বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বীরগঞ্জে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজ, আদাসহ নিত্যপণ্য, কাঁচাবাজার, মাছ-মাংস, এমনকি মসলাজাত পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী।
সপ্তাহের ব্যবধানেই বেড়ে যাচ্ছে সবজিসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের বিভিন্ন দাম। বিশেষ করে অস্থির হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে বেশ কিছু পণ্যের দাম।
শুক্রবার (১২ জুলাই) উপজেলা সদর পৌরশহরের দৈনিক বাজারসহ বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের মতোই উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে শাক-সবজি, চিনি, চাল, আটা, ডাল ও মাছ। তবে মুরগীর দাম কিছুটা থম ধরে আছে।
ঈদের আগে থেকেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এইসব পণ্যের দাম।
বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা বিক্রি হয়েছিল ৮০ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে ৫০ টাকারও বেশি।
এছাড়া ঈদের আগে পাইকারি ৭০-৭৫ টাকা কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। কিন্তু আজ পাইকারিতে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা। এছাড়া খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৪০-৫০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যেখানে গত সপ্তাহেও ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে পেঁয়াজ। বিভিন্ন জাতের এবং আমদানি করা রসুন ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০থেকে ৪২০ টাকায়।
এদিকে, আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, যা গত এক-দুই সপ্তাহে অনেক জায়গায় ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। স্থানভেদে বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৬০-৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০-৫০ টাকা, বরবটি ৭০-৮০ টাকা ও পটল ৪০-৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, পাঙ্গাস বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৩০ টাকা কেজি। আকার ও মানভেদে অনেকটা একই দামে বিক্রি হচ্ছে তেলাপিয়া। আকার ও মানভেদে রুই-কাতলার দাম হাঁকানো হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। ইলিশ মাছ ১৪০০ থেকে ১২০০ ও প্রতি জাপানি মাছ কেজি প্রকারভেদে ২৪০-২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাংসের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, গরুর মাংসের কেজি ৭০০-৭৫০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজি স্থানভেদে ২৪০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সোনালি ও লেয়ার জাতের মুরগির কেজি স্থানভেদে ৩২০ থেকে ৩৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস আগের মতোই ১০০ থেকে ১০৫০টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষগুলো। ভোক্তা সাধারণরা দাবি করছেন প্রশাসনের উদাসীনতা এবং দায়িত্ব অবহেলার করণে উপজেলায় বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই।
পৌরশহরের বলাকা মোড় এলাকার সবজি বিক্রেতা সবুজ কর জানান, পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ কি তা বলতে পারছেন না। তবে আড়ৎদারা দাম বাড়িয়ে দিলে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে পেঁয়াজ।
বিজয় চত্বরে রিকশা চালক আব্দুর রহিম জানান,ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে জিনিসপত্রের দাম বাড়াচ্ছেন। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে রিকশা বাড়িতে বের হয়ে তেমন যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। সারাদিন যে টাকা ইনকাম হচ্ছে তা দিয়ে বর্তমান বাজারে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গতকাল সারাদিন গাড়ী বের করে মাত্র ৩ থেকে ৩৫০ টাকা ইনকাম হয়েছে। আজ সকাল থেকে থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি চলছে। বাজার নিয়ন্ত্রণ না হলে খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষগুলোর কষ্ট নিবারণ সম্ভব না। বাজার মনিটরিং এর দায়িত্ব থাকা বীরগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাফিজারের সাথে মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে এলাহী জানান, বাজার মনিটরিং এর দায়িত্বে নিয়োজিতদের সাথে কথা বলে জুরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।