ঠাকুরগাঁও : মারপিট ও হুমকি দেয়ার ঘটনায় থানায় জিডি করায় ঠাকুরগাঁও শহরে বাড়িতে ঢুকে দুইমাসের এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধুকে মারপিট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার রাত ৮টার দিকে শহরের পুলিশ ফাঁড়ির সামনে হাজীপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত শাহরিয়া সম্পা (২৯) শহরের হাজীপাড়া এলাকার জুলফিজুর রহমানের স্ত্রী। বর্তমানে ওই অন্তঃসত্ত্বা নারী রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ী বাজার এলাকার প্রয়াত আব্দুল আজিজ শাহর ছেলে ও তার চাচা আব্দুল কুদ্দুস শাহ একই গ্রামের প্রয়াত হাচিম উদ্দীন শাহর ছেলে। আব্দুল কুদ্দুস শাহ বর্তমানে ঠাকুরগাঁও শহরের গোয়ালপাড়া এলাকায় বসবাস করছেন।
অন্তঃসত্তা গৃহবধুর স্বামী জুলফিজুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বড় ভাই মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে গত ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর মুঠোফোনের মাধ্যমে আমার স্ত্রী শাহরিয়া সম্পাকে বাড়ি থেকে ডেকে ঠাকুরগাঁও শহরের বড়মাঠে নিয়ে যায় বড়ভাই মোস্তাফিজুর রহমান।
এরপর বড়ভাইসহ তার লোকজন আমার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমার স্ত্রীকে তারা মারপিট করে। সেই সাথে তারা আমার স্ত্রীকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে।
এ ঘটনায় ২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর আমার স্ত্রী শাহরিয়া সম্পা বাদী হয়ে বড়ভাই মোস্তাফিজুর রহমানসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। সাধারণ ডায়েরি তদন্ত করে পুলিশ আদালতে রিপোর্ট দাখিল করে। আগামী ২৯ এপ্রিল অভিযুক্ত আসামীদের আদালতে হাজির থাকার জন্য আদালত থেকে তাদের কাছে নোটিশ দেয়া হয়েছে।
জুলফিজুর রহমান বলেন, আমার স্ত্রী দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা সাধারণ ডায়েরিকে কেন্দ্র করে শনিবার রাত ৮টার দিকে বড়ভাই মোস্তাফিজুর রহমান ও চাচা আব্দুল কুদ্দুস শাহ আমার বাড়িতে আসে। এরপর তারা বাড়িতে আমার স্ত্রী শাহরিয়া সম্পাকে একা পেয়ে মারপিট করে এবং আমার স্ত্রীর পেটে লাথি মারে। এসময় স্ত্রী চিৎকার শুরু করলে বড়ভাই মোস্তাফিজুর রহমান ও চাচা আব্দুল কুদ্দাস শাহ পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমি মসজিদে নামাজ পরছিলাম। নামাজ শেষে মুঠোফোনে ঘটনার খবর জানবে পারি। এরপর আমার স্ত্রীকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। এ ঘটনার তিনি বিচার দাবি করেছেন।
ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক আফরিনা মল্লিক বলেন, শনিবার রাতে দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা শাহরিয়া সম্পাকে হাসপাতালে আনা হয়। তার অবস্থা ও বাচ্চার অবস্থা ভাল ছিল না। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধুকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি তানভিরুর ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি, তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।