এবার কোরবানির বাজারে সবার দৃস্টি কেড়েছে ৩০মন ওজনের ‘প্রিন্স’। কালো-সাদা রঙের এই প্রিন্স নামের বিশালদেহের হলিস্ট্রিয়ান ফ্রিজিয়ান গরুটি সবার দৃস্টি কেড়েছে। এরই মধ্যে সবাই দেখে যাচ্ছে। ফ্রিজিয়ান জাতের এই গরুটি হাটে নিয়ে যাওয়া কঠিন। কারণ গত তিন বছর বাইরে বের করা হয়নি। তাই তাকে হাটে নিয়ে গেলে সামলানো কঠিন হয়ে পড়বে। এজন্য খামার থেকেই বিক্রি করা হবে। দাম রাখা হয়েছে ১০ লাখ টাকা।
প্রিন্স নামের গরুটি বড় হয়েছে দিনাজপুর সদরের শেখপুরা ইউপির মাতাসাগর নিশ্চিন্তপুর বড়দীঘি এলাকার মোছাঃ খুশি রহমানের খামারে।
২০২০ সালে একটি গরু দিয়ে শুরু করেন খামার।তাকে বিক্রি করে লাভ হওয়ায় তিনমাস আগে থেকে ছোট গরু কিনে বড় করে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করে এবং বিক্রি করেন। গতবছরে ২২টি গরু বিক্রি করা হয়েছে। এখন তার খামারে ছোট বড় মিলে ৩২টি গরু রয়েছে। প্রিন্স ছাড়া ৬টি দেশি গরু বিক্রির জন্য দৈরী করা হয়েছে। দেশি গরুগুলোর দাম ৬০ থেকে ৭০হাজার টাকা। এছাড়াও এই খামারে প্রতিদিন ১২০ থেকে ১৫০লিটার দুধ উৎপাদন হয় এবং শহরের বড় বড় দোকানে সরবরাহ করেন।
এই খামারেই প্রিন্স এর জন্ম। কালো-সাদা রঙের প্রিন্স নামের হলিস্ট্রিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি বয়স প্রায় ৩বছর। জমিদারী স্টাইলে বড় হওয়া প্রিন্সের উচ্চতা প্রায় সাড়ে নয় ফুট ও দৈর্ঘ্য আট ফুট এবং ওজন ১২০কেজী। খাবারের তালিকায় রয়েছে, সবুজ ঘাস, ভেজানো ছোলা, খড়, গমের ভুসি, খৈল, মিষ্টি কুমড়া, লাউসহ নানা ধরনের পুষ্টিকর খাদ্য। প্রতিদিন ২-৩বার গোসল করানো হয়। ব্যবহার করা হয় সাবান ও শ্যাম্পু। মশা যাতে কামড় না দেয় সেজন্য স্প্রে করা হয় মশানাশক ওষুধ। প্রায় তিন বছর ধরে সন্তানতুল্য এই গরুটিকে আদর আর মায়ায় বড় করেছেন সফল খামারী উদ্যোক্তা খুশি রহমান। খামারের নাম রেখেছেন কে এস এগ্রো এন্ড ডেইরী ফার্ম।
খামারী খুশি রহমানের স্বামী মোঃ সুমন ঢাকায় একটি এনজিও তে কাজ করেন। খুশি রহমান ইতিপূর্বে ঢাকায় স্বাস্থ্য বিভাগে সার্ভেক্যাল ক্যান্সার এর ফিল্ড সুপারভাইজার ছিলেন। তিনি বাড়ীর কাজের জন্য চাকুরি ছেড়ে আসেন এবং বাড়ীর পাশে খামারটি গড়ে তুলেন। এখন সংসার দেখাশুনার পাশাপাশি এই খামারে সার্বক্ষনিক দেখাশোনা করেন। এখানে ৫জন মানুষের কর্মসংস্থানও হয়েছে।
এ ব্যাপারে খুশি রহমান জানান, ঘাস,খড় ও উন্নত খাবার খাইয়ে সন্তানতুল্য প্রিন্সকে যতœসহকারে লালন পালন করেছি। নিয়মিত পরিচর্যা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিশেষ নজর রাখি। তার প্রতি এতো মায়া হয়েছে যে তাকে বিক্রি করতে ইচ্ছা হয় না। কিন্তু রাখাসহ প্রয়োজনে তাকে বিক্রি করবো।
তিনি বলেন, প্রতিদিন তার একাই ৪০০ থেকে ৫০০টাকার খাবার খরচ লাগে। গরুটিকে শুধু ব্যবসার জন্য বড় করিনি, ভালোবেসে পালন করেছি। আশা করছি ভালো দাম পাব এবং একজন ভালো ক্রেতার কাছে প্রিন্স যাবে। দাম রাখা হয়েছে ১০লাখ টাকা। কমবেশী একটা হবে বলে জানান তিনি।