বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বীরগঞ্জে প্রশাসনের নাকের ডগায় আত্রাই নদীতে বালু উঠিয়ে বিক্রেয়ের মহোৎসব চলিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে একটি মহল দীর্ঘদিন যাবৎ এ অঞ্চলের আত্রাই নদীসহ বিভিন্ন জায়গায় থেকে বালু উত্তোলন করে ১০ চাকার ড্রাম্পট্রাক দিয়ে সরবরাহ করছে। সরজমিনে জানা গেছে, উপজেলার আত্রাই নদীতে কাশিপুর মৌজার ৩৯১, ৩৯২, ৩৯৫ দাগ হতে দক্ষিন দিকে বেশ কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত, তৎসহ অন্যান্য পয়েন্টে স্থানীয় উপজেলা ও জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং এক শ্রেনীর নামধারী বালু ব্যবসায়ী আতাত করে দিনরাত লাখ লাখ টাকার বালু নদী হতে উত্তোলন পুর্বক সরকারী রাজস্ব চুরি অব্যাহত রেখেছে।
উপজেলা প্রশাসন মাঝে মধ্যে লোক দেখানো অভিযান চালালোও প্রতিকার হচ্ছে না এলাকাবাসীর অভিযোগ।
গত অর্থ বছরের কোন এক সময় নদী খননের বালু দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড কাশিপুর থেকে শম্ভু গাও হয়ে নখাপাড়া পর্যন্ত ১২টি লট তৈরী করে ৮ টি লট নিজপাড়া ইউপির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এমএ খালেক সরকার, ২ টি নুরুজ্জামান এবং ২ টি লট সাজেদুর রহমান অন্তুুর নিকট দরপত্রের মাধ্যমে কোটি টাকার উর্ধে বিক্রয় করা হয়।
যার ইজারা মেয়াদ অনেক দিন পুর্বেই শেষ এবং সমুদয় বালি অপসারন করা হয়েছে।
কিন্তু কতিপয় নামধারী ব্যক্তি দলীয় প্রভাব বিস্তার করে অবৈধ বালু উত্তোলন দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে চালিয়ে আসছে।
ইজারা মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ইজারাদার এমএ খালেক সরকারসহ অন্যান্যদের কাউকে বালু উত্তোলন করতে দেখা যায় না।
অথচ দলবাজ কয়েক জন সরকার দলের নাম ভাঙ্গিয়ে চুটিয়ে বীরদর্পে অপকর্ম চালাচ্ছে।
প্রশাসনের নাকের ডগায় দিনের পর দিন মাসের পর মাস এতবড় প্রকাশ্য সরকারী রাজস্ব চুরির ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে সুধি মহল। কেউ প্রতিবাদ করাও সাহস পাচ্ছে না।
এ ব্যপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েক জন বিএনপি’র এবং খোদ আওয়ামী লীগের নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জনগন জানতে চায়! দূর্নীতির মাত্রা কি কমেছে না বেড়েছে ?
তারা বলেন, ইতিপূর্বে জনগন এ ধরনের প্রকাশ্য অপরাধের প্রতিবাদ করত, এখন প্রতিবাদ করারও সাহস পায় না।
তারা আরও জানান, প্রশাসনকে বারংবার জানানোর পরেও কোন প্রতিকার তো হচ্ছেই না বরং অবৈধ তৎপরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রশাসনের সাথে সখ্যতার কারনে প্রভাবশালী দলবাজ ব্যবসায়ীরা আইনের প্রতি কোন তোয়াক্কাই করে না তাঁরা। অপর দিকে একই সময় পাল্টাপুর ইউনিয়নের কুড়িটাকিয়া হাটে ভাতগাঁও ব্রিজ থেকে বীরগঞ্জ শালবাগান পর্যন্ত ৫ কিঃমিঃ নদী খননের বালি ৪৩ লাখ টাকায় ইজারা নেন জনৈক তোফাজ্জল হোসেন রাজা।
কিন্তু তিনি নামমাত্র টাকা পরিশোধ করেন এবং ইজারা মুল্যের বেশির ভাগ টাকা বাকী রেখেই সিংহ ভাগ বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে প্রতারণার করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সার্বিক বিবেচনায় আত্রাই নদীতে বালি আত্মসাতের মহোৎসব চললেও প্রশাসন নিরব দর্শক হয়ে রয়েছে।
এসব দুর্নীতির প্রতিকারে এলাকাবাসী স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ জাকারিয়া জাকা এমপি’র দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
এব্যাপারে, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন,উপজেলার আত্রাই নদীতে কাশিপুর মৌজায় কোনো বালু মহল নেই, কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
