ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদটি শূন্য দীর্ঘ ১১ বছর ধরে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শূন্য এ পদটি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। শুধু তাই নয় উপজেলার সমবায় অধিদপ্তর, মৎস অধিদপ্তর, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরসহ ৯টি গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয় পরিচালনা হচ্ছে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিয়ে।
দপ্তরগুলোতে নিয়মিত কর্মকর্তা না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে দপ্তরগুলোতে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষের। খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে সরকারি কার্যক্রম। স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে গুরুত্বপূর্ণ এসব পদ শূণ্য থাকায় সরকারি উন্নয়ন কর্মকান্ডে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে। দ্রæত শূন্য পদের বিপরীতে নিয়মিত কর্মকর্তা পদায়নের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১০ সালে উপজেলায় সর্বশেষ সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে দায়িত্ব পালন করেছেন হেমন্ত হেনরী কৃবি। এরপরে আর ওই পদটিতে নিয়মিত কর্মকর্তা পদায়ন করেনি জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়। দাপ্তরিক ও অন্যান্য কাজের পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ অতিরিক্ত এ দায়িত্ব পালন করে আসছে দীর্ঘ ১১ বছরের বেশি সময় ধরে।
এদিকে ৪ বছর ধরে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার পদটি ফাঁকা রয়েছে। রাণীশংকৈল উপজেলায় কর্মরত যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা কামরুজ্জামান এ পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন ২০১৮ সাল থেকে।
এমন ভাবে দীর্ঘ সময় ধরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা, উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা এবং উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ২ জনের পদ ফাঁকা রয়েছে। কয়েকদিন আগে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা করোনায় মারা যাওয়ার পর সেই পদটিও ফাঁকা রয়েছে। এসব পদে পার্শ্ববতী উপজেলায় দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট অফিসে কর্মরত সহকারীদের অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ভিক্ষুকমুক্ত এক কর্মসূচিতে যোগ দিতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় আসেন রংপুর বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানা। তাঁকে উপজেলা চেয়ারম্যান ফাঁকা পদগুলোতে নিয়মিত কর্মকর্তা পদায়নের বিষয়টি জানিয়ে লিখিত আবেদন করেন। কর্মসূচি শেষে ফেরার সময় তিনি শ্রীঘ্রই সহকারী কমিশনার (ভূমি) সহ অন্য পদগুলোতে কর্মকর্তা পদায়নের আশ্বাস প্রদান করেন। তবে দু বছরের বেশি সময় পার হলেও এখন পর্যন্ত কোন অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়নি।
ফাঁকা দপ্তরগুলোতে দ্রæত কর্মকর্তা পদায়নের দাবি জানিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আসলাম জুয়েল। তিনি জানান, পদগুলো শুন্য থাকার কারণে নিয়মিত কাজকর্ম ব্যহত হচ্ছে। সেবা বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার মানুষ। উচ্চ মহলে কয়েকবার যোগাযোগ করেও পদগুলোতে নিয়মিত কর্মকর্তা পদায়ন করেনি কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি আমলে নিতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যোবায়ের হোসেন জানান, দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতি সামলাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। আবার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে সহকারী ভূমি কর্মকর্তার।