বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের বীরগঞ্জে কৃষকের অতি প্রয়োজনীয় ইউরিয়া সার দীর্ঘদিন পড়ে থাকার কারণে বস্তার ভিতরে জমে বেঁধে গেছে । জমাটবদ্ধ সার কৃষক ক্রয় না করার কারণে বরাদ্দৃত সার উত্তোলন এবং বিক্রয় নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছে ডিলার ও খুচরা সার ব্যবসায়ীরা। সরজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জমাট বাঁধার কারণ সারের গুনগত মান নিয়ে কৃষকরা দ্বিধায় পড়লেও সারের গুনগত মান সঠিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিস।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে ২৯ হাজার ৬ শত হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর বিপরীতে উপজেলায় মোট ইউরিয়া সারের চাহিদা রয়েছে ৫ হাজার ৮শত ২২মেট্রিক টন। এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ২২মেট্রিক টন ইউরিয়ার সার উত্তোলন করা হয়েছে। উত্তোলনের অপেক্ষায় রয়েছে বরাদ্ধের ৩৬ হাজার বস্তা সার। বীরগঞ্জ উপজেলার ৫নং সুজালপুর ইউনিয়নের বর্ষা গোপালপুর গ্রামের কৃষক মোঃ আব্দুর রহিম আমাদের প্রতিনিধিকে জানান,জমাট বাঁধা সারের কার্যক্ষমতা কম হওয়ায় জমিতে বেশী পরিমাণে দিতে হচ্ছে। দোকান থেকে ৮শত টাকা বস্তা দরে ২ বস্তা ১ হাজার ৬শত টাকায় কিনে সার বাড়ীতে নিয়ে এসে বস্তা খুলে দেখা যায় সার জমাট বাঁধা। পরে বাড়ীতে জমাট সার ভেঙ্গে জমিতে ছিটানো হচ্ছে । এতে খরচ বেশি পড়ে যায় এবং সময় বেশি লেগেছে যাচ্ছে । নিজপাড়া ইউনিয়নের সম্ভুগাও গ্রামের কৃষক মোঃ জব্বার জানান, উপজেলার কয়েকটি সারের দোকান ঘুরেও কোথাও স্বাভাবিক সার পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে জমাট বাঁধা সার কিনেছি। সারের বস্তা জমাট হয়ে এতটা শক্ত হয়েছে যে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জমাট ভাঙ্গতে হয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ স্বীকার করে সার ব্যবসায়ী বাবুল ট্রেডাসের সার ডিলার ইয়াকুব আলী বলেন, সারের বস্তা জমাট হয়ে যাওয়ার কারণে কৃষকেরা সার না কিনে জমাট ছাড়া সারের সন্ধানে ছুঁটছে। এতে বাহ্যিক ভাবে সারের সংকট মনে হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। ববং বরাদ্দের বেশির ভাগ সার পড়ে আছে। জমাট বাঁধার কারণে কেউ নিতে চাচ্ছে না। তাই এই সার নিয়ে বিপাকে পড়েছি। সরকারী বিক্রয় মূল্য বস্তা প্রতি ৮ শত টাকা হলেও শুধুমাত্র ক্রেতার অভাবে প্রতিবস্তা সার ৭৬০টাকা দরে বিক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছি। এ মাসে বরাদ্দ পেয়েছি ১৩৬ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার। উত্তোলন করেছি ১৭মেট্রিক টন। জমাট বাঁধা সারের কারণে ক্রেতা না থাকায় বরাদ্দকৃত বাকি সার উত্তোলন করতে পারছিন না। আগামী মাসের বরাদ্দ নিয়ে এখন মহা বিপদে আছি।মুঠোফনে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আবু রেজা মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, জমাট বাঁধা সার ক্রয়ের ব্যাপারে কৃষকদের অনীহার বিষয়টি আমরা জেনেছি। সারের গুণগত মান নিয়ে কোন সমস্যা নেই। এ ব্যাপারে জেলা কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। জেলা এ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করি এই সমস্যা বেশি দিন থাকবে না।