বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ(দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ দিনাজপুর বীরগঞ্জে কলা চাষী পৌর শহরের মাকড়াই গ্রামের মোঃ আঃ করিমের ছেলে হযরত আলী(৪৫) জানান, তিনি মৃত চন্দ্রাই হেমরমের ছেলে সুলতান হেমরমের নিকট হতে জগদল মৌজার ৩১১০ দাঁগের ৮০ শতক দাঙ্গা বন্ধকি জমি প্রাপ্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে চাষাবাদ করে আসছিলো। বর্তমানে বর্নিত সম্পত্তিতে কলা চাষ করাকালীন ২০ আগষ্ট শুক্রবার ভোর আনুমানিক সাড়ে ৬ টায় কাশিপুর গ্রামের মৃত মঙ্গল বেশরার ছেলে বাজুন বেশরা(৪৫), রামপুর গ্রামের মৃত সোম মুরমূর ছেলে মঙ্গুলু মুর্মু(৫৯), যদুর মোড় চাকাই গ্রামের মৃত নয়নের ছেলে অমল ওরফে মঙ্গল (২৫)সহ একদল সন্ত্রাসী কলা বাগানে অনধিকার প্রবেশ করে ১১৬ টি কলাসহ গাছ যার মূল্য প্রায় ৮০ হাজার টাকা কর্তন পূর্বক ক্ষতিসাধন করে। এসময় বাঁধা দিতে গেলে সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীরা তাঁকে মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছেলাফুলা জখম করে। প্রাণ রক্ষার্থে চিৎকার করলে সুলতান হেমরম, মিনতী হাসদা,সুবল হেমরম সহ অনেকেই এগিয়ে আসলে প্রকাশ্যে প্রাণনাশের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে পালিয়ে যাওয়ার সময় তীর ধনুক,হাসুয়া ও কর্তনকৃত ২ টি কলার পীর সহ মঙ্গুলু মুর্মূ, অমল হেমরম কে হাতেনাতে আটক করে স্থানীয়রা। সংবাদ পেয়ে বীরগঞ্জ থানার পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থল থেকে আটককৃতদের থানায় নিয়ে আসে এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেয়। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষী হযরত আলী বীরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে হযরত আলী বাদী হয়ে দিনাজপুর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলি আদালত – ২ (বীর) ২২ আগষ্ট ২০২১ ইং ১৬৫ সি/২১ নং মামলা দায়ের করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ আগষ্ট বীরগঞ্জ থানার তদন্ত ( ওসি) মোঃ সোহেল রানার নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স অভিযান চালিয়ে থানা মার্কেট এলাকা হতে বাজুনকে গ্রেফতার করে দিনাজপুর আদালতে সোপর্দ করেছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আসামীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর হওয়ায় আদালতের নির্দেশে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয় বলে জানা যায়। উল্লেখ্য যে বাজুন বেশরা আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি পদে থাকাকালীন ১ হাজার ৫০০ জন সদস্যের জমানো প্রায় ৭৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অপরাধে সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুলতান হেমরম বাদী হয়ে ১০ ডিসেম্বর ২০১৭ ইং দিনাজপুর আদালতে একটি মামলা দায়ের করে যা এখনো চলমান রয়েছে এবং দৈনিক প্রথম আলো সহ দেশের বেশকয়েকটি প্রথম সারির পত্রিকায় বাজুন বেশরার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। এছাড়া নানান অপকৌশলে এলাকার নিরীহ আদিবাসীদের জমিজমা লুন্ঠন করা সহ ব্যাপক অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় বিভিন্ন দপ্তরে বহু অভিযোগ রয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বেশকয়েকজন আদিবাসী জানান, বাজুন বেশরা একজন সেচ্ছাচার, পরধনলোভী, চতুর ও আত্মসাৎকারী ব্যক্তি এবং তার এহেন কার্য্যকলাপে স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।