এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় সবাই অটোপাস। এখন জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে তাদের গ্রেড পয়েন্ট নির্ধারণ করা হবে। টেকনিক্যাল কমিটির পরামর্শ নিয়ে আগামী ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে শিক্ষা বোর্ডগুলো থেকে এ ফলাফল প্রকাশের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক রোববার জাগো নিউজকে বলেন, জেএসসি-জেডিসি ও এসএসসি-সমমান পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসি-সমমানের ফলাফল প্রকাশ করা হবে। আগের দুই পরীক্ষার ফলের ওপর শিক্ষার্থীর গ্রেড পয়েন্ট নির্ধারণ করা হবে। এ বিষয়ে টেকনিক্যাল কমিটির পরামর্শ অনুসরণ করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এ কমিটি নভেম্বরের শুরুতে একটি গাইডলাইন তৈরি করবে তার ভিত্তিতে ডিসেম্বরের শেষ দিকে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, আগামী ২০ থেকে ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এইচএসসি-সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে। সেই লক্ষ্যমাত্রা সামনে নিয়ে ফলাফল তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা মূল্যায়নে কমিটি গঠন করার কথা থাকলেও এখনো হয়নি। এ সংক্রান্ত ফাইল তোলা হলেও মন্ত্রীর দফতরে তা আটকে রয়েছে বলে জানা গেছে। এ কমিটি গঠন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে শিক্ষামন্ত্রীর দফতর থেকে জানা গেছে।
জানা গেছে, চলতি সপ্তাহে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা মূল্যায়নে কমিটি গঠন করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের সমন্বয়ে আট সদস্যের এ কমিটির সদস্যরা অটোপাস শিক্ষার্থীদের গ্রেডিং পদ্ধতি নির্ধারণ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করবেন।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে আট সদস্যের এ কমিটিতে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদফতরের প্রতিনিধি এবং কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান সদস্য হিসেবে থাকবেন।
তাদের পরামর্শে বিভাগ পরিবর্তনকারীদের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বিভাগ পরিবর্তনজনিত (যারা বিজ্ঞান থেকে মানবিক বা অন্য বিভাগ পরিবর্তন করেছেন) কারণে যে সমস্যাটি হতে পারে তা ঠিক করতেও বিশেষজ্ঞ কমিটি কাজ করবে।
করোনা মহামারির কারণে সম্প্রতি বাতিল করা হয় এ বছরের এইচএসসি পরীক্ষা। জেএসসি ও এসএসসির ফলাফলের গড়ের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে এবারের এইচএসসির ফল। গত ৭ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেছেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ধরনের আর্থিক অনিয়ম সহ্য করা হবে না। আর্থিক বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইউজিসি অডিটোরিয়ামে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের বাজেট-সংক্রান্ত দুদিন ব্যাপী সভার উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে রোববার (১৮ অক্টোবর) প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ইউজিসি চেয়ারম্যান। কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহেরের সভাপতিত্বে বাজেট সভায় ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর ও প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কমিশনের সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামান।
মাধ্যমে দেয়া বক্তব্যে ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ধরনের আর্থিক অনিয়ম সহ্য করা হবে না। আর্থিক বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং বিদ্যমান আর্থিক নিয়মাবলী শতভাগ অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ইচ্ছেমতো আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে সুযোগ-সুবিধা নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে উপাচার্য যদি আর্থিক বিষয়ে আউট অব লাইন করেন, আপনাদের (কোষাধ্যক্ষ এবং অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক) দায়িত্ব প্রথমে বিষয়টি তাকে অবহিত করা। এরপরও উপাচার্য যদি কোনো অনিয়ম করেন, তাহলে এর দায়ভার তাকেই (উপাচার্য) নিতে হবে। যদি বিশেষ প্রয়োজন হয় কিংবা কাজটি করার ক্ষেত্রে আপনাদের (কোষাধ্যক্ষ এবং অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক) ওপর চাপ থাকে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইনে বিষয়টি নিষ্পত্তি না হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে ইউজিসির পরামর্শ ও অনুমোদন নিয়ে কাজটি সম্পাদন করতে পারেন।
এবং আর্থিক বিষয় যেকোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রফেসর ড. শহীদুল্লাহ বলেন, ‘শুধু বাজেট তৈরি করলেই হবে না, বাজেটের যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। বাজেট বাস্তবায়নে এক খাতের বরাদ্দকৃত অর্থ আরেক খাতে ব্যয় অগ্রহণযোগ্য। আর্থিক বিষয়ে পূর্ণ নিয়মের মধ্যে চলতে হবে। এ খাতে ঊনিশ-বিশ হওয়া যাবে না। প্রতিটি খাতের ব্যয় সুনির্দিষ্টভাবে তুলে ধরতে হবে।’
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ইউজিসির প্রত্যাশা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা চাই, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আরও স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা ও সম্পদের যথাযথ ব্যবহার সুনিশ্চিত করবে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক স্বাধীনতা বিষয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক স্বাধীনতা আর আর্থিক স্বাধীনতা এক নয়। প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব আইন, নীতিমালা ও বিধিবিধান রয়েছে। এগুলো পূর্ণমাত্রায় মেনে চলতে হবে।’
তিনি বলেন, অর্থ হচ্ছে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রাণ। এখাতে শৃঙ্খলা না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় সুন্দরভাবে পরিচালনা করা যাবে না।
সভাপতির ভাষণে প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের করোনা সংকটে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অপ্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয় না করার আহ্বান জানান। এছাড়া নির্দিষ্ট খাতে ও কোডে ব্যয়ে নিয়ম, বিধিবিধান যথাযথভাবে প্রতিপালন করার পরামর্শ দেন।
তিনি পেনশন সংবিধি তৈরি, মাস্টাররোল, চুক্তিভিত্তিক, দৈনিকভিত্তিক, সিকিউরিটি গার্ড ও আনসার পদে নিয়োগ বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান। প্রয়োজনে ৪র্থ শ্রেণির পদের বিপরীতে কমিশনের অনুমোদন নিয়ে নিয়োগ প্রদানের পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে ২৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক এবং বাজেট কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। সভায় ২০২০-২০২১ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট এবং ২০২১-২০২২ অর্থবছরের মূল বাজেট নিয়ে আলোচনা হয়।