পঞ্চগড় প্রতিনিধি\ কয়েকদিন বিরতি দিয়ে আবারও মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। শেষ পৌষে এসে তীব্র শীতে কাঁপছে পঞ্চগড়ের মানুষ। আগের দিনের চেয়ে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে গতকাল শনিবার সকালে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। গত শুক্রবার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছিল এই আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারটি। পাঁচদিন পর শুক্রবার বিকেলে কিছুটা সূর্যের মূখ দেখা যাওয়ায় ওইদিন দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত এক সপ্তাহ ধরে ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে পড়েছে এই জনপদ। তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছে নি¤œ আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা।
গতকাল শনিবার দুপুরের পরও দেখা মেলেনি সূর্যের। মাঝে মধ্যে সূর্য উঁকি দেয়ার চেষ্টা করলেও মুহুর্তেই মেঘ এসে ঢেকে ফেলছে সূর্য মামাকে। অবশেষে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মেঘ সরিয়ে সূর্যের মূখ দেখা গেলেও উত্তরের কনকনে হিম শীতল বাতাসে উষ্ণতা উবে যায়। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই অতি ভারি কুয়াশায় ঢেকে যায় গোটা জেলা। বিশেষ করে নদী অববাহিকার সড়কগুলোতে যান চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। যা অব্যাহত ছিল গতকাল শনিবার দুপুর পর্যন্ত। দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করে যানবাহন। ঘন কুয়াশার সাথে উত্তর দিক থেকে আসা কনকনে শীতল বাতাসে বেশি কাবু হয়েছে মানুষজন। কয়েকদিনের মত গতকালও দিনভর আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে পঞ্চগড়ের শীতার্ত মানুষগুলোকে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় নেহায়েত প্রয়োজন ছাড়া মানুষজন বাড়ি থেকে বের হয়নি। তীব্র শীতে শরীরে উষ্ণতা ছড়াতে প্রয়োজন একটি কম্বল। কিন্তু নির্বাচনের ডামাডোলে এবার শীতবস্ত্র বিতরণের পরিমান অনেক কম বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে খুব কম সংখ্যক শীতবস্ত্র বিতরণ হচ্ছে এবার।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, আজ (শনিবার) ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন পঞ্চগড়। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ঘন কুয়াশার কারণে দেখা মিলছে না সূর্য। গতকাল বিকেলে সূর্য দেখা গেলেও সে রোদে ছিল না উষ্ণতা। বিকেল থেকেই আবার হিমেল বাতাস বইছে। উত্তর-পূর্ব বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে যে বায়ু প্রবাহিত হওয়ার কারণে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। সে অনুপাতে এ অঞ্চলে এখন শীতের তীব্রতা বেশি হচ্ছে।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, শীত মোকাবেলায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন উপহার হিসেবে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল ও দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত ২৮ হাজার কম্বল বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে। আরো শীতবন্ত্র চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই পাওয়া যাবে। এছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শীতবন্ত্র বিতরণ করছে।