে পারেননি। আমার কাছে প্রায়ই বিষয়টি জানাত। পরে আমি টাকা জোগাড় করে দিয়ে ভর্তি হতে সাহস দিই। ফলাফল প্রকাশের পর এখন পরিবার, প্রতিবেশী সবার মুখে তিনি প্রশংসিত হচ্ছেন।’ আব্বাস আলীর বড় ছেলে সাকিব এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। সাকিব বলে, ‘বাড়িতে পড়া ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে গত পাঁচ বছর ধরে। বাবা আমাদের আগে পড়তে বসেন। আমার আর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তবে বাবার পরিশ্রম সফল। তাঁর ফলাফলে আমরা সবাই আনন্দিত।’ লোহাগাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান বলেন, ‘আব্বাস আলী পরিশ্রমী একজন শিক্ষক। এই বয়সে তাঁর এমন অর্জন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করবে।’
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল কুমার বলেন, মানুষের ইচ্ছাশক্তি থাকলে অসম্ভবও সম্ভব করা যায়। আব্বাস আলীর সেই স্বপ্ন দেখে দিয়েছেন ।

সর্বশেষ - ঠাকুরগাঁও

আপনার জন্য নির্বাচিত

তেঁতুলিয়ার দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদ উদ্বোধন

বীরগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ কর্তৃক মেধাবী মাহবুর রহমানকে আর্থিক সহায়তা প্রদান

পীরগঞ্জে ট্রন্সফরমার চুরি করে পালানোর সময় দুই যুবক জনতার হাতে আটক

বীরগঞ্জে পল্লীশ্রী’র উদ্যোগে আদর্শ গ্রামে বার্ষিক সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত

জুলাই আন্দোলনে গু-লি-বি-দ্ধ খানসামার আনারুল: থমকে গেছে ভবিষ্যৎ

এপেক্স ক্লাবের ডিস্ট্রিক-৭ এর বোর্ড মিটিং রংপুর

খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও চিকিৎসক সংকটে স্বাস্থ্যসেবায় ভোগান্তি

বোচাগঞ্জে সিডিএর বৃক্ষরোপন কর্মসূচির উদ্বোধন

পঞ্চগড় সদর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন ভবিষ্যতের বাংলাদেশ ফ্যাসিস্টের জন্য আর কোন জায়গা দেবে না ——ব্যারিস্টার নওশাদ জমির

বীরগঞ্জে (ভিএসডিএ) এর টিউবওয়েল প্রদান