বিকাশ ঘোষ,বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুরের বীরগঞ্জ ও উপজেলায় বসন্তের শুরু থেকেই রক্তিম রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে শিমুল গাছের ফুল। শুধু ফুল আর ফুল -পাতা নেই, ফুটন্ত এ ফুল যেন সকলের দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে। আর এই রক্ত লাল থেকে সাদা ধূসর হয়ে তৈরি হয় তুলা। কিন্তু এখন বিভিন্ন প্রযুক্তিতে তুলা তৈরি ও ফোম ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় শিমূল তুলা ব্যবহার অনেকটাই কমে গেছে। আজ থেকে প্রায় দুই দশক আগে গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় গাছে গাছে শোভা বর্ধন করতো এই শিমুল ফুল। তবে কালের বিবর্তনে ঋতুরাজ বসন্তে এখন আর যেখানে সেখানে চোখে পড়ে না রক্তলাল শিমূল গাছ। মূল্যবান শিমুল গাছ এখন প্রায় বিলুপ্তর পথে। বীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় দেখা মিলল ফুটন্ত ফুলের রক্ত লাল শিমূল গাছ। শিমূল গাছের ফুটন্ত রক্ত লাল শিমূল যেন চারদিকে ছড়িয়ে দিচ্ছে রঙ। বীরগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বনমালী রায় বলেন, বলাকার মোড়ের কালী মন্দিরের পিছনে একটি ঐতিহাসিক শিমূল গাছ ছিল, সেটি অযতেœ নষ্ট হয়ে মরে গিয়েছে। এবং বীরগঞ্জ থানার চত্বরের পাশে, বিজয় চত্বরের আশেপাশে বেশ কিছু শিমূল গাছ ছিল তা এখন আর নেই। তবে বলাকা মোড় বিষ্ণু মন্দির একটি পলশা ফুলের গাছটি ফুলে ফুলে ভরে গিয়ে বেশ শোভা পাচ্ছে। শিমূল গাছ ঔষধি গাছ হিসেবে পরিচিত। গ্রামের মানুষ এক সময় আখের গুড় তৈরিতে শিমূলের রস ও কোষ্ঠ কাঠন্য নিরাময়ে শিমূল গাছের মূলকে ব্যবহার করতো। গোলাপগঞ্জ হাট এলাকার কবিরাজ দরপো চন্দ্র রায়সহ অনেকে জানান, গ্রাম বাংলার মানুষদের এই শিমূল গাছ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এনে দিত। মানুষরা এই শিমূলের তুলা কুড়িয়ে বিক্রি করতো। অনেকে নিজের গাছের তুলা দিয়ে বানাতো লেপ,তোষক,বালিশ। কিন্ত আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন আর তেমন চোখে পড়ে না শিমূল গাছ। বীরগঞ্জ সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও উপজেলা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি প্রশান্ত সেন বলেন, বিভিন্ন প্রযুক্তিতে তুলা তৈরি ও ফোম ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় শিমূল তুলা অনেকে ব্যবহার ছেড়ে দিয়েছে। বাংলার চিরন্তন রুপ শিমূল পলাশের লাল সুন্দর্য থেকে আজ আমরা সরে আসছি। ফলে শিমূল গাছ বিলুপ্তর পথে।