দিনাজপুর সদর উপজেলার শেখপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও দুই সদস্যের বিরুদ্ধে ৩০ বছরের পুরাতন ৩টি আকাশ মনি গাছ কর্তনের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় কর্তন হওয়া একটি আকাশ মনি গাছ জব্দ করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বন বিভাগ।
শনিবার সন্ধ্যায় দিনাজপুর শহরের সুইহারী স‘মিল থেকে কর্তন হওয়া একটি আকাশ মনি গাছ জব্দ করেছে বন বিভাগ।
এর আগে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দিনাজপুর সদর উপজেলার শেখপুরা ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের রাস্তার পাশে ৩টি আকাশ মনি গাছ কর্তন করা হয়। গাছ কর্তনের সময় ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য পরিমল চন্দ্র রায় ও সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডের নারী সদস্য রশিদা পারভীন উপস্থিত ছিলেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, কর্তন হওয়া ৩টি গাছের মধ্যে ১টি গাছের ৮টি টুকরো শহরের সুইহারী স‘মিলে আলতাফ হোসেন নামে এক ব্যক্তি রেখে যান। পরে সদর উপজেলার গাবুড়া এলাকায় গিয়ে আলতাফ হোসেনের সাথে কথা বলা হলে তিনি নিজেকে মোয়াজ্জেম হোসেন বলে পরিচয় দেন। পাশাপাশি গাছ কর্তনের জায়গায় উপস্থিত না থাকার কথা বললেও পরে স্বীকার করেন। পরে সাংবাদিকদের ইউপি চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলামের সাথে দেখা করতে বলেন। সন্ধ্যায় সুইহারী স‘মিল থেকে ১টি গাছের ৮টি টুকরো জব্দ করে সামাজিক বন বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন।
স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, “সকালে রাস্তার পাশের ৩টি আকাশ মনি গাছ কর্তন করা হয়। এসময় সেখানে মেম্বার পরিমল চন্দ্র রায় ও রশিদা পারভীন উপস্থিত ছিলেন। তারা গাছগুলো কর্তনের পর ভ্যান যোগে নিয়ে চলে যান।”
৫নং ওয়ার্ডের সদস্য পরিমল চন্দ্র রায়ের ফোন নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া হলে তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি।
সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডের নারী সদস্য রশিদা পারভীন বলেন, “আমি একটি মিমাংসা গিয়েছিলাম। আসার সময় কর্তন করা গাছ রাস্তায় পড়ে থাকায় ইজিবাইক থেকে নেমে সেখানে কিছুক্ষণ ছিলাম। রাস্তা থেকে গাছ সরিয়ে নেয়ার পর আমি সেখান থেকে চলে আসি। আমি এই ঘটনার সাথে কোন ভাবে জড়িত নই।”
৪নং শেখপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম বলেন, গাছগুলো স্থানীয়রা রোপন করেছে। তারা ইউনিয়ন পরিষদের লিখিতভাবে গাছগুলো কর্তনের জন্য বলেছে। আমরা গাছগুলো কর্তন করেছি।
গাছগুলো কর্তনের পর কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন উত্তর দেন নি।
উত্তর গোবিন্দপুর বনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, “কর্তন করা গাছগুলো বন বিভাগের পক্ষ থেকে লাগানো হয়েছিল। গাছগুলো বন বিভাগের অনুমতি ছাড়াই কর্তন করা হয়েছে। আলতাফ হোসেন নামে এক ব্যক্তি গাছের ৮টি টুকরো ভ্যান যোগে শহরের একটি স‘মিলে নেয়া হয়েছিল। পরে সেই ৮টি টুকরো উদ্ধার করে বন বিভাগের হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
কর্তন হওয়া একটি আকাশ মনি গাছ জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল রায়হান বলেন, গাছগুলো কর্তনের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন অনুমতি নেয়া হয়নি। বন বিভাগের কাছ থেকে অনুমতি নেয়া হয়েছে কি না তা দেখা হচ্ছে। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।