বিকাশ ঘোষ,বীরগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার নিজপাড়া, ভোগনগর সাতোর ও মরিচা ইউনিয়নের উপর দিয়ে বহমান সারিসুয়া নদীতে পুনঃখনন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। আর খনন করা মাটি ফেলা হয়েছে কৃষকের আবাদি জমিতে। এতে শত শত একর জমির ফসল মাটিচাপা পড়ে নষ্ট হচ্ছে। ফসল রক্ষা করতে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছে কৃষক।
অভিযোগ সৃত্রে জানা যায়, উপজেলার ভোগনগর, সাতোর ও মরিচা ইউনিয়নের উপর দিয়ে বহমান সারিসুয়া ছোট খাল খননের মাটি ও বালি খালের দুই পাশে কৃষকের ব্যক্তিগত জমিতে পাহাড়ের ন্যায় স্তূপ করে ফেলে রাখার কারণে শত শত একর জমিসহ কৃষকের ব্যপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
৬ বছর ধরে কৃষকেরা পায়নি কোন ক্ষতিপুরণ কিংবা অপসারণ করা হয়নি স্তূপকৃত মাটি ও বালি। ফলে মাটির নিচে চাপা পড়ে আছে কৃষকদের আবাদি বেশ কয়েক শত একর উর্বর ৩ ফসলি জমি।
যে সময়টিতে খালের দুই পাড়ের বেশির ভাগ জমির ধানে শিষ বের হওয়া শুরু হয়। ধান নষ্ট হওয়ায় জমিতে মাটি ফেলতে নিষেধ করেন কৃষকেরা। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন প্রভাব খাঁটিয়ে খাল খননের মাটি জোর করে ধানগাছের ওপর ফেলছেন। বিলের এক ফসলি বোরো ধানের এ জমিই কৃষকদের একমাত্র অবলম্বন। এ ঘটনার ফলে এখানকার কৃষকদের জমির আবাদে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান,খাল খননের সময় কৃষকেরা তাদের জমিতে মাটি ও বালি স্তূপ করতে নিষেধ করলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ স্বল্প সময়ের প্রতিশ্রুতিতে স্তূপ করে, ফসল উৎপাদনে খাল খনন লাভজনক ভেবে সবাই নিরবতা পালন করে।
বিগত ২০১৯ ইং বর্ষ হতে আজোবধি কৃষকদের শত শত একর জমি পাহাড়ের টিলার মত ১০/১৫ ফিট কোন কোন স্থানে তার চেয়ে উচুঁ পরিত্যাক্ত অবস্থায় থাকলেও কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
বছরের পর বছর হয়রানির শিকার কৃষকেরা এ ঘটনায় পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন নিবেদন করেও কোন সুরাহা পাননি বলে জানান, কৃষক ও ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মোজাম্মেল হক, কৃষক মলয় কুমার রায়, দর্পনারায়ণ রায়, দিলিপ কুমার রায়, সাইদুল ইসলাম, চিত্রকুমার, মোতালেব সহ দেড় শতাধিক কৃষক।
দীর্ঘদিন হয়রানির পরেও কর্তৃপক্ষ অপসারণ না করায় কৃষক নিজেরা মাটি ও বালি সুন্দরী হাটগাছ এলাকায় ট্রাক্টর দ্বারা অপসারণ শুরু করে, জানতে পেরে এসিল্যান্ড পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কৃষক যুবলীগ নেতা মোজাম্মেল হক কে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ৫ দিন সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠান।
মাটি ও বালি অপসারন বন্ধ হয়ে যায় এবং এখন পর্যন্ত শত শত একর জমি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের উদাসিনতা, দায়িত্বহীনতা, অবহেলার কারনে পরিত্যক্ত রয়েছে।
কৃষকদের শত শত একর জমি পুনরুদ্ধারে কার্যকরি পদক্ষেপ নেয়া জরুরি মর্মে সত্যতা স্বীকার করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আনিসুর রহমান আনিস, মোঃ রাজিউর রহমান রাজু, মোঃ জাকির হোসেন রাজা ও মোঃ আতাহারুল ইসলাম চৌধুরী হেলাল।
মাটি ও বালি অপসারনের জন্য মাননীয় সংসদ সদস্য দিনাজপুর-১ আসন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র দৃষ্টি আকর্ষণ করে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।