খানসামা প্রতিনিধি \ জাঁকজমকপূর্ণভাবে বিয়ে অনুষ্ঠানের কার্যাদি প্রায় শেষ পর্যায়ে। মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে বিয়ে বাড়ীতে এসেছেন আমন্ত্রিত আত্মীয়-স্বজনসহ মেহমান। কনেকেও সাজানো হয়েছে বিয়ের সাজে। বরসহ বরযাত্রীও এসে গেছে। সাজ সাজ রব। কিন্তু এই বিয়ের বাঁধ সাধে খানসামা উপজেলা প্রশাসন। বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন খানসামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ তাজ উদ্দিন। এসময় ইউএনও’র উপস্থিতি টের পেয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে বর-কনেসহ সকলেই পালিয়ে যায়। এতে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল খামারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সদ্য এসএসসি পাশ করা স্কুলছাত্রী (১৭)।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তাজউদ্দিন পরে ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক চৌধুরী ও ইউপি সদস্য বাবলুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭অনুযায়ী বাল্যবিয়ে দেয়ার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের নিকট মুচলেকা নেন এবং বাল্যবিয়ে সম্পাদনে সহযোগিতা করার জন্য বরের বড় ভাইকে তিন হাজার টাকা অর্থদন্ড করা হয়।
এ ঘটনাটি গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে খানসামা উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের নেউলা গ্রামের হাজীপাড়ায় ঘটেছে। ওই স্কুলছাত্রী হাজীপাড়ার ছয়ফুল ইসলামের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানায়, ওই ছাত্রীর সাথে একই উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নের কুমড়িয়া গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে মো. শহিদুল ইসলামের (২২) বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ে উপলক্ষে উভয় পরিবার তাঁদের আতœীয়-স্বজনদের আমন্ত্রণও জানায়। বাল্যবিয়ের সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তাজউদ্দিন নিজেই কনের বাড়িতে উপস্থিত হন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বর-কনেসহ বাড়ির সকলেই পালিয়ে যান। পরে উভয়পক্ষকে ডেকে নিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে খানসামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তাজউদ্দীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,বাল্যবিবাহ সম্পাদন করা বা সম্পাদনে সহযোগিতা করা অপরাধ। তাই বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে বিশেষ অভিযান চালিয়ে বাল্যবিয়ে বন্ধা করা হয়। ১৮বছরের আগে তারা বিয়ে দিবেন না মর্মে তাদের উভয়পক্ষ মুচলেকা দেয় এবং বাল্যবিয়ে সম্পাদনে সহযোগিতা করার জন্য বরের বড় ভাইকে তিন হাজার টাকা অর্থদন্ড করা হয়।