পঞ্চগড় প্রতিনিধি\ পঞ্চগড়ে চাঞ্চল্যকর ছাত্রদলকর্মী জাবেদ ওমর জয়কে (১৯) ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি ফারাজ ইসলাম আল আমিন ও তার ভাই আকাশকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত শনিবার রাতে আদালতে তোলা হলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে ১৫ আগস্ট তাদের চট্টগ্রামের গোয়ালপাড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। আল আমিন ও আকাশ পঞ্চগড় পৌর এলাকার নতুনবস্তি (রাজনগর) এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে।
গত ৬ আগস্ট রাতে জেলা শহরের সিনেমা হল মার্কেট এলাকায় প্রকাশ্যে ছাত্রদলকর্মী ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী জাবেদ ওমর জয়কে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা আলোচিত মামলার প্রধান আসামি আল আমিন ও তার ভাই আকাশকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতারের কথা জানায় পুলিশ।
নিহত জয় পঞ্চগড় পৌরসভার পুরাতন ক্যাম্প এলাকার জহিরুল হকের ছেলে। পঞ্চগড় ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার কলেজিয়েট ইনস্টিটিউট থেকে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি জেলা শহরের কদমতলা এলাকায় সূচনা ফল ঘরে ম্যানেজারের কাজ করতেন। নিহত জয় পঞ্চগড় পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সদস্য ছিলেন বলে জানা গেছে। ঘটনার দিন জাবেদ ওমর জয়কে পূর্ব শত্রæতার জেরে সহকর্মীদের নিয়ে শহরের সিনেমা হল মার্কেট এলাকায় ছুরিকাঘাত করেন ফারাজ ইসলাম আল আমিন। পরে স্থানীয়রা দ্রæত জয়কে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেন। পরে অবস্থার পরিবর্তন না হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
আলোচিত এই হত্যাকাÐের ঘটনার পর ৮ আগস্ট বিকেলে নিহত জয়ের বড় ভাই আশরাফ আলী বাদি হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে অজ্ঞাত ও এজাহারভুক্ত ৩ জনকে গ্রেফতার করেন। পলাতক থাকার ঘটনার ৯ দিনের মাথায় প্রধান আসামিসহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পঞ্চগড় পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সি।
পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ঘটনার পরই অজ্ঞাত ও এজারভুক্ত ৩ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। প্রধান আসামি ও তার ভাই আত্মগোপনে থাকার পরও পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। তাদের আদালতে তোলা হয়েছে। স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দির পর বিস্তারিত আরও তথ্য জানানো যাবে। একই সাথে মামলার অপর আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত থাকার কথা জানান তিনি।