মনোজ রায় হিরু, আটোয়ারী (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি ঃ
চলমান বর্ষা মৌসুমে রোপিত আমন ধানের চারা বর্ষার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা জমির পানি নিষ্কাশনের পথ খুলে দেয়ার দাবীতে মানববন্ধন করেছেন এবং আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৪ আগষ্ট) সকালে আটোয়ারী-রুহিয়া সড়কে উপজেলা পরিষদের সামনের পাঁকা রাস্তায় প্রায় দুই শতাধিক ভুক্তভোগী কৃষক আয়োজিত এই মানববন্ধনে অংশগ্রহন করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, তোড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি মোঃ আতাউর রহমান, যুগ্ন সম্পাদক মোঃ দলিল উদ্দীন, ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচীব মোঃ চয়েন উদ্দীন, ক্ষতিগ্রস্থ ওয়ার্ড কৃষক দলের সভাপতি মোঃ কফিল উদ্দীন, কৃষক সুশান্ত দাস আপন, মোঃ কাবুল আলম ও মোঃ আলম সহ একাধিক কৃষক।
মানববন্ধনে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা তাদের বক্তব্যে বলেন, উপজেলার ফকিরগঞ্চ বাজারের কাছে একটি প্রাচীন খাল তুর্কা মণি ব্রীজ রয়েছে। উক্ত ব্রীজের মাধ্যমে কিসামত দাপ ও সুখ্যাতী মৌজার শত শত একর আবাদি জমির পানি সহজেই ইতিপূর্বে নিষ্কাশিত হতো। সম্প্রতি উক্ত মণিতে অবস্থিত ব্রীজটির উভয় পাশের্^ কতিপয় প্রভাবশালী উপজেলার সর্দারপাড়া নিবাসী মোঃ নজরুল ইসলাম, নব-নির্মিত আদর্শ কলোনির প্রধান মোঃ জয়নুল ইসলাম (কোহিনুর মেম্বার) ও ছোটদাপ এলাকার মোঃ কামরুজ্জামান গোলাপ অবৈধ স্থাপনা নির্মান করে পানি নিষ্কাশনের পথে বাধা সৃষ্টি করেন। ফলে চলমান বর্ষা মৌসুমে কৃষকদের রোপীত ধানের চারা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গিয়ে ভুক্তভোগীরা আমন ধান চাষে ব্যাপক লোকশানের মূখে পড়েছেন।
এপ্রসঙ্গে অভিযুক্ত নজরুল ইসলামকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে কোহিনুর মেম্বারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, স্বাভাবিক ¯্রােতে পানি নিষ্কাশনের জন্য নিজস্ব অর্থায়নে তার স্থাপনার নীচে প্রায় ত্রিশ লক্ষ টাকা ব্যয় করে তিনি পাঁকা ড্রেন নির্মান করে পানি যাতায়াতের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। এদিকে অপর অভিযুক্ত কামরুজ্জামান গোলাপ বলেন, বড় পাঁকা ড্রেন নির্মানের পর তিনি তার স্থাপনার কাজ শুরু করেন। কিন্তু উক্ত ড্রেনের পানি কোহিনুর মেম্বারের স্থাপনাগুলো থাকার কারনে পানি নিষ্কাশনের পথ বাধাগ্রস্থ হওয়ায় এলাকার ফসলী জমি প্রতিবছর প্লাবিত হয়।
এ বিষয়ে আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফুজ্জামান বলেন, আমি ভুক্তভোগী কৃষকদের কাছ থেকে স্মারকলিপি পেয়েছি এবং তোড়িয়া এবং রাধানগর ইউনিয়ন তহশিলদার ও সার্ভেয়ার এর সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। আশা করছি তদন্ত রিপোর্ট পেলে সমস্যাটির দ্রæত সমাধান করা সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা অনতিবিলম্বে তুর্কা মণি ব্রীজ দিয়ে বর্ষার পানি যেন অবাধে নিষ্কাশিত হয়, সে ব্যাপারে স্থানীয় ও জেলা প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করে ভুক্তভোগী কৃষকদের আমন ধান চাষে লোকশানের হাত থেকে রক্ষা করতে আকুল আবেদন জানিয়েছেন। #