হরিপুর প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা হরিপুর-ধীরগ›জ সড়কের পূর্ব ধারে৷ ধীরগঞ্জ ব্রিজের দক্ষিণ পাশে৷ হটাৎ করে প্রায় ১ মাস ধরে দেখা যায় মাঝ বয়সী এক মানসিক প্রতিবন্ধী মহিলা পাগলীকে। সকলের নিকট তার পরিচয় পাগলী হিসেবে। বয়স ৩০ থেকে ৩৫ বছর। গায়ের রং কালো। পরনে জাকেট । মাথার চুলগুলো এলোমেলো বেশীর ভাগই সাদা। তিনি সড়কের একা একা বসে থাকে সব সময়। এখানেই তার জীবন যাপন। রোধ- বৃষ্টি প্রতিদিনই তার সঙ্গি। প্রায় ১ মাস আগে থেকেই সড়কে পাশে, হঠাৎ করে দেখা যায় মানসিক প্রতিবন্ধী মহিলা পাগলীকে। স্থানীয়রা তার নাম পরিচয় জানতে চাইলে তিনি কিছুই বলতে পারছেনা। এবং কাউরো সাথে কোন কথা বলছেনা না। এবং কি স্থানও পরিবর্তন করতে দেখা যায় না পাগলীকে।
এলাকার স্থানীয় এক বাসিন্দা জানায়, বেশ কিছু দিন ধরে রোধ-বৃষ্টির মধ্যে তাকে দেখা যায়। রমজান মাস প্রায় সময়ই বৃষ্টি পরে । আর এই বৃষ্টিতে ভিজে কাপতে দেখে স্থানীয়রা।এক মহিলা সকাল সন্ধ্যায় নিজে বসে থেকে খাবার খাওয়ায়৷ দুপুরে অন্য জন খাবার দেয় তাকে৷ মাঝে মধ্যেই পরনের ময়লা কাপড় গুলো বদলে দেয়,স্থানীয়া মহিলারা৷
পরের দিন সকালে অবার ঐরাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় পাগলীর শরীরের ছেড়া ভিজা কাপড়, অন্য দিকে কাপছে,তার পরে তিনি জিজ্ঞেস করেন বাড়ী কোথায় পাগলী কিছুই বলতে পারেনা। পরে সাথে থাকা তার দুপুরের খাবার তাকে দিয়ে যায়। স্বপন আরো বলেন,প্রতিদিন আমি বাড়ি থেকে তার জন্য কিছু ভাত এনে দেই। এবং কি সকাল হলেই পাগলী রাস্তার দিকে খাবারের জন্য তাকিয়ে থাকে কখন আমি রাস্তা থেকে যাবো। এক পথচারী সাইফুল বলেন প্রায় ২ মাস আগে পাগলীকে রাস্তায় দেখছেন। কোথা হতে, কখন তার আগমন জানা নেই কারো । গন্তব্য কোথায় এটাও জানেনা কেউ! আরেক ব্যবসায়ী আবুল বলেন এই না জানার কারণ তিনি পাগলী! তার বাড়ি-ঘর নেই! তার কাপড়-চোপড় আর আট দশটা সাধারণ মানুষের মতো নয়। পাগলীর খবর রাখার কেউ নেই, কারণ তিনি বাংলাদেশ সংবিধান অনুযায়ী তিনি রাষ্ট্রের নিকট মৌলিক অধিকার দাবী করেন না, করতে জানেন না। সাফিয়া নামে এক মহিলা বলেন,এই পাগলী কাউকে কোন ধরনের বিরক্তি করছেনা। কারো কাছে কোন খাবার এবং কি টাকা চাইতেও দেখা যায়নি তাকে।
হরিপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন পাগল লোকজনের জন্য রাষ্ট্রের করণীয় থাকা উচিত। এসব মানুষগুলোকে রাষ্ট্র সরকারী খরচে তাদের দেখা শুনা করা উচিৎত ও মারা গেলে দাফন দেওয়া দরকার। কিন্তু তারা বেঁচে থাকা কালীন তাদের চাওয়া ও পাওয়া কখনো মানুষের নিকট হতে, সমাজের নিকট হতে, রাষ্ট্রের নিকট হতে পূরণ হয়না। পাগলীর জন্য সমাজের বিবেকবানদের কেউ ভাবেনা। রাষ্ট্রতো অবহেলিত এসব নাগরিক নিয়ে ভাবার সময়ই পাননা।
কেউ কখনো কি ভেবে দেখেছে পাগলরি পরিবার নেই, কিন্তু তার ক্ষুধা আছে? তার বস্ত্র নেই, কিন্তু লজ্জা ঢাকার ছেঁড়া কাপড় আছে! তার শোবার জন্য আরামদায়ক খাট নেই, কিন্তু ঘুম আছে। তার নিজের ঘর নেই, কিন্তু আকাশের নিচের জমিন আছে।
এব্যাপারে হরিপুর উপজেলা সমাজসেবা কমকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, নিরাশ্রয় ও ভবেঘুরে আইন ২০১১ অনুযায়ী নিদির্ষ্ট ফরম পূরণ করে নির্বাহী অফিসারের নিকট জমা দিলে তিনি তার ব্যবস্থা করবেন।