কাহারোল (দিনাজপুর) প্রতিনিধি ঃ দিনাজপুরের কাহারোলে উপজেলা প্রশাসনের প্রচেষ্টায় অবৈধ দখলকৃত সরকারি খাস জমি থেকে বোরো ধান কর্তন করে জন সম্মুখে নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে সরকারি কোষাগারে অর্থ জমা করা হয়েছে। কাহারোল উপজেলা প্রশাসন প্রায় আড়াই একর জমির ১০৫ মণ ধান ৫৫ হাজার ৯শ টাকা বিক্রি করে সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছেন। জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সরকারি খাস জমি নিজের দাবী করে অবৈধ দখলদারীরা। অবৈধ দখলদারী চক্রটি খাস খতিয়ানের সম্পত্তি নিজস্ব বলে দাবী করে এই বিষয়টি ভিন্ন ভিন্ন খাতে রূপ দিতে কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ভুল তথ্য সম্বলিত সংবাদ প্রকাশ করে উপজেলা প্রশাসনের ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করেছে ও চক্রটি ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায় বলে কাহারোল ইউ,এন,ও মোঃ আমিনুল ইসলাম স্থানীয় সাংবাদ কর্মীদের জানায়। দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের নিকট ধান কাটার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইউ,এন,ও মোঃ আমিনুল ইসলাম তার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলাধীন মুকুন্দপুর ইউনিয়নের চক বাজিতপুর মৌজার ১নং খাস খতিয়ান ভুক্ত মোট ২ দাগে প্রায় আড়াই একর জমি পুকুর শ্রেণী হিসেবে পাকিস্তান প্রদেশ পক্ষে দিনাজপুর ডেপুটি কমিশনার নামে রেকর্ডভুক্ত হয়ে থাকে। এদিকে ১০ জুন’২৪ দিনাজপুর জেলা সাব-রেজিস্টার কার্যালয়ের প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক অবৈধ দখলদার আব্দুর রাজ্জাক যে দলিল প্রশাসনের কাছে দাখিল করেছেন তা একটি ভুয়া দলিল বলে প্রশাসন দাবী করেছেন। কেন না ১৯৬৪ সালে বীরগঞ্জ উপজেলার সাব-রেজিস্টার অফিসে সর্বশেষ দলিল নম্বর ছিল ৫২৫৪ অথচ ভুমি দাবীকারী মোঃ আব্দুর রাজ্জাক যে, প্রশাসনের কাছে দলিল দাখিল করেছেন তার নং রয়েছে ১৩১২১ মোতাবেক বন্দোবস্ত কেস নং ১২/৫১১/৬৩-৬৪ এ বাদী কর্তৃক আনীত কাহারোলে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি, উল্লেখিত বন্দোবস্ত কেস নম্বরে বজলার মিয়ার পরিবর্তে দিনাজপুর সদর উপজেলার কালিতলা মোঃ ইউসুফ খানের নামে বন্দোবস্ত রয়েছে। ১৪২৮ বঙ্গাব্দে উপজেলা ভূমি অফিসের সায়রাত রেজিস্টার পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পুকুরটি সর্বশেষ ১৪২৬-১৪২৭ বঙ্গাব্দে ইজারা দেওয়া হয়। পুকুরটি ইজারা না হওয়ায় সর্বশেষ ১৪২৮ বঙ্গাব্দে ্ওই জমিতে ধান রোপন করা হয় এবং সৃজিত আমন ধানের ফসল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর মাধ্যমে বিক্রয়লব্ধ ২৭ হাজার ৪শ ৪০ টাকা সরকারিভাবে জমা করা হয়েছে এবং বর্ণিত তফসিল সম্পত্তি সি, এস খতিয়ান থেকে চলমান জরিপে বর্তমান ডিপি খতিয়ান পর্যন্ত মালিকানা বাংলাদেশ সরকার। ওই অবৈধ দখলদারীরা পুকুরটি মাটি দিয়ে ভরাট করে ফেলেছেন। অবৈধ দখলদারীদের মধ্যে উপজেলার মহদীপুর গ্রামের বজলুর মিয়ার উত্তরাধিকারী মোঃ আব্দুর রাজ্জাক আনিত ১৩১২১/৬৩-৬৪ নং বন্দোবস্ত দলিল মূলে জমি পত্তনকৃত/ইজারাকৃত হিসেবে এবং বন্দোবস্ত কেস মূলে জমি দাবী করে এক পর্যায়ে নি¤œ আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত তা না মঞ্জুর করে দেন। পুনরায় আপিল করলে দ্বিতীয় আদালতেও একই রায় বহাল তা রাখেন। পরবর্তীতে আব্দুর রাজ্জাক গং এই বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে ৭৭৭/২০২২নম্বর সিভিল রিভিশন অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ চেয়ে মোকদ্দমা দায়ের করলে গত ১৪ মার্চ ’২৩ বিজ্ঞ আদালত নিষেধাক্ষার পরিবর্তে উভয় পক্ষকে স্থিরবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন। কিন্তু বিজ্ঞ আদালতের আদেশকে উপেক্ষা করে অবৈধ দখলদার আব্দুর রাজ্জাক গং ওই জমিতে চলতি বোরো মৌসুমে ধান রোপন করেন। বোরো ধান কাটার সময় হলে উপজেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা সাপেক্ষে ধান কাটার ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভ‚মি) কে আহŸায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। গঠনকৃত কমিটি গত ৩ জুন’২৪ থানা পুলিশ বাহিনীকে সাথে করে নিয়ে জমির পাকা ধান হারভেস্টার মেশিন দিয়ে কর্তন-পূর্বক ১০৫ মণ ধান জনসম্মুখে প্রকাশ্যে নিলামের মাধ্যমে বিক্রয় করা হয়েছে। পুকুরটি ভরাট হওয়ায় কারণে মাছ চাষের অনুপযোগী হওয়ায় উপজেলা রাজস্ব সভায় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ সনের জন্য প্রকাশ্য নিলামে খাস আদায় কার্যক্রম গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।