বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজে’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহিন বলেছেন, আগামীতে ক্ষমতায় যেয়ে যারাই ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচারি আচরন করবে তাদের পরিনতিও শেখ হাসিনার মতই হবে।
শনিবার প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের অবসানে ‘জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও দিনাজপুরের শহীদ পরিবারের সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ফাঁসির কাষ্টে ঝুলেছে। সাড়ে ১৫ বছর সাংবাদিকরা আন্দোলনের বাইরে থাকতে পারেনি। ১৫বছর বিএনপি সমর্থক কোন পত্রিকা কোন ক্রোড়পত্র পায়নি। কিন্তু এবারে সব পত্রিকা ক্রোড়পত্র পেয়েছে। তিনি সাংবাদিক সংগঠনের পাশাপাশি রাজনৈতি দলগুলোকে সাংবাদিকদের সুরক্ষায় এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহকারি মহাসচিব ড.সাদেকুল ইসলাম স্বপন, দপ্তর সম্পাদক আবু বকর, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম।
এসময় খুরশিদ আলম বলেন, গত ১৬ বছরে ৬৬ জন সাংবাদিক জীবন দিয়েছে। সর্বশেষ গাজীপুরে আসাদুজ্জামান শাহিন জীবন দিয়েছে। তিনি বলেন, সাংবাদিকরা যতক্ষন পর্যন্ত রাজনৈতিক দলের নেতাদের পক্ষে থাকেন ততক্ষন ভাল। কিন্তু যখন তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার করেন তখন শত্রæ হয়ে যান। সাংবাদিকরা কারো বন্ধু না।
জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. মোফাজ্জল হোসেন দুলাল বলেন, জুলাই বিপ্লব চূড়ান্ত বিপ্লব নয়। আরো বিপ্লব হবে।সাংবাদিদের ইসপাত দৃঢ় ঐক্য ধরে রাখতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে ভারতী আধিপত্যবাদি শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। আমরা যদি দিনাজপুরে দৃশ্যমান উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারি তাহলে দিনাজপুর অনেক দুর এগিয়ে যাবে।আমরা একটা স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, গত ১৬বছরের ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দুর্নীতির কথা আমরা ভুলে গেছি। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে সাধারণ মানুষের সাথে মিশতে হবে। আপনারা বিভাজন সৃস্টিকারিদের কোন অবস্থায় আশ্রয় দিবেন না। জুলাই বিপ্লবের মুল চেতনা ধরে রাখতে হবে। সাংবাদিকসহ সকলের মধ্যে বিভাজন মিটিয়ে ফেলতে হবে। পৃথিবীতে যে পেশাজীবীদের অবদান অনস্বীকার্য সে পেশাটি হচ্ছে সাংবাদিক। নিরস্ত্র মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশী জীবন দিয়েছে সাংবাদিকরা। ঘাতকদের বিচার না হওয়ায় সাংবাদিকরা জীবন দিয়ে যাচ্ছে। যতদিন স্বৈরাচার থাকবে ততদিন সাংবাদিকদের তৎপরতা থাকবে। সাহর-রুনির মামলা সারা পৃথিবীতে রেকর্ড হয়েছে কতবার পিছিয়েছে।
তারা আরো বলেন, অন্যায়ভাবে বেগম জিয়াকে জেলে রেখে মানসিক নির্যাতন করেছে। এ ভাবে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার সরকার তাদের পতনের প্রেক্ষাপট তৈরী করেছিল। সাংবাদিকদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহবান জানান।
যে সন্তানরা যে ছাত্ররা মোবাইলে আসক্তন ছিল সেই সন্তানরাই সেই ছাত্রসমাজই আমাদের মুক্ত করেছে। আজকে আমাদের স্বাধীনভাবে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছে। সকল শ্রেনি পেশার মানুষ অংশগ্রহন করে জুলাই বিপ্লবকে সফল করেছে। তারেক রহমান বলেছেছেন, সংসার চলার মত সম্মানি সাংবাদিকদের দিতে হবে।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন দুলাল, সিনিয়র সহসভাপতি মোঃ মোকাররম হোসেন, সহ-সভাপতি মোজাহারুল ইসলাম, দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সহ-সভাপতি শামিম কবির, শহর জামায়াতের আমির সিরাজুস সালেহীন, ইসলামী ছাত্রশিবির দিনাজপুর শহর শাখার সভাপতি মোশফিকুর রহমান, এনসিপি শ্রমিক উইং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রেজাউল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক একরামুল হক আবির ও শহীদ রবিউল ইসলাম রাহুলের পিতা মুসলেম উদ্দিন।
আলোচনা শেষে দিনাজপুরে শহীদ রবিউল ইসলাম রাহুলের পিতা মুসলেম উদ্দিননের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানে আগত অতিথিবৃন্দ সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।